ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

যখন তখন চাকরিচ্যুতি নয়

ব্র্যাক-ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মীদের স্বস্তি

শাহেদ ইরশাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৭ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৫
ব্র্যাক-ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মীদের স্বস্তি

ঢাকা: অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছাড়াই লো-পারফরমেন্সের অজুহাতে বেসরকারি ব্যাংকের কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনার খবর পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ব্র্যাক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কর্মীরা।


 
২০১৪ সালের অক্টোবরে দুই হাজার কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। এর কিছুদিন পর প্রায় ৫শ’ কর্মী চাকরি খুইয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংক থেকে।
 
এছাড়াও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ, অবসরে যাওয়ার পর কর্মীদের পাওনা পরিশোধ নিয়ে নানা রকম টালবাহানা করছে দেশে কার্যরত বেসরকারি ব্যাংকগুলো।
 
মানবিক দিক বিবেচনা করে এসব বিষয় নিয়ে বিব্রত নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থার বিধান মেনে চলা ও ব্যাংকিং খাতের সুনাম ধরে রাখতেই নতুন নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
 
বৃহস্পতিবার ( ৩০ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে ব্যাংকার্স সভায় উপস্থিত সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের এ বিষয়ে কঠোর হুশিযারি দেন গর্ভনর ড. আতিউর রহমান।
 
সভা শেষে ডেপুটি গর্ভনর এসকে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, কর্মক্ষেত্রে কোনো কর্মীর পারফরমেন্স ভালো নয়, এমন অভিযোগে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। পারফরমেন্স ভালো করার জন্য বেশি বেশি প্রশিক্ষণ দিতে হবে। কর্মকর্তাদের আগ্রাসী লক্ষ্যমাত্রা দেওয়ার প্রবণতা থেকেও বের হয়ে আসতে হবে। তাহলেই এ ধরনের সমস্যা দূর হবে।
 
এসকে সুর চৌধুরী আরও বলেন, আমাদের কাছে খবর আছে, কর্মকর্তাদের পদত্যাগের পর ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকলেও বিভিন্ন ব্যাংকে তার পরিপালন করা হচ্ছে না। সময় মতো পরিশোধ করা হয় না গ্রাচ্যুইটি ভাতা ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাও। অবসর নেওয়ার পর বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আটকে রাখা হচ্ছে পেনশনের টাকা। চাকরি ছাড়ার পর সকল কর্মীর আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সহস্রাধিক ক্যাশিয়ারের বেতন কমিয়ে অর্ধেক করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। বিষয়টি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ঢাকার বিভিন্ন শাখা থেকে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বদলি করা হয় কর্মীদের।
 
এরপরই বেতন কমানো ক্যাশিয়ারদের চাকরিচ্যুত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পর্ষদ সভায় প্রস্তাব করেন কর্তৃপক্ষ। যদিও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তারপর থেকেই চরম আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন ডাচ-বাংলার এসব কর্মীরা।
 
৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে ‘যখন তখন ব্যাংককর্মীদের চাকরিচ্যুতি নয়’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ব্র্যাক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মী এ প্রতিবেদককে ফোন করে বিস্তারিত জানতে চান।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সময়োপযোগী এ সিদ্ধান্তের খবর পেয়ে আতঙ্ক ছেড়ে স্বস্তি প্রকাশ করেন ব্র্যাক এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কর্মীরা। গর্ভনরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাও জানান তারা।
 
অভিযোগ রয়েছে, বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক মুনাফা কমে গেলে মাঝে মধ্যেই জোর করে শত শত কর্মীকে চাকরিচ্যুত করে থাকে। অথবা দেওয়া হয় সীমাহীন লক্ষ্যমাত্রা। পূরণ করতে না পারলেই চাকরিচ্যুত করা হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৫
এসই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।