ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিনিয়োগ বাড়ানোই আগামী বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৫
বিনিয়োগ বাড়ানোই আগামী বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ

ঢাকা: কয়েক বছর ধরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ঘরে আটকে আছে। এর প্রধান কারণ কাঙ্খিত বিনিয়োগে না হওয়া।

আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটেও বিনিয়োগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকারকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।

শুক্রবার (৮ মে’২০১৫) রাতে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এফবিসিসিআই ও এনটিভি আয়োজিত ‘কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, বিনিয়োগ বন্ধত্বা কাটিয়ে উঠতে হলে এডিবির মেগা প্রজেক্টগুলো (প্রকল্প) বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য এডিবির প্রকল্পগুলোতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখতে হবে। আর্থিক খাতের সংস্কার করতে হবে। সুদের হার কমানো ও গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান করতে হবে।
 
এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ’র সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম, সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য, বিএনপির চেয়ারপার্সন’র উপদেষ্টা ইনাম আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সুদের হার সরকার নির্ধারণ করে না। এটি ব্যবসায়ীদের উপর নির্ভর করে। তবে সুদের হার অনেক উচ্চ। এটি কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের উচ্চ মুনাফার প্রবণতা কমাতে হবে।

বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাস্তা করার অনুরোধ না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের আর কোথাও রাস্তার দরকার নাই। সারাদেশে যে রাস্তা আছে সেগুলোকেই ভালোভাবে দেখভাল করতে হবে।
 
এ সময় পেট্রোলিয়াম খাতের ভর্তুকিকে জঞ্জাল বলে অভিহিত করেন অর্থমন্ত্রী।
 
মুহিত বলেন, যে সরকার সাত’শ কোটি টাকার বাজেট দিতো, সেই সরকার এখন ৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিচ্ছে। এর মূলে রয়েছে সংস্কার। তবে রাজস্ব আহরণে আমাদের কিছু অদক্ষতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কিছু সংস্কার আনতে হবে।
 
মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, আগামী বাজেটে ট্যাক্স ও ভ্যাট কমানোর সুযোগ আছে। ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগামী বাজেটে ১০ শতাংশ করা যেতে পারে।
 
বিনিয়োগের বিষয়ে তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, সরকারি বিনিয়োগ বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহায়তা করে। তাই সরকারের এডিবির প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিতে হবে। এডিবির প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বেসরকারি বিনিয়োগও বৃদ্ধি পাবে।
 
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে যারা সুবিধা পাওয়ার কথা তারা পাননা। এ ধরনের লিকেজগুলো বন্ধ করতে হবে।
 
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি, বৈদেশিক সাহায্যের ব্যবহার, এডিবির নৈরাজ্য, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো আগামী বাজেটে সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।
 
দেবপ্রিয় বলেন, বিনিয়োগ বন্ধাত্ব না কাটার অন্যতম কারণ মেগা প্রজেক্টগুলো (প্রকল্প) বাস্তবায়ন না হওয়া। প্রকল্পগুলো বাস্তবায় করতে এডিবিতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হয় না। আর্থিক খাতের সংস্কারে সরকার যে হাতিয়ার থাকে তার ব্যবহার খুবই হতাশাজনক। এছাড়া পিপিপি কার্যকর করতে না পারাও সরকারের বড় ব্যর্থতা।
 
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, বিদ্যুৎ দিতে পারলে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হবে। এক্ষেত্রে জমি কোন সমস্যা হবে না।
 
সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলে বিনিয়োগে বাঁধা সৃষ্টি হবে না উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, পিপিপির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের অভাবের কারণে তা কার্যকর হয়নি।
 
আগামী জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করবেন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল আব্দুল মুহিত এবার সপ্তম বারের মতো বাজেট ঘোষণা করবেন। এবারের বাজেটের আকার প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, ৮ মে, ২০১৫
একে/এএসএস/এনএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।