ঢাকা: ভারতীয় ঋণ সহায়তায় খুলনা থেকে মংলা পযর্ন্ত একটি নতুন রেললাইন নির্মাণ করবে সরকার। একই সঙ্গে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত বিদ্যমান রেললাইনের সংস্কারও হবে ভারতীয় ঋণ সহায়তায়।
মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
একনেক সভায় ভারতীয় ঋণে দুটি প্রকল্পসহ মোট ৯টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ৫ হাজার ৮৬৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি খাত থেকে ২ হাজার ২৭০ কোটি ১৯ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য (ভারতীয় ঋণ) থেকে আসবে ৩ হাজার ৫৬৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
সভা শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
খুলনা থেকে মংলা পযর্ন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ সংশোধিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে ভারত সরকার ঋণ সহায়তা হিসেবে ২ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা দেবে। বাকি ১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার বহন করবে।
অন্যদিকে একনেক সভায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথটিকে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য একনেকে ৬৭৮ কোটি টাকার একটি সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এই প্রকল্পে ৫৫৬ কোটি টাকা ভারত সরকার বাংলাদেশকে ঋণ হিসেবে দেবে। বাকি ১২২ কোটি টাকা সরকার বহন করবে।
এছাড়া সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি ঘাটে একটি গুঁড়া দুধ উৎপাদন কারখানা স্থাপনে প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে একনেক বৈঠকে। এতে ব্যয় হবে ৭৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে মাত্র ৩০ ভাগ দুধ উৎপাদিত হয় বাকি ৭০ ভাগ দুধ বিদেশে থেকে আমদানি করা হয়। দেশে গুঁড়া দুধের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যেই প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। ’
তিনি আরও বলেন, ‘শাহজাদপুরে দৈনিক সাড়ে ৫ লাখ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে আড়াই লাখ থেকে ৩ লাখ লিটার দুধ সংগ্রহ করে পাস্তুরিত তরল দুধ, গুঁড়া দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য তৈরি করে সারা দেশে সরবরাহ করে মিল্কভিটা।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে শাহজাদপুর এলাকার ২ লাখ লিটার কাঁচা দুধ প্রক্রিয়াকরণ করে প্রতিদিন ২৫ মেট্রিকটন গুঁড়া দুধ উৎপাদন করা হবে। ’
অন্যান্য অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নসহ সৌন্দর্যবর্ধন কাজ প্রকল্প, এর ব্যয় ৬১ কোটি ২০ লাখ টাকা। জামালপুর শহর বাইপাস সড়ক নির্মাণসহ জামালপুর-ইসলামপুর-দেওয়ানগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ৫৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
‘স্ট্রেনদেনিং ওমেন এবিলিটি ফর প্রোডাক্টিভ নিউ অপারচ্যুনিটি’ (স্বপ্ন) প্রকল্পেরও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয় এই সভায়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
‘কন্সট্রাকশন অব কোরস অব মিলিটারি পুলিশ এ্যান্ড স্কুল এ্যাট সাভার ক্যান্টনমেন্ট প্রকল্প’ অনুমোদন দেয়া হয় বৈঠকে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার মানিকনগর এলাকায় মেঘনা নদীর বাম তীর রক্ষায় প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে বৈঠকে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
হ্যাচারিসহ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার স্থাপন প্রকল্প অনুমোদিত হয় একনেক সভায়। এর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি প্রসঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, হাঁসের ডিম ও মাংসের আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী। দেশে বর্তমানে ৫ কোটি হাঁস রয়েছে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এর সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫ কোটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৫
এমআইএস/আরআই