ঢাকা: শ্রমিকদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তানদের জন্য তিন লাখ টাকা পর্যন্ত সহায়তা করবে সরকার। এজন্য শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
বুধবার (২৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান শ্রম প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যাদের দুই কোটির টাকার মূলধন রয়েছে এবং তাদের লভ্যাংশের দশমিক ৫ শতাংশ এই ফাউন্ডেশনে জমা দেয়। এই তহবিলে প্রায় একশ’ কোটি টাকা জমা রয়েছে।
তহবিলের লভ্যাংশ থেকে শ্রমিক কল্যাণে ব্যয় করা হয়ে থাকে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনে (বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংসতায়) আহত পরিবহন শ্রমিকদের ২০ হাজার করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
ফাউন্ডেশনের বিধিমালা পরিবর্তন করা হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনা, অসুস্থ বা মৃতজনিত কারণে যাতে শ্রমিকরা দুই লাখ টাকা করে পায় সে প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগিরই বিধি পরিবর্তন হলে কার্যকর করতে পারবো।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করা শ্রমিকদের সন্তানদের সরাসরি তিন লাখ টাকা পযর্ন্ত সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
শ্রম সচিব মিকাইল শিপার জানান, শ্রম আইন-২০০৬’ অনুযায়ী তহবিল কর্মরত শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে ২০১৩ সালের সংশোধনীর সময় ব্যয়ে পরিধি বাড়ানো হয় যাতে ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতরাও এর সুবিধা পায়।
২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তহবিলে আট লাখ ৪৪ হাজার টাকা ছিল জানিয়ে শ্রমসচিব বলেন, এ পর্যন্ত জমা হয়েছে ৭৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
গ্রামীণফোন এদিন সাড়ে ১৭ কোটি টাকার চেক প্রদান করে, এ নিয়ে ৯৭ কেটি ১০ লাখ টাকা জমা হলো বলে জানান শ্রমসচিব।
এ পর্যন্ত ৪৭ প্রতিষ্ঠান লভ্যাংশ জমা দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৩ সালের লভ্যাংশ থেকে গ্রামীণফোন দিয়েছে সর্বোচ্চ ১৬ কোটি ১৬ লাখ।
কল্যাণ তহবিলের অর্থ এফডিআর করে রাখা হয় জানিয়ে সচিব বলেন, লভ্যাংশ থেকে শ্রমিক কল্যাণে ব্যয় করা হচ্ছে।
এফডিআর এবং লভ্যাংশসহ বর্তমানে তহবিলে মোট ৬৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা জমা আছে।
শ্রমসচিব বলেন, এ পর্যন্ত ৩০০ জন শ্রমিককে এক কোটি ৪৭ লাখ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আর নির্মাণ ও মোটরযান সেক্টরের দুই হাজার শ্রমিককে যৌথ বিমার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তহবিল থেকে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে এক কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
শ্রম আইনে লভ্যংশ না দিলে শাস্তির বিধান রয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, কারা লাভে আছে তা জানতে অডিট ফার্মের সাথে যোগাযোগ করছি। আগামীতে স্টক এক্সচেঞ্জের সাথে যোগাযোগ করব কতগুলো প্রতিষ্ঠান লভ্যাংশ দেয়।
বিধিমালা আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানোর পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে আগামী এক মাসের মধ্যে ভেটিং হয়ে আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৫
এমআইএইচ/আরআই