ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কেন মেলায় আসা!

জান্নাতুল ফেরদৌসী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৫
কেন মেলায় আসা! ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: নাগরদোলায় চড়া কিংবা পুতুল কেনার জন্য এখন কেউ মেলায় আসেন না। নতুন প্রযুক্তি, হরেক রকম অফার ও ছাড়ে পণ্য ক্রয় অথবা ব্যস্ততার বাইরে একটু বিনোদনের জন্য মেলায় আসেন বেশিরভাগ মানুষ।

তবে ঐতিহ্যকে লালন করেও মেলায় আসেন অনেকে।

ঐতিহ্য, প্রয়োজন অথবা বিনোদন সব কিছুর স্বাদ দিতেই প্রতি বছর বসে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এবারও মেলা শুরু হয়ে প্রায় শেষের পথে। শেষ পর্যায়ে তাই মেলা প্রাঙ্গণে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়ছেই।

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে মেলার দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, কেন মেলায় আসেন তারা। রুপনগর থেকে মায়ের সঙ্গে এসেছে ছোট্ট মেয়ে জেলী। মেলা থেকে নতুন পোশাক কিনতে এসেছে বলে জানায় সে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃদুল এসেছেন ট্যাব কিনতে। বললেন, বন্ধুরা বললো মাত্র সাড়ে ৫ হাজার টাকায় ট্যাব পাওয়া যাচ্ছে। এমন ছাড় তো বাজারে পাওয়া যায় না। তাই মেলায় এলাম। ঘুরে-ফিরে এখন ট্যাব কিনতে যাচ্ছি।     

বিদেশ থেকে ছুটি পেয়ে বাংলাদেশে এসেছেন এয়ারলাইন্সের চাকরিজীবী অর্নব। তিনি জানান, ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে মেলায় যেতাম। বিদেশে তো মেলা হয় না। এটা শুধু আমাদের দেশের ঐতিহ্য। তাই  অনেকদিন পর দেশে এসে মেলার মজা পেলাম। খুব ভালো লাগছে এত লোক একসঙ্গে দেখে।

অতীশ দিপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কে এম মিরাজুল ইসলাম বলেন, অনেক জিনিসপত্র একই জায়গায় পাওয়া যায়। অনেক মানুষ একসঙ্গে মেলায় আসেন। দেখতেও ভালো লাগে। তাছাড়া বিদেশি অনেক পণ্য পাওয়া যায়। যা মেলার বাইরে আমরা পাই না।

সরকারি চাকরিজীবী সোমা মজুমদার বলেন, সাধারণত মার্কেট করতে গেলে এক একটা জিনিসের জন্য এক এক জায়গায় যেতে হয়। কিন্তু মেলায় একসঙ্গে অনেকগুলো দোকান থাকে। তাই কম সময়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র একই জায়গায় পাওয়া যায়।

দুই বান্ধবী সুরাইয়া জেমি ও আনিতা মেহজাবিন মেলায় এসেছেন ঘুরতে। আনিতা জানান, বাইরের দেশের বিভিন্ন পণ্যের ডিজাইনের সঙ্গে  আমাদের দেশের পণ্য যাচাই করতেই মেলায় আসা। তাছাড়া  দেশীয় পণ্যের ভিন্নতা আনতে মেলায় আসা দরকার। কারণ, ভবিষ্যতে নিজেস্ব  উদ্যোগে একটি ফ্যাশন হাউজ দেওয়ার ইচ্ছে আমার।

জেমি বলেন, পাকিস্তানি ও ভারতীয় স্টলগুলোতে অনেক সময় সুন্দর সুন্দর পোশাক, স্টোনের নোজ পিনসহ বিভিন্ন জুয়েলারি পাওয়া যায়। কয়েকটি স্টল ঘুরে এগুলো কিনতেই মেলায় এসেছি।

পরিবারসহ ঘুরতে এসেছেন মো. জসিম। তিনি বলেন, পরিবারের সঙ্গে এভাবে বের হওয়ার সময় হয় না। মেলা উপলক্ষে সময় করে বের হতে পেরেছি। তাছাড়া মেলায় আকর্ষণীয় অনেক কিছুই রয়েছে। যা ঘুরে ঘুরে দেখা যায়।

বাঙালির ঐতিহ্য মেলা। ছোট বেলায় বাবার সঙ্গে মেলায় যাওয়ার জন্য নানা প্রস্তুতি থাকতো ছোট সোনামনিদের। যুগের পরিবর্তনে ঐতিহ্যে যেমন পরিবর্তন হয়েছে, তেমনি পরিবর্তন হয়েছে মেলায় আসার উপলক্ষ।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতি বছর ফিরে আসুক বাঙালির এ ঐতিহ্য- এটাই কাম্য সাধারণ মানুষের।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৫

** বাণিজ্যমেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী ছিল কম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।