ঢাকা: বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড ক্যাশ ডিপার্টমেন্টের এক হাজার কর্মীকে বেআইনিভাবে পদাবনতি করা হয়েছে। একই সঙ্গে কমানো হয়েছে মূল বেতন ও ইনক্রিমেন্ট।
অবৈধভাবে এসব কর্মীদের পদাবনতি ও সুযোগ-সুবিধা কমানোর ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ-মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি অফিস আদেশে (নম্বর ২৬, ২০১৫) পদমর্যাদা কেড়ে নিয়ে নিচের পদে পদায়ন করা হয়েছে এসব কর্মীদের। ক্যাশ ডিপার্টমেন্টের উচ্চপদস্থ অফিসার-এক্সিকিউটিভদের ক্যাশ অফিসার গ্রেড ১ এর সমতুল্য চিফ ক্যাশ অফিসার করা হয়েছে।
এছাড়াও রয়েছেন ক্যাশ অফিসার গ্রেড-২ ও ৩ এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ অফিসার, জুনিয়র ক্যাশ অফিসার ও ট্রেইনি ক্যাশ অফিসার। একইভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে চিফ ক্যাশ অফিসারের বেতনও।
আগে একজন অফিসার বা এক্সিকিউটিভ ৬৪ হাজার ২শ টাকা বেতন পেলেও এখন ক্যাশ অফিসার গ্রেড ১ এ তার বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৫০টাকা।
একইভাবে ক্যাশ অফিসার গ্রেড ২ ও ৩ এর বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে, ৩০ হাজার ২শ ও ২৬ হাজার ২শ ৫০ টাকা। অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ অফিসার ২২ হাজার ৩শ, জুনিয়র ক্যাশ অফিসার ১৯ হাজার ৮শ ২৫ ও ট্রেইনি ক্যাশ অফিসারের বেতন ১৭ হাজার ৪শ ৫০ টাকা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএস তাবরেজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
উল্লিখিত কর্মীদের নিম্ন পদে পদায়ন করা ও বেতন অর্ধেক কমানো পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সুষ্ঠভাবে জীবনধারণ করা নিয়ে অনেকের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্যাশ অফিসার জানান, একটি মহল ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবসা বাড়াতে ক্যাশ অফিসারদের কোনো ভূমিকা না থাকার যুক্তি তুলে ধরে কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ দিয়েছে।
ব্যাংকের প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে সব ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে ক্যাশ ডিপার্টমেন্টের সব অফিসার-এক্সিকিউটিভদের সর্বোচ্চ পদ পর্যন্ত পদোন্নতি পাওয়ার বিধান থাকলেও এই আদেশের মাধ্যমে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের দেশব্যাপী বর্তমানে ২ হাজার ৭শ ৩০টি এটিএম বুথ রয়েছে। নতুন করে স্থাপন করা হবে আরও ২ হাজারটি। এসব বুথে গ্রাহক টাকা তোলার পাশাপাশি জমাও দিতে পারবেন।
টাকা তোলা ও জমা দেওয়ার সুযোগ-সুবিধা এটিএম বুথে থাকলে ক্যাশ অফিসার বা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের চাহিদা অনেক কমে যাবে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে। চাকরিরত এসব কর্মীদের সরাসরি ছাটাই না করে বেতন কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এতে অনেক কর্মীই সুযোগ-সুবিধা অর্ধেক হওয়ায় জীবন ধারণের প্রয়োজনে ইচ্ছে করেই চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও সহকারী মুখপাত্র এএফএম আসাদুজ্জামান বলেন, কর্মীদের বেতন কমানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিধান লঙ্ঘন হলে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৫
** ডাচ-বাংলা ব্যাংকে ২০০০ জন চাকরিচ্যুত!