ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এসএমই বিকাশে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৬ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৫
এসএমই বিকাশে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ

ঢাকা: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) বিকাশে শিল্প মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। একইসঙ্গে এসএমই খাতে সরকারের সরাসরি অর্থায়ন সহায়তা বাড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।



শনিবার (০৯ মে) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমিতে (বিবিটিএ) ‘বাংলাদেশে এসএমই শিল্প বিকাশে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্প বাংলাদেশ ইন্সপায়ারড প্রোগ্রাম-কম্পোন্যান্ট ৩, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিবিটিএ যৌথভাবে কর্মশালার আয়োজন করে।

কর্মশালায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম, বাংলাদেশ ইন্সপায়ারড প্রোগ্রাম-কম্পোন্যান্ট ৩-প্রকল্পের টিম লিডার আলী সাবেত, বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই পরামর্শক সুকোমল সিং চৌধুরী ও এসএমই অ্যান্ড স্পেশ্যাল প্রোগ্রামস বিভাগের উপ মহাব্যবস্থাপক মো. আশরাফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে আবুল কাশেম বলেন, দেশে অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতির বিকাশে এসএমই খাতে অর্থায়ন বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। এর ফলে গত কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের ব্যাংকিং প্রবেশাধিকার অনেক বেড়েছে। তিনি এসএমই খাতে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং এ শিল্পের উন্নয়নে গণমাধ্যমের গঠনমূলক পরামর্শ কামনা করেন।
আলী সাবেত বলেন, উন্নয়নশীল অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এসএমই শিল্পে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। এরপরও প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নয়ন হয়নি।

মূল কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাস্তবভিত্তিক এসএমই নীতি প্রণয়ন না হওয়া, এসএমই কর্মকাণ্ডে মনিটরিংয়ের অভাব, ব্যাংক সুদহার বেশি এবং এসএমই সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব।

ব্যাংক সুদহার কমাতে সরকারি বন্ড এবং সঞ্চয়পত্রের বিদ্যমান সুদহার কমানোর পরামর্শ দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই পরামর্শক সুকোমল সিং চৌধুরী বলেন, এসএমই শিল্প বিকাশের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হলো এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকা। যেমন-শিল্প মন্ত্রণালয়সহ এসএমই সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান বিসিক, এসএমই ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআরের মধ্যে স্পষ্টত সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশ্যাল প্রোগ্রামস বিভাগের উপ মহাব্যবস্থাপক মো. আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, দেশের মোট উদ্যোক্তার ৯৫ শতাংশ হলো এসএমই উদ্যোক্তা। অথচ বাজেটে তাদের প্রণোদনা বা সরাসরি আর্থিক সহায়তার পরিমাণ একেবারে নগন্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তহবিল থেকে যে পুনঃঅর্থায়ন সহায়তা দেওয়া হয়, তা এসএমই খাতের মোট ঋণের মাত্র শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। জাপানে এর পরিমাণ ৩ শতাংশ।

দেশে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক মোট এক কোটি ৬০ লাখ এসএমই উদ্যোক্তা রয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংক হিসাবধারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ৭ লাখ ৪৫ হাজার। আর চলতি অর্থবছরে এসএমই ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে এক লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা।

আশরাফুল ইসলাম এসএমই শিল্পের বিকাশে দেশে পঞ্চবার্ষিকীর পাশাপাশি একটি এসএমই পরিকল্পনা প্রণয়নের পরামর্শ দেন। বাংলাদেশ ইন্সপায়ারড প্রোগ্রাম-কম্পোন্যান্ট ৩ প্রকল্পের আওতায় দেশে এসএমই শিল্পের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে এসএমই কর্মশালার আয়োজন এবং প্রশিক্ষক তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দু’শ প্রশিক্ষক তৈরি করা হয়েছে, যারা বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের এসএমই বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন।

দিনব্যাপী কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৩০ জন অর্থনৈতিক প্রতিবেদক অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৬ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৫
এসই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।