ঢাকা: গত অর্থবছরের তুলনায় ২০১৪-১৫ অর্থবছরের (জুলাই-এপ্রিল) দশ মাসে ৯০ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার প্রতিশ্রুতি কমিয়ে দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা।
এ সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে ২৫৫ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।
এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক জাহিদ বখত বাংলানিউজকে বলেন, পাইপ লাইনে অনেক কমিটমেন্ট পড়ে আছে। আমরা তা ব্যবহার করতে পারছি না। যে কারণে বৈদেশিক সাহায্য কমে গেছে।
তারা (উন্নয়ন সহযোগী) মনে করছেন, আমাদের যেটুকু প্রতিশ্রুত দিয়েছে তা আমরা ব্যবহার করতে পারছি। যে কারণে উন্নয়ন সহযোগীরা আমাদের নতুন কমিটমেন্ট দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি বেশি পেতে হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) বাস্তবায়নে অধিক মনযোগী হতে হবে। অনেক সময় আমরা ১০ মাসে ৫০ ভাগ এডিপি বাস্তবায়ন করি। বাকি ২ মাসে সবটুকু বাস্তবায়ন করার চেষ্ঠা করি। এতে করে বিদেশে সহায়তা অপচয় হয়। এ কারণেও উন্নয়ন সহযোগীরা প্রতিশ্রুতি কমিয়ে দিতে পারেন।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রতিশ্রুতির মধ্যে ঋণ ২১৮ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার এবং অনুদান ৩৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
তবে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রাপ্ত প্রতিশ্রুতির মধ্যে ঋণ ছিল ২৯৭
কোটি ৯৭ লাখ মার্কিন ডলার এবং অনুদান ৪৭ কোটি ৮৫ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার।
উন্নয়ন সহযোগীরা প্রতিশ্রুতি কমিয়ে দিলেও চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে এক কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার অধিক পরিমাণে অর্থছাড় করেছে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের ১০ মাসে অর্থছাড় করেছে ২৩৮ কোটি ৭ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১৯১ কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার এবং অনুদান ৪৬ কোটি ৯৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ২৩৬ কোটি ৯৫ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঋণ ছিল ১৭৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার এবং অনুদান ছিল ৬২ কোটি ৫৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার।
তবে ১০ মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের ১২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার কম ঋণ পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এ সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে ৯৬ কোটি ৪৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। যার মধ্যে আসল ৮০ কোটি ৩৭ লাখ এবং সুদ ১৬ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে সরকার উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ পরিশোধ করেছিল ১০৮ কোটি ৮৮ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আসল ছিল ৯১ কোটি ৩১ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার এবং সুদ ছিল ১৭ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫৮ কোটি ৫৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংক ছাড় করেছে ১১ কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
এছাড়া ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) ১১ কোটি ৮৫ লাখ ডলার ছাড় করেছে, চীন অর্থছাড় করেছে ১০ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার। আর জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ছাড় করেছে ৯৬ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৫
এমআইএস/জেডএস