ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

২৩ জেলায় কল-কারখানা অধিদপ্তরের নিজস্ব অফিস

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩০ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৫
২৩ জেলায় কল-কারখানা অধিদপ্তরের নিজস্ব অফিস

ঢাকা: ১৯৭০ সালে 'কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদফতর প্রতিষ্ঠা করা হয়। জন্মলগ্নে এর মোট জনবল ছিল ৩১৪ জন।

এটি এখন অধিদপ্তরে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু সারা দেশে থাকা অধিদপ্তরের অফিসগুলো এখনও নিজস্ব ভবনে যেতে পারেনি।

আলাদা আলাদা ভবন ভাড়া নিয়ে পরিদর্শকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলকারখানা পরিদর্শন করে যাচ্ছেন। তবে আশার কথা হলো- দেরিতে হলেও ২৩টি জেলা কার্ালয়ের কলকারখানা অধিদপ্তরের নিজস্ব অফিস হচ্ছে।  

রানা প্লাজা ধ্বস ও যুক্তরাষ্ট্রে স্থগিত হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের বিশেষ শুল্ক সুবিধা (জিএসপি) ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ক্রেতাদের চাপে স্থায়ী অফিস তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর।

২৩টি জেলা কার্যালয়ের মধ্যে ৯টি জেলায় স্থায়ী অফিস নির্মাণের কাযর্ক্রম গ্রহণ করা হয়েছে প্রথম ধাপে। জেলাগুলো হলো- ময়মনসিংহ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, কুমিল্লা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, মৌলভীবাজার এবং বরিশাল। অফিসগুলোর নির্মাণ কাজ ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ কোটি টাকা।

অন্যদিকে দ্বিতীয় ধাপে ১৩টি জেলায় কলকারখানা পরিদর্শকদের অফিস নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলাগুলো হলো- ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, বগুড়া, খুলনা, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, যশোর, দিনাজপুর, সিলেট ও টাঙ্গাইল। অফিসগুলো জানুয়ারি ২০১৬ থেকে জুন ২০১৯ মেয়াদে নির্মাণ করা হবে।

এর মাধ্যমে বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের কারখানা অভ্যন্তরের শ্রম আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণ কাযর্ক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা।   

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহা-পরিদর্শক সৈয়দ আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৪ সালের ১৫ই জানুয়ারি পরিদফতরকে অধিদফতরে উন্নীত করে জনবল ৩১৪ থেকে নানা পদে মোট ৯৯৩ এ উন্নীত করা হয়। কিন্তু ১৯৭০ সাল থেকে এখনও পযর্ন্ত সারা দেশে অধিদফতরের নিজস্ব অফিস নেই। সারা দেশের কল-কারখানাগুলো পরিদর্শকেরা ভাড়া বাসায় অফিস তৈরি করে কল-কারখানা পরিদর্শন করে যাচ্ছেন। ’

তিনি আরও বলেন, আমরা অধিদফতরের জন্য ৬৪টি জেলা নিজস্ব ভবন তৈরি করবো। প্রতিটি জেলায় ৩০ জন করে পরিদর্শকও নিয়োগ দেবো। বহু দেরিতে হলেও আমরা এই কাজ শুরু করেছি। অধিদফতরের জন্য নিজস্ব ভবন তৈরি না হলে কলকারখানা পরিদর্শন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমাদের অতিরিক্ত ভাড়াও গুণতে হচ্ছে। এছাড়া ভাড়া বাসায় বার বার অফিস পরিবর্তন করা ঝামেলাও বটে। ’

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর সূত্র জানায়, ২৩টি অফিস নির্মিত হলে একদিকে যেমন সরকারের বিপুল পরিমাণে অর্থ সাশ্র্রয় হবে ঠিক তেমনি অধিদফতরের কাযর্ক্রমেও গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি শিল্প খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬, এর বিধান অনুযায়ী শ্রমিকদের কল্যাণ, পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার ব্যবস্থা দেখায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের প্রধান কাজ।

কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর সূত্র জানায়, ৪টি বিভাগীয় কার্যালয়, ৪টি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং ২৩টি শাখা কার্যালয়সহ মোট ৩২টি কার্যালয়ে ৩১৪ জন জনবল রয়েছে। বিভিন্ন স্তরের ৬৭৯টি পদ সৃষ্টি, ১০৭টি পদের উন্নয়ন ও ১৪৪টি পদের নাম পরিবর্তন করা হয়।

সারা দেশে উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ লাখ ৪২ হাজার ৮১৮টি। এর বাইরে দোকান, হোটেল, পরিবহন, নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০ লাখ ১৫ হাজার ১১৭টি। একযুগে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরও বেড়েছে। অথচ এতগুলো কল কারখানা পরিদর্শকেরা দেখভাল করছেন ভাড়া বাসায় অফিস তৈরি করে।

অধিদফতর মনে করে, শ্রমিক অসন্তোষ শিল্প কারখানায় উৎপাদনশীলতার গতিকে ব্যহ্নত করে। দেশের প্রতিটি জেলায় অফিস স্থাপনের মাধ্যমে পরিদর্শকদের নিয়োগ দেয়া হলে তাদের যথাযথ কাযর্করী পরিদর্শন কার্য্্রমের মাধ্যমে শ্রম আইন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে। ফলে শ্রম অসন্তোষ দূর করে কলকারখানার চাকাকে সচল রেখে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অবদান রাখা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়:  ১২৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৫
এমআইএস/এনএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।