ঢাকা: নামসর্বস্ব পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকার টায়ার, টিউব ও ব্যাটারি কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের ঢাকা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রণ বিভাগ।
গত বছরের ডিসেম্বরে এ সংক্রান্ত দরপত্র আহবান করা হয়।
সোমবার (০৯ মার্চ) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির কাছে এই অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) পক্ষ থেকে সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. একাব্বর হোসেনের দফতরে এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে সংসদীয় কমিটির সভাপতির একান্ত সচিব (পিএস) ইকবাল বিন মতিন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, অভিযোগটি নিয়ে কমিটির আগামী বৈঠকে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। আগামী ২৯ মার্চ এই কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, টায়ার টিউব কেনার দরপত্র বিজ্ঞপ্তিতে এ কাজ প্রাপ্তির অন্যতম শর্ত হচ্ছে-যত টাকার কাজ তার ৮০ শতাংশ টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকে থাকতে হবে। যার প্রমাণ হিসেবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দরপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। একই সঙ্গে লোয়েস্টের সিএস বা তুলনামুলক বিবরণী পাস হওয়ার আগ পর্যন্ত এই টাকা ব্যাংকে থাকতে হবে। কিন্তু এই ৮০ শতাংশ টাকা ব্যাংকে জমা থাকার স্টেটমেন্ট না দিয়েই সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগসাজসে জাফর-রহমান সিন্ডিকেটকে কাজ দেওয়ার জন্য দ্রুত ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, নামসর্বস্ব পত্রিকায় গোপনে বিজ্ঞাপন দিয়ে মৌলভীবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, পটুয়াখালী, নড়াইল, বরিশাল ও ফেনী জেলার প্রায় ২ কোটি টাকার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিলাম দেওয়ার প্রক্রিয়াটি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এই বিজ্ঞপ্তি ছাপানো বাংলা দৈনিকগুলোর মধ্যে রয়েছে- খবরপত্র, আলোর বার্তা, সোনালী বার্তা, নওরোজ ও মুক্ত খবর এবং ইংরেজী দৈনিকগুলোর মধ্যে রয়েছে- দি ডেইলি নিউজ লাইন, ডেইলি পিপল, ডেইলি মর্ণিং গ্লোরি, ডেইলি গুড মর্ণিং ও ডেইলি ইকোনোমিক পোষ্ট।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কোনো স্টলে না থাকায় পরিকল্পিত ভাবে এই পত্রিকাগুলোতেই ওই বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়। এই দরপত্র প্রক্রিয়া বন্ধ করে ও বহুল প্রচারিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে পুনঃদরপত্র আহবান করলে প্রচুর আর্থিক সাশ্রয় হবে বলে ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ফাইরেনটিনি অ্যাস্কেভেটর নামে একটি যন্ত্র গোপন যোগসাজসে অকেজো ও ভেঙ্গে যাওয়া, পার্ট খোলা দেখিয়ে স্ক্র্যাপ হিসেবে সার্ভে অনুমোদন করিয়ে তা নিলামের ব্যবস্থা করেছে। বর্তমানে যন্ত্রটির মূল্য কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা হলেও ওজন হিসেবে এটি মাত্র এক লাখ ৩৬ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রি করা হচ্ছে।
এনসিপিএসআরআর’র পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৫