ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী সরকারি ৪ ব্যাংক মূলধনের ১৫ শতাংশের বেশি কোনো প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে পারবে না। বেশি দিতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে।
এ চুক্তি মোতাবেক সোনালী ব্যাংক একজন গ্রাহককে সর্বোচ্চ ৫শ ৩৩ কোটি টাকা ঋণ দিতে পারবে। কিন্ত চুক্তি ভঙ্গ করে প্রায় ৬শ কোটি টাকা ঋণ থাকার পরও নতুন করে আরও দেড়শ কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব পর্ষদ থেকে অনুমোদন করানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪১৮তম সভায় থার্মেক্স গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেসার্স থার্মেক্স চেক ফেব্রিকস এর ঋণ প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চলতি মূলধন দায় পরিশোধ করতে ১শ ৩৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকার ঋণ প্রস্তাব এর আগে পর্ষদের ৪১৭তম সভায় উথাপন করা হয়।
এর মধ্যে ৫০ কোটি চলতি ঋণ ও ৮৯ কোটি ৬৪ লাখ ৮ বছর মেয়াদী ঋণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের ঋণ বিতরণে করা চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে।
থার্মেক্স গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠানের নামে ২০১৫ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ ৫’শ ৭৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। নতুন অনুমোদন হওয়া ঋণ নিয়ে মোট দেনার পরিমাণ ৭শ ১৯ কোটি ৩ লাখ টাকা।
একক গ্রাহকের ঋণ সীমা অতিক্রম করার অভিযোগ রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানার অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিরুদ্ধেও।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নিয়ে ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা সভার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈঠকে উত্থাপিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এই সীমা অতিক্রম করে সোনালী ব্যাংক ১ জন, জনতা ৪ জন, অগ্রণী ১ জন ও রূপালী ব্যাংক ৪ জন গ্রাহককে বড় অংকের ঋণ দিয়েছে। এমনকি এসব গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার সময় অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদনও নেওয়া হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের ঋণ দেওয়ার পর নতুন করে মূলধন সংকটে পড়ছে ব্যাংকগুলো। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে চলতি অর্থ বছরে দু’দফায় সোনালী ব্যাংক মূলধন ভর্তুকি নিয়েছে ২ হাজার ৭’শ ৫ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর এস কে সুর চৌধুরী বলেন, বাণিজ্যিক গ্রাহককে ঋণ না দিয়ে উৎপাদনশীল খাতে ঋণ বৃদ্ধি করতে বলা হয়েছে। কোনো অবস্থাতে যেন এসব ব্যাংক একক গ্রাহকের ঋণসীমা অতিক্রম না করে সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
আর কোনো কারণে সীমা অতিক্রম করতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। এরপরও যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৫
এসই/এনএস