ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্যাংক আল ফালাহ’র গুলশান শাখায় সন্দেহজনক লেনদেন

শাহেদ ইরশাদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৩ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৫
ব্যাংক আল ফালাহ’র গুলশান শাখায় সন্দেহজনক লেনদেন

ঢাকা: বিদেশি ব্যাংক আল ফালাহ লিমিটেডের গুলশান শাখায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও গ্রাহকের হিসাবে সন্দেহজনক (অস্বাভাবিক) লেনদেন ধরা পড়েছে।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) একটি দল দুটি প্রতিষ্ঠান ও তিনটি ব্যক্তি হিসাবে সন্দেহজনক এসব লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে পুলিশ ও ব্যাংক সূত্র।


 
এসব হিসাবধারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিবেচনা করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ইউনিট বিশেষ পুলিশ সুপার (অর্গানাইজড ক্রাইম) এর কাছে একটি আবেদন করেছে।
 
একই সঙ্গে পুলিশের কাছে লেনদেনের তথ্যাদি সম্বলিত একটি প্রতিবেদন ও তৎসংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
 
পুলিশের কাছে পাঠানো ওই আবেদন থেকে জানা গেছে, মেসার্স আলকা বাংলাদেশ (প্রাইভেট) লিমিটেডের চলতি হিসাবে সংঘ স্মারকে ২৫ লাখ টাকা আনার কথা থাকলেও আনা হয়েছে ১ কোটি ৬৭ লাখ  টাকা।
 
এসব টাকা আমদানি-রপ্তানি ও উৎপাদন কাজে বিনিয়োগ করার কথা। কিন্তু এ ধরনের কোনো কাজে বিনিয়োগ করা হয়নি।
 
একইভাবে মেসার্স এলায়েন্স টেক্স ট্রেড (প্রাইভেট) লিমিটেডের নামে পরিচালিত হিসাবে সংঘ স্মারকে ১০ লাখ টাকা আনার কথা থাকলেও আনা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা।
 
এসব টাকা পোশাক প্রস্তুতকরণ ও টেক্সাটাইল মেশিনারিজ ও কেমিক্যাল আমদানি, রপ্তানি, ক্রয়-বিক্রয় ও সরবরাহের কাজে ব্যয় করার ঘোষণা দিলেও একাজে বিনিয়োগ করা হয়নি।
 
মেসার্স আলকা বাংলাদেশ (প্রাইভেট) লিমিটেডের পরিচালক ইরফান গফুরের হিসাবে বেতন বাবদ পাকিস্তান থেকে নিয়মবর্হিভূতভাবে ৬৫ হাজার ৮১৭ মার্কিন ডলার আনা হয়েছে।
 
একইভাবে টেমাকস ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেডের কর্মকর্তা জয়া কুমার ঠাঙ্গারাজের হিসাবে ৩২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৫৯ মার্কিন ডলার এবং মারিয়া এনরিক ভেনচুরার হিসাবে ৩ হাজার ৩৪৪ মার্কিন ডলার আনা হয়েছে।
 
সম্পূর্ণ অর্থ নগদে উত্তোলন  এবং কোম্পানির হিসাব থেকে ওই হিসাবে অর্থ স্থানান্তর করা কোম্পানি আইন ও হিসাব বিজ্ঞানের ‘পৃথক সত্ত্বা’ নীতির পরিপন্থি হওয়া সত্বেও সন্দেহজনক লেনদেন হিসেবে কেন্দীয় ব্যাংকে রিপোর্ট করা হয়নি।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে এছাড়াও অর্থের উৎস সর্ম্পকে পর্যাপ্ত তথ্য ও দলিলাদি সংগ্রহ করা হয়নি মিসেস আনিস মেহবুব আহমেদ এর হিসাবের। একজন গৃহিনী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তার নামে হিসাব খোলা হলেও বার বার বিপুল অর্থের লেনদেন করা হয়েছে।
 
একইভাবে মিসেস রুবাইয়া জুবের হিসাবের প্রকৃত সুবিধাভোগী শনাক্ত করে ওই ব্যক্তির পরিচিতি তথ্য সংরক্ষণ করা হয়নি।
 
এভাবে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন যেমন লঙ্ঘন করা হয়েছে, তেমনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সার্কুলারের নির্দেশনা মানা হয়নি।

এমন ঘটনায় কেন ব্যাংক আলফালাহ’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে ৭ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, জুন ৩১, ২০১৫
এসই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।