ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন

হুমকির মুখে সড়ক-রেলসেতু ও বিদ্যুৎকেন্দ্র

মাসুক হৃদয়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৫
হুমকির মুখে সড়ক-রেলসেতু ও বিদ্যুৎকেন্দ্র ছবি : বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোহাগপুর এলাকায় মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে।

ফলে নদীতীরে ভাঙন দেখা দেওয়ার পাশাপাশি সড়ক ও রেলসেতু, আশুগঞ্জ নদীবন্দর এবং তাপবিদ্যু‍ৎ কেন্দ্র হুমকির মুখে পড়েছে।



এদিকে, স্থানীয় এলিগেন্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের ব্যবসায়িক কাজে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি এক কোটি ঘনফুটের বেশি বালু উত্তোলন করে নিয়েছে। কিন্তু এর বিনিময়ে কোনো রাজস্ব পায়নি সরকার।

সরেজমিন সোহাগপুর এলাকায় মেঘনা নদীপাড়ে গিয়ে দেখা যায়, একটি বড় আকারের শক্তিশালী ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বড় স্টিলের নৌকায় লোড করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানায়, অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিদিন ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে প্রমত্তা মেঘনা। নদীর তীর ভাঙছে অব্যাহতভাবে। এতে করে হুমকির ‍মুখে পড়েছে আশুগঞ্জ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, আশুগঞ্জ নদীবন্দর, সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু ও শহীদ আব্দুল হালিম রেলসেতু। তবে এদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই স্থানীয় প্রশাসনের।

স্থানীয়দের দাবি, আশুগঞ্জকে আন্তর্জাতিক নৌ-বন্দর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে এ এলাকায় বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি শুরু হয়। নদী তীরবর্তী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে চলতি বছরেই প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা রয়েছে।

কিন্তু এভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে কি পয়েন্ট ইনস্টলেশনভুক্ত (কেপিআই) এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও একই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রায় সবগুলো স্থাপনা নদী তীরে অবস্থিত। ফলে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে প্রতিষ্ঠানগুলো। নদীবন্দরও হুমকির মুখে পড়বে। এভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা ও বালু উত্তোলনে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।

আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ‌এনও) সন্দ্বীপ কুমার সিংহ বাংলানিউজকে বলেন, মেঘনা থেকে বালু উত্তোলনে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শন করে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলিগেন্সের সত্ত্বাধিকারী জাবেদ ইকবালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বালু উত্তোলন করা হচ্ছে ঠিকই। তবে, এতে রেল ও সড়কসেতুর হুমকিতে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

এছাড়া কেপিআইভুক্ত তাপবিদ্যুৎ ও সার কারখানা ভবনেরও কোনো ক্ষতি হবে না বলে তিনি দাবি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৫
এসআর/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।