ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘হার্ট অ্যাটাক’ হওয়ার মতো অবস্থা

সাব্বির আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫
‘হার্ট অ্যাটাক’ হওয়ার মতো অবস্থা গ্রিন লাইন পরিবহনের মালিক মো. আলাউদ্দিন/ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘ভালো নেই। একেবারে মন্দা যাচ্ছে দিন।

শুধু মন্দা নয়, ক্ষতির পর ক্ষতি গুণতে গুণতে আমাদের ‘হার্ট অ্যাটাক’ হওয়ার মতো অবস্থা। ’

অবরোধ-হরতালে নিজের পরিবহন ব্যবসার চিত্র তুলে ধরে এসব কথা বলছিলেন গ্রিন লাইন পরিবহনের মালিক মো. আলাউদ্দিন।

ঢাকার রাজারবাগ গ্রিনলাইন বাস কাউন্টারের দোতলায় আলাউদ্দিনের সঙ্গে আলাপকালে এ আক্ষেপ করেন তিনি।

তিনি জানান, সারা দেশে গ্রিন লাইন পরিবহনের বিলাসবহুল ১০৫টি বাস যাত্রীসেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু চলমান হরতাল-অবরোধের কারণে বিলাসবহুল দূরপাল্লার এসব বাসের অধিকাংশই এখন বন্ধ আছে। ওয়ার্কশপ ও দেশের বিভিন্ন টার্মিনাল এলাকায় এ পরিবহনের অর্ধশত গাড়ি আটকে আছে।

তিনি জানান, হরতাল-অবরোধ ছাড়া স্বাভাবিক দিনগুলোতে দিনে গ্রিন লাইনের ৭০ থেকে ৮০টি বাস চলাচলের মধ্যে থাকতো। এখন ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-বেনাপোল সড়কে মাঝে মধ্যে দু’একটি বাস চলতে পারছে।

অবরোধ-হরতালে মধ্যে গাড়ি চালাতে গিয়ে এ পরিবহনের একজন হেলপার নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০টিরও বেশি বাস।
অবরোধ-হরতাল শুরুর পর থেকে প্রতিদিন ক্ষতি গুণতে হচ্ছে আড়াই লাখ টাকা।

বেকার হয়ে পড়ে আছেন তার পরিবহনের প্রায় ১২শ’ শ্রমিক।

আলাউদ্দিন বলেন, সরকার নিরাপত্তা দেওয়ার কথা জানালেও যাত্রীরা বের হতে সাহস পাচ্ছেন না। এ কারণে দিনে বাসের যাত্রী মিলছে না। আর সরকারের নিদের্শনা অনুয়াযী রাতে বাস চালানো বন্ধ আছে।

এ অবস্থায় ক্ষতি গুণতে গুণতে প্রতিদিন ব্যাংকে ঋণ বাড়ছে দেড় লাখ টাকা করে বলেও তিনি জানান।

আরও ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে শ্রমিকদের প্রতিদিনের খরচ বাবদ। তাই দিন শেষ হওয়া মাত্রই নগদ দুই থেকে সোয়া দুই লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বিলাসবহুল পরিবহন সেবাদানকারী এই মালিক।

মো. আলাউদ্দিন জানান, হরতাল অবরোধের মধ্যে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্রগ্রাম ও ঢাকা-কক্সবাজার সড়কে এ পর্যন্ত তার ২০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসার পথে ইটের আঘাতে প্রাণ গেছে তার এক বাস হেলপারের।  

এরপর থেকে দূরপাল্লার রুটগুলোতে বাস চলাচল হুমকির মুখে পড়ে।

আর দামি গাড়ি বেশি টার্গেটে থাকে বলে মনে করেন এই পরিবহন ব্যবসায়ী।

গ্রিন লাইনের স্বত্বাধিকারী আলাউদ্দিন বংলানিউজকে আরও জানান, ২০১৩ সালের হরতালে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতেই আবারও সংকটের মধ্যে পড়েছেন।

তিনি জানান, নতুন করে কক্সবাজার থেকে সেন্টমাটিনে ১২ থেকে ১৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে একটি জাহাজ নামিয়েছিলেন। বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছিলেন। হরতাল-অবরোধের কারণে সেটিও এখন বন্ধ আছে।

মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় ঢাকা-বরিশালের জন্য একটি দ্রুতগতির লঞ্চ নিয়ে আসার সব প্রস্তুতি শেষ করেও হরতাল-অবরোধের কারণে সেটার কাজ থেমে গেছে বলেও জানান আলাউদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।