ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড়-প্রতিশ্রুতি দুই-ই বেড়েছে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫
উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড়-প্রতিশ্রুতি দুই-ই বেড়েছে

ঢাকা: দেশে চলমান সহিংসতার মধ্যেও উন্নয়ন সহযোগীরা (স্টেক হোল্ডার) অর্থ দিচ্ছেন এবং আরো অর্থ দেওয়ার  প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) বৈদেশিক অর্থছাড় বেড়েছে প্রায় ২৮ কোটি মার্কিন ডলার।

অপরদিকে, একই সময়ে প্রতিশ্রুতি বেড়েছে, প্রায় ৫২ কোটি মার্কিন ডলার।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের সাতমাসে উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থছাড় করেছে, মোট ১৭৪ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১৪০ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার এবং অনুদান ৩৪ কোটি ১৩ লাখ মার্কিন ডলার।

২০১৩-১৪ অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড় হয়েছিল ১৪৬ কোটি ৮৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১২৫ কোটি ৯২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার এবং অনুদান ৩০ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। এতে করে সাতমাসে এক বছরের ব্যবধানে উন্নয়ন সহযোগীরা প্রায় ২৭ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার বেশি অর্থছাড় করেছে।

২০১৪-১৫ অর্থবছরের সাতমাসে উন্নয়ন সহযোগীরা  প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ২০৬ কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের। এর মধ্যে ঋণ হচ্ছে, ১৭৬ কোটি ২৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার এবং অনুদান ৩০ কোটি ৩০ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।

২০১৩-১৪ অর্থবছরের একই সময়ে অর্থাৎ সাতমাসে দাতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ১৫৪ কোটি ৯৪ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১২৬ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার এবং অনুদান ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার।

এতে করে বছর ব্যবধানে উন্নয়ন সহযোগীরা প্রায় ৫১ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সহিংসতার মধ্যেও এটাকে ইতিবাচক দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।

এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ  হাসান বাংলানিউজকে বলেন, বড় বড় কিছু কারিগরি প্রকল্পের কাজে কোনো বিঘ্ন না ঘটার কারণে অর্থছাড় বেড়েছে। যেমন, তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি) প্রকল্পটির কাজ তো আর থেমে নেই। এতে করে অর্থছাড়ের পরিমাণ বেড়েছে। তবে হরতাল-অবরোধে সড়ক ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কাজে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
 
তিনি বলেন, প্রকল্প তৈরির কাজ যদি থেমে না থাকে, তবে প্রতিশ্রুতি থেমে থাকবে না। কারণ, প্রকল্প তৈরির কাজ শুধুমাত্র ঢাকায় হয়ে থাকে। হরতাল-অবরোধে দুই/একটা পটকা ফুটলেও মানুষ তো আর ঢাকাতে বসে নেই। ঢাকায় তো চলাচল করা যায়। এতে করে প্রকল্প তৈরির কাজ থেমে নেই। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতিও ভালো আসছে।

অন্যদিকে, সাতমাসে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধের দিক থেকেও পিছিয়ে নেই। জুলাই-জানুয়ারি মাসে মোট ৭১ কোটি ৮৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে মূলধন ছিল ৬০ কোটি ৪৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার এবং সুদ ছিল ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।

২০১৩-১৪ অর্থবছরের সাতমাসে ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল  ৭১ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে মূলধন ছিল ৫৯ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার এবং সুদ ছিল ১২ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার।

পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বেশি ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে।

তবে চলতি অর্থবছরের ছয়মাসে মাসে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) অধিক পরিমাণে অর্থছাড় করলেও আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে বিশ্বব্যাংক। চলতি অর্থবছরের সাতমাসে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংক অর্থ ছাড় করে ৫৪ কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে  ঋণ ছিল ৪৩ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার এবং অনুদান ছিল ১০ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

এর পরের স্থানে রয়েছে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটি অর্থছাড় করেছে  ৫০ কোটি ১২ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। অপরদিকে,  ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড় করেছে, ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ছাড় করেছে, ১৪ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং ৩ লাখ ৯১ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান।

এছাড়া চীন ১০ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার ছাড় করেছে। পিছিয়ে নেই ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকও (আইডিবি)। সংস্থাটি ৯ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার ছাড় করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।