ঢাকা: বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে প্রায় বিক্রি হওয়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক এখন মডেল ব্যাংকে পরিণত হতে চলছে। ব্যাংকের উন্নয়নের কথা বিভিন্ন স্থানে বক্তব্যে বলেন, সরকারের প্রতিমন্ত্রী, সচিব এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্বাহী কর্মকর্তারাও।
ব্যাংকটির বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারাও অন্যান্য ব্যাংকের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, বদলে গেছে রূপালী ব্যাংক। ব্যাংকটির এই আমুল পরিবর্তনের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা এম. ফরিদ উদ্দিন।
কর্মকর্তাদের দাবি, সকল কর্মীকে সম সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করায় আস্থা ফিরেছে গ্রাহকদের মধ্যে। এর কারণ হচ্ছে যথাসময়ে কর্মীদের পদোন্নতি দেওয়া। কর্মীদের দায়িত্বশীল কর্মের জন্য প্রতি বছরই বাড়ছে মুনাফা। শ্রেণিকৃত ঋণ হ্রাস পাচ্ছে।
সরকার ও শেয়ারহোল্ডাররা নিয়মিত লভ্যাংশ পাচ্ছে। গ্রাহক সেবার মান বাড়াতে এটিএম, অনলাইন সেবা চালুসহ নতুন শাখা খোলা হচ্ছে প্রতি বছরই। ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিনের যোগদানের পরে সার্বিক ভাবে রূপালী ব্যাংকের আমুল পরিবর্তন হয়েছে।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতি মন্ত্রী এম এ মান্নান রূপালী ব্যাংকের হবিগঞ্জে একটি শাখা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যাংকের কথা উল্লেখ করে বলেন, রূপালী ব্যাংকের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে ইমেজ। এর মূল কারণে রয়েছে এ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফরিদ উদ্দিন।
রূপালী ব্যাংকের মূল্যায়ন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বলেন, এক সময় নিম্ন মানের ব্যাংকের উদাহরণ হিসেবে রূপালী ব্যাংককে ধরা হতো। কারণ রূপালী ব্যাংকের অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। কিন্তু বর্তমানে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন অতীতের সকল সমস্যা কাটিয়ে ব্যাংকটিকে টেনে ওপরে তুলছেন।
ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রায় সকল বিষয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। এখন এটি সরকারি ও বেসরকারি অন্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে যে কোন বিষয়ে প্রতিযোগিতা করতে পারে। এছাড়া এটি বর্তমানে একটি মডেল ব্যাংকের ভূমিকা পালন করছে। যে কোন ব্যাংক এটিকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে বেছে নিতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার সময় ৯ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। তিনি কৃষি, বিডিবিএল, হাউজবিল্ডিং ফাইন্যান্স, জনতা ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকার পরে ২০১০ সালে রূপালী ব্যাংকে যোগদান করেন। জনতা ব্যাংকে থাকা অবস্থায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তাকে বাধ্যতামূলক চাকরি থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য তিনি মামলা করেন। মামলার এক পর্যায়ে চাকরি ফিরে পান। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার তাকে জিএম থেকে রূপালী ব্যাংকের সরাসরি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রূপালী ব্যাংকটি প্রায় বিক্রি হওয়ার উপক্রম চলছিল। ব্যাংকের সকল ব্যবসা বন্ধ ছিল। প্রায় ৩০ বছর ধরে কোন নতুন শাখা খোলা হয়নি। লোকবল নিয়োগ দেয়া হয়নি। ব্যাংকের প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা লোকসান ছিল। ব্যাংকটি দিনের পর দিন লোকসান গুণছিল। তেমন কোনো প্রোডাক্ট ছিল না।
এনমকি নতুন কোন প্রোডাক্টও চালু করতে দেয়া হয়নি। ব্যাংকের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শুধু বিক্রির প্রহর গুণছিলেন। ব্যাংকের এমন খারাপ সময়ে মুক্তিযোদ্ধা এম. ফরিদ উদ্দিন নিয়োগ পাওয়ার পরপরই বিভিন্নভাবে ব্যাংকের উন্নয়নে কাজ শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রূপালী ব্যাংকটি আজ উন্নয়নের শীর্ষে। ব্যাংকটি একটি মডেল ব্যাংকে পরিণত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপালী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, রূপালী ব্যাংকের ইতিহাসে অনেক এমডি দেখেছি। তবে এম. ফরিদ উদ্দিনের মতো এত সৎ, অভিজ্ঞ এবং যোগ্য লোক পাইনি। তিনি ব্যাংক ও ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তিনি যোগদানের পর ব্যাংকের উন্নয়নে বিভিন্নভাবে কাজ করে এটিকে একটি শক্তিশালী ব্যাংকে পরিণত করেছেন।
সদ্য বিদায় হওয়া রূপালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ভিষ্মদেব মন্ডল বলেন, আমি বেশ কয়েক মাস ধরে রূপালী ব্যাংকে চাকরি করেছি। তবে ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিনের মত একটি সৎ ও অভিজ্ঞ লোক অন্য কোন ব্যাংকে পাইনি। রূপালী ব্যাংকের উন্নয়নে জন্য ফরিদ উদ্দিনের বিকল্প নেই।
রূপালী ব্যাংকের গত ৩ বছরের কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন করলে দেখা যাবে, ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে আধুনিকায়ন, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, অনলাইন ব্যাংকিং, ইমেজ বৃদ্ধিসহ সামগ্রিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকটি। ব্যাংকের আমানত বৃদ্ধি পেয়েছে। কমছে শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১০ সালে রূপালী ব্যাংকের মোট আমানত ছিল ৯ হাজার ১১২.৩৮ কোটি টাকা। ২০১১ সালে ছিল ১০ হাজার ৭২৩.৪০ কোটি টাকা। আমানত বৃদ্ধির হার হয়েছে ১৭.৬৮ শতাংশ। ২০১২ সালে ছিল ১৩ হাজার ৬৫৯.৮৮ এবং ২০১৩ সালের আমানত দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০১৪ সালে আমানতের পরিমাণ ২৩ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা।
২০১০ সালে ব্যাংকের ঋণ ও অগ্রীম ছিল মোট ৬ হাজার ৬০৪.৯০ কোটি টাকা। ২০১১ সালে এর পরিমাণ ৭ হাজার ৬৫২.৪৯ কোটি টাকা। ২০১২ সালে ছিল ৯ হাজার ৫৪.১৬ কোটি এবং ২০১৩ সালে ছিল ১০ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে ১২ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা।
২০১১ সালে ব্যাংকের এসএমই খাতে ২ হাজার ২৮৭ জন গ্রাহকের মধ্যে ২৭৪.৫২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। এর মাধ্যমে ৬ হাজার ৬১০ জনের স্থায়ী এবং ৩ হাজার ১৮ জনের অস্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পল্লী এলাকায় দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তাকল্পে ৪৪.১০ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। ২০১২ সালে ঋণ বিতরণ করা হয় ২৪৫.৯৭ কোটি এবং ২০১৩ সালে বিতরণ করা হয় ২০৫.২৬ কোটি টাকা। ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ খাতে মোট ৫০ হাজার ৬৮ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
২০১০ সালে ব্যাংকের শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৭৯০.২৭ কোটি টাকা। রিকভারি স্পেশালিস্ট নিয়োগ দেয়া এবং ঋণ আদায় কার্যক্রম জোরদার ও গতিশীল করার মাধ্যমে ২০১১ সালে শ্রেণিকৃত ঋণ কমে ৩১০.৭৮ কোটি টাকা হয়। তবে ২০১২ সালে এর পরিমাণ ২ হাজার ২৬২.৭৯ টাকা হলেও ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে শ্রেণিকৃত ঋণ কমে ১০ হাজার ৫৩.৯১ কোটি টাকা হয়। ২০১৪ সালে শ্রেণিকৃত ঋণ হ্রাস পেয়ে ১ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা দাঁড়ায়। শ্রেণিকৃত ঋণ হ্রাস পাওয়ার হার সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এসেছে। অথচ যেখানে অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি।
২০১০ সালের তুলনায় বৈদেশিক রেমিট্যান্স ৬.৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০১১ সালে ২ হাজার ১১৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক রেমিট্যান্স বৃদ্ধির জন্য ২০১১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৪টি এক্সচেঞ্জ কোম্পানি সঙ্গে ড্রয়িং এ্যারেজমেন্ট চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।
বর্তমানে রূপালী ব্যাংকের এক্সচেঞ্জ কোম্পানির সংখ্যা ২৬টি। করেসপন্ডেন্ট ব্যাংকের সংখ্যা যথাক্রমে ১৮২টি। ২০১২ সালে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। আর ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে এসেছে ২ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে কিছুটা হ্রাস পেয়ে ১ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা রেমিট্যান্স সংগ্রহ করেছে ব্যাংকটি।
২০১০ সালে ব্যাংকের অর্জিত পরিচালন মুনাফার পরিমাণ ছিল ২৪৪.৬৯ কোটি টাকা। ২০১১ সালে পরিচালন মুনাফা ৪৭.১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৬০.৩৬ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। ২০১০ সালে রূপালী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারদেরকে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার প্রদান করে। এতে প্রতিষ্ঠানটি জেড-ক্যাটাগরি থেকে এ-ক্যাটাগরিতে আসে।
২০১১ সালে ২০ শতাংশ লভাংশ ঘোষণা করা হয়। ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার পরিমাণ বেড়েই চলছে। ২০১১ সালের মুনাফা ছিল ৩৬০.৩৬ টাকা টাকা। ২০১২ সালে ৩৭০.৪৬ এবং ২০১৩ সালে মুনাফার এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। ২০১৪ সালে মুনাফা হয় ২৮৩ কোটি টাকা।
রূপালী ব্যাংকে ১৯৮০ সালের পর নতুন কোনো শাখা খোলা হয়নি বরং একীভূত করার মাধ্যমে শাখার সংখ্যা কমানো হয়েছিল। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের জোর চেষ্টায় ২০১১ সালে অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা নিয়ে ১১টি নতুন শাখা খোলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ব্যাংকের মোট ৫৪৪টি শাখা রয়েছে।
ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং প্রবাসীদের জন্য ব্যাংকিং সেবা সহজ করার জন্য ২০১১ তারিখে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপালী ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় বুথ চালু করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিমান বন্দরেও বুথ চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রূপালী মাসিক সঞ্চয় স্কিম(আরএমএসএস), রূপালী মাসিক মুনাফা স্কিম(আরএমপিএস) রূপালী দ্বিগুণ বৃদ্ধি স্কিম (আরএমডিএস) প্রোডাক্ট চালুর মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবসা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। যেটি এর আগে ছিল না।
গ্রাহকদের আধুনিক ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের মাধ্যমে এরইমধ্যে প্রায় ১৮৯টি শাখায় অনলাইন ব্যাংকিং চালু রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে রূপালী ব্যাংকের এটিএম সেবার আওতায় ৬০টি শাখা রয়েছে। এ বছরের মধ্যে আরো ১৫০টি এটিএম বুথ চালু করা হবে।
সার্বিক ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আধুনিক যুগোপযোগী মানসম্পন্ন নতুন ব্যবস্থাপনা কাঠামো বাস্তবায়ন, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং অধিক দক্ষতার সঙ্গে ব্যাংক পরিচালনার স্বার্থে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সম্পন্ন করা হয়েছে। মহাব্যবস্থাপককে প্রধান করে ১০টি বিভাগীয় কার্যালয় গঠন করা হয়।
ব্যাংকের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য ২০১১ সালে শূন্য পদে ১০১ জন সিনিয়র অফিসার এবং ৭০২ জন অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রূপালী ব্যাংক মানব সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্রসহ বিভিন্ন বিভাগে চুক্তিভিত্তিক অধ্যক্ষ, কনসালটেন্ট, স্পেশালিস্ট নিয়োগ করা হয়েছে।
এছাড়া অধিকাংশ অস্থায়ী কর্মচারীদেরকে স্থায়ী করা হয়েছে। ২০১১ সালে বিভিন্ন গ্রেডে মোট ১ হাজার কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এক্সিলারেটেড পদোন্নতি, মূল্যায়ন ভিত্তিক পদোন্নতিসহ পলিসি প্রণয়ন করা হয়। ২০১৪ সালে ৫০১ জন অফিসার ৪০১ সিনিয়র অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
২০১২ সালে কর্মদক্ষতা ও কর্মস্পৃহা বৃদ্ধির উদ্দেশে রূপালী ব্যাংক মানব সম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র, বিআইবিএম, বিবিটিআইসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৬৯টি বিষয়ে ১ হাজার ৫১৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সর্বমোট ১০ হাজার ৭৪৬ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ট্রেনিং একাডেমির মাধ্যমে।
রূপালী ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড(আরআইএল) ও রূপালী ব্যাংক সিকিউরিটিজ নামে দু’টি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি প্রতিষ্ঠান গঠন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দু’টি মুনাফা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বাজার শৃংখলা বজায় রাখতে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ইউনিট(আরএমইউ) গঠন করে রূপালী ব্যাংক যথাযথ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ব্যাসেল-২ এর তিনটি নির্দেশনা যেমন- ন্যূনতম পুঁজি সংরক্ষণ, সুপারভাইজরি রিভিউ প্রসেস এবং মার্কেট ডিসিপ্লিনে ৩টি কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখবাল করা হচ্ছে।
ব্যাংকের নিজস্ব স্থাবর সম্পত্তি যথাযথভাবে কাজে লাগানো ও ব্যবহারযোগ্য করার লক্ষ্যে ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে ব্যাংকের নিজস্ব ৫টি বহুতল ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব ভবনের কাজ এরইমধ্যে শুরু করা হয়েছে।
ভঙ্গুর রূপালী ব্যাংকটিকে কিভাবে একটি শক্তিশালী ব্যাংকে রূপান্তরিত করা হয়েছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ব্যাংকের মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে সমাধান করার চেষ্টা করি। প্রথমে ব্যবসা বৃদ্ধির পাশাপাশি লোকবল নিয়োগ, অটোমেশন, কম্পিউটারাইডজ পদ্ধতি চালু, নতুন শাখা খোলা, উন্নত গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করা, শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়, ঋণ বিতরণ, নতুন শাখা খোলার পাশাপাশি ব্যাপক সংস্কার করি। এসব কার্যক্রমের ফলে ব্যাংকটি প্রতিবছরই মুনাফা অর্জন করে।
সামগ্রিক কার্যক্রমে গতি ফিরে আসে। তবে ব্যাংকের অনেক সমস্যাও রয়েছে। যেগুলো সমাধান করা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত সকল স্টেক হোল্ডারদের এগিয়ে আসতে হবে।
রূপালী ব্যাংকের অগ্রগতি নিয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম সম্প্রতি ‘রূপালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে-২০১৫’ রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে বলেন, রূপালী ব্যাংক ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ব্যাংকের কর্মকাণ্ডে গতি ফিরে এসেছে। এর পেছনে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. ফরিদ উদ্দিন অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৫
এসই/এনএস/