ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খুলনা বাণিজ্য মেলার সময় বাড়ানোয় ক্ষোভ

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৫
খুলনা বাণিজ্য মেলার সময় বাড়ানোয় ক্ষোভ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: মাস শেষ হয়ে গেলেও শেষ হচ্ছে না খুলনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। শুনেছি মেলার সময় ১৫ দিন বাড়ানো হয়েছে।

এরপর নাকি এখানে বৈশাখী মেলা হবে। এভাবে যদি মেলার সময় বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের ফুটপাতের হকারদের না খেয়ে থাকতে হবে।

ক্ষোভ আর আক্ষেপ নিয়ে শনিবার(২১ মার্চ’২০১৫) বিকেলে নগরীর ডাকবাংলা মোড়ের ফুটপাতের গেঞ্জি বিক্রেতা জলিল মিয়া এসব কথা বলছিলেন।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন অফার দিয়ে এক-দেড়শ টাকায় গেঞ্জি বিক্রি করা হয়। মানুষ আলো ঝলমলে দোকান থেকে এসব গেঞ্জি কিনছেনও। এতে তাদের মতো ব্যবসায়ীরা বেচাকেনা করতে পারছেন না।

শুধু একজন জলিল নয়, বাণিজ্য মেলার সময় বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খুলনার স্থায়ী মার্কেট ও বিপণী বিতানের ব্যবসায়ীরা।

নগরীর জলিল টাওয়ারের অরেঞ্জটেল দোকানের মালিক এম.এ. সালেহীন ও বিক্রেতা টুটুলের সাথে কথা হয় বাংলানিউজের।

হতাশার সঙ্গে তারা বলেন, একে তো হরতাল-অবরোধে নেই বেচাকেনা, তার উপর আবার বাণিজ্য মেলা। আমাদের এখানে বিক্রি হয় মোবাইল ফোন, কসমেটিক্স, বিভিন্ন মেয়েদের ভ্যানিটি ব্যাগ, জুতাসহ বিভিন্ন জিনিস।

তারা জানান এখানের জিনিসপত্র আর বাণিজ্য মেলার জিনিসের গুণগত মানের যোজন-যোজন ব্যবধান। যতসব সস্তা জিনিস বিক্রি হয় বাণিজ্য মেলায়। মানুষ ঠকানো হয় এ মেলায়। মানুষ সেখানে সস্তায় কিনতে পারে বলে যায়। আসলে বাণিজ্য মেলার মধ্যে যতসব ২ নম্বর জিনিসপত্র কিনতে পাওয়া যায়।

ওখানে যা বিক্রি হয় তার থেকে ফুটপাতে বিক্রি দ্রব্যাদির বেশি ডিমান্ড আছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

কথা হয় খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের নিউ বিসমিল্লাহ ফেব্রিক্সের মালিক আলম হোসেনের সাথে।

তিনি বলেন, এখানে বিক্রি হয় দেশি-বিদেশি কাপড়, থ্রি-পিচ ও বোরখা। এখানের জিনিস আমরা কাস্টমারদের গ্যারান্টি সহকারে দিতে পারি। বাণিজ্য মেলায় কি গ্যারান্টিতে দেবে? আমরাও কিছু আইটেম কম দামে বিক্রি করি কিন্তু বাণিজ্য মেলায় বিক্রি হয় ৫৯৯ টাকায় ৩ সেট থ্রি-পিচ। আমাদের এখানে যেসব বিদেশি থ্রি পিচ তার মেমো আমি দেখাতে পারি কিন্তু বাণিজ্যমেলায় দেশের বাইরের কোনো মেমো পাবেন না। ইচ্ছা করলে যাচাই করে দেখেন সত্য কি মিথ্যা?

নগরীর সিমেট্রি রোড পাদুকা সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বাণিজ্যমেলা হলে আমাদের বেচাকেনা কম হয়। কাস্টমাররা ঠিকমত আসে না।

মেলার সময় বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

একইভাবে মেলার সময় বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিউমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খাজা খানজাহান আলী হকার্স মার্কেট, আক্তার চেম্বারের একাধিক ব্যবসায়ী।

এ বিষয়ে মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়কারী মিয়া মো. রাসেল আহমেদ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে বাংলানিউজকে বলেন, মেলার সময় বাড়ানো হয়েছে মেলার স্টল মালিকদের দাবিতে। তারা ১৫ দিন বাড়ানোর পরও পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত মেলা চালানোর দাবি করেছেন।

তবে’ ব্যবসায়ীদের একটি অংশ অভিযোগ করেছেন, মেলার সময় বাড়ানোর পক্ষে তারা ছিলেন না।

নতুন বাজার এলাকার চিংড়ি ব্যবসায়ী আবু মুসা বলেন, খুলনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা মানেই নানা অপূর্ণতা, অপ্রাপ্তি আর অভিযোগ। রপ্তানি বাণিজ্যে গতি যোগানোর লক্ষ্যে ১৪ বছর ধরে এ মেলার আয়োজন করা হলেও লক্ষ্য অর্জনে এ মেলা অনেকটাই ব্যর্থ। এ জন্য মেলা কর্তৃপক্ষই দায়ী।
 
খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী ১৪তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়। খুলনা চেম্বার অব কমার্স এবং মেসার্স চামেলী ট্রেডার্স যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে।

মেলায় স্টল রয়েছে ১৬০টি। এছাড়া প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৮টি। আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত মেলা চলবে।

মেলায় রয়েছে তৈরি পোশাক, জুতা, প্রসাধনী, জুয়েলারি, ক্রোকারিজ, খাবার এবং প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের স্টল। তাঁত, হস্ত ও কুটির শিল্পের রকমারি পণ্য তো রয়েছেই। এছাড়া মেলায় শিশুদের জন্য ট্রেন, থ্রিডি মুভি ও নাগরদোলাসহ ২০টি আইটেম নিয়ে রয়েছে আলাদা গেম জোন।  

বাংলাদেশ সময়ঃ ২১৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।