চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে অবৈধ চাঁদা আদায়সহ বিভিন্নভাবে শ্রমিকদের নির্যাতনের প্রতিবাদে বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে জেলা ট্রাক মালিক সমিতি ও মটর শ্রমিক ইউনিয়ন।
সোমবার সকাল থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে জেলা ট্রাক মালিক সমিতি ও মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা সকাল থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দরগামী খালি ট্রাক এবং সোনামসজিদ থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাস্তায় অবস্থান নেয়।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ সোনামসজিদ স্থলবন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে দালালরা ট্রাক প্রতি ১২’শ থেকে ৫ হাজার টাকা এবং ফলের ট্রাক থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকেন। একটি ট্রাকের ভাড়া ২৮ হাজার টাকা হলে অগ্রিম ৫ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া ধরতে হয়। আর ট্রাক মালিক পান ২৩ হাজার।
জেলার ট্রাকগুলোকে ভাড়া না দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে তারা এ কর্মসূচি চালাচ্ছে। এতে ট্রাক টার্মিনালে আটকে পড়েছে শত শত ট্রাক। সকাল থেকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী খালি ট্রাকের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রাকও আটকে দেওয়ায় বন্দর থেকে আসা বেশকিছু পেঁয়াজভর্তি ট্রাকও আটকা পড়ে। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়েছে আমদানিকারকরা।
অন্যদিকে, চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কোনও খালি ট্রাক সোনামসজিদ বন্দরে যেতে দেওয়া হবে না এবং সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টু ও জেলা ট্রাক ও মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক।
এদিকে, অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও ট্রাক শ্রমিকদের হয়রানির প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো স্থবির হয়ে পড়েছে সোনামসজিদ স্থল বন্দরের পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা। রোববার জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপ ও মটর শ্রমিক ইউনিয়নের বন্দরে ট্রাক না পাঠানোর সিদ্ধান্তের কারণে এ স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
রাতে অল্পকিছু বাংলা গাড়ি বন্দরে প্রবেশ করলেও সকালের পর আর কোনও গাড়ি বন্দরে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। তবে, ভারত থেকে পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করেছে।
বন্দরে ট্রাক যাওয়া-আসা বন্ধ করতে শহরের দ্বারিয়াপুর ট্রাক টার্মিনাল ও গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুরে সোমবার দুটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়েছে শ্রমিকরা। এতে করে নতুন কোনও গাড়ি ঢুকতে না পারায় বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্যজট হতে শুরু করেছে।
পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের অপারেশন অফিসার মঈনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভারতীয় পণ্যভর্তি প্রায় ৩’শ ট্রাকের বিপরীতে বন্দরে বাংলা গাড়ি ছিল ৫০-এর নিচে।
এছাড়া আমদানিকৃত কাঁচা পণ্যভর্তি ট্রাক টার্মিনালে আটকানোর কারণে বেকায়দায় পড়েছে বাইরের ট্রাক চালকরা। অন্যদিকে হঠাৎ করে ট্রাক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৫
পিসি/