ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অবরোধ-হরতালের প্রভাব

বেচাকেনায় মন্থর গতি চেইন সুপার স্টোরে

জান্নাতুল ফেরদৌসী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৫
বেচাকেনায় মন্থর গতি চেইন সুপার স্টোরে

ঢাকা: টানা অবরোধ ও হরতালে রাজধানীর সুপার স্টোরগুলোর ব্যয় বেড়েছে। সরবরাহ চেইন ভেঙ্গে পড়ায় পণ্য আনা নেয়ায় অধিক ভাড়া গুনতে হচ্ছে উদ্যোক্তাদের।

আবার সুপার স্টোরগুলোতে ক্রেতা কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। কয়েকটি সুপার চেইন স্টোরের মালিক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

হরতাল-অবরোধ অব্যাহত থাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে পণ্য আনা নেওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে পণ্যবাহী পরিবহনে পেট্রল বোমা নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগ করছে দুর্বৃত্তরা।

ইতিমধ্যে অনেক পণ্যবাহী ট্রাক এ ধরনের হামলার শিকার হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাই হাইওয়েতে পণ্যবাহী যান চালাতে আগ্রহ হারাচ্ছেন চালকরা। যে কারণে নির্ধারিত পরিবহন ভাড়া বেড়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুন।

এ ছাড়া সহিংসতার আতঙ্কে বেশির ভাগ সুপার স্টোরের প্রধান ফটক অর্ধেক বন্ধ রাখা হচ্ছে। এতে প্রায় ২০শতাংশ ক্রেতার আগমন কমেছে তাদের। এভাবে হরতাল অবরোধ চলতে থাকলে আরো বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।  

গত আড়াই মাস টানা হরতাল অবরোধে প্রায় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা কাঙ্ক্ষিত আয় হ্রাস পেয়েছে বলে দাবি করেন মিনাবাজারের ব্রান্ড এন্ড কমিউনিকেশনের সিনিয়র ম্যানেজার আহমেদ সোয়েব ইকবাল। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সবদিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মিনাবাজার সুপার স্টোরগুলো। স্বাভাবিক অবস্থায় আগে প্রতিদিন ৫৫ থেকে ৬০ লাখ টাকা বেচাকেনা হতো। বর্তমানে বেচাবিক্রি কমেছে ২০ শতাংশ। এখন শুধু শুক্র ও শনিবার ঢাকার বাইরে থেকে পণ্য আসছে। বাকিদিনগুলোতে ট্রাকে পণ্য আনা সম্ভব হচ্ছে না।   যে কারণে পণ্যের মজুদও কমছে। চাহিদা অনুযায়ী ক্রেতাদের পণ্য সরবরাহ দেয়া যাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, হরতালে পরিবহন খরচ তিনগুণ বেড়েছে। দশ হাজার টাকার ট্রাক ভাড়া এখন গুণতে হচ্ছে ৪০ হাজার টাকায়। এই ভাড়া বৃদ্ধি ব্যবসার ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

অবরোধ ও হরতালে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেন দেশের অন্যতম খ্যাতনামা চেইন সুপার স্টোর ‘স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরও।  

সাব্বির হাসান নাসির বলেন, সামগ্রিক  বিবেচনায় ‘স্বপ্ন’ ভালো অবস্থানে রয়েছে,তবে হরতাল অবরোধের কারণে আমাদের আউটলটেগুলোতে শাক, সবজি, মাংস ও পোল্ট্রিজাত পণ্য সরবরাহ অটুট রাখতে আমাদের ব্যয় কিছুটা বেড়েছে। অবরোধ ও হরতালে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে ৬০ শতাংশ। পাশাপাশি পণ্য সরবরাহও কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের তরফে অতিরিক্ত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রাহকদের কাছে ‘স্বপ্ন’র মান বজায় রাখতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী বেশি করে জমা রাখতে হচ্ছে স্টোরে। পাশাপাশি রাখা হয়েছে বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা।

তিনি আরও বলেন, ‘সব মিলিয়ে গ্রাহকদের কাছে মানসম্মত খাদ্যসামগ্রী সাশ্রয়ী মূল্যে পৌঁছে দিতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ’ এই প্রতিজ্ঞা রর্ক্ষাথে হরতাল অবরোধেও স্বপ্ন যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অবশ্য হরতাল অবরোধে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার পরও কোনো পণ্যের দাম বাড়ানো হয়নি ‘স্বপ্ন’র স্টোরগুলোতে। ‘স্বপ্ন’র খামারবাড়ি আউটলেটে আফাজউদ্দিন নামের এক ক্রেতা জানালেন, এখানে সব পণ্যের দামই স্থিতিশীল রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।