ঢাকা: হয়রানিমুক্ত, সহজ ও দ্রুত নাগরিকসেবা নিশ্চিতে সব ধরনের ক্যাশ পেমেন্ট ডিজিটালাইজড করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্য সামনে রেখেই জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন জোট ‘বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স’র (Better Than Cash Alliance)’ সদস্য দেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এবং এটুআই (অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন) প্রকল্পের প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স-এ যোগদান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে এবং ক্যাশ পেমেন্টকে ইলেক্ট্রনিক পেমেন্টে রূপান্তরের ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ।
সারা দেশে স্থাপিত পাঁচশতাধিক ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে বৃহত্তর আর্থিক সেবাভুক্তি নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য জানিয়ে তিনি বলেন, এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে ইতোমধ্যে মাসে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষকে ৬০ ধরনের ইলেক্ট্রনিক সেবা দেওয়া হচ্ছে।
তাছাড়া প্রতিটি ডিজিটাল সেন্টারে একজন পুরুষ উদ্যোক্তার পাশাপাশি, একজন নারী উদ্যোক্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা জেন্ডার সংবেদনশীল সেবার পরিবেশও নিশ্চিত করেছি, বলেন তিনি।
ইউএনডিপি ও ইউএসআইডি’র কারিগরী সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প এটুআই প্রোগ্রাম সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন-২০২১ এজেন্ডাকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
এদিকে, সদস্য দেশ হিসেবে যুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ‘বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্সে’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রুথ গুডউইন গ্রোইন।
সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি এটুআইকে বলেন, ভিশন-টোয়েন্টিওয়ান অ্যাজেন্ডার মাধ্যম বড় একটি প্রত্যাশা উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। সে প্রত্যাশাকে সফল করে তুলতে এ অ্যালায়েন্সে বাংলাদেশের যোগদান। তাছাড়া মোবাইল পেমেন্টের ক্ষেত্রে এটি একটি বড় অগ্রগতি ও অর্জন।
তিনি বলেন, এই জোটে যোগদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং অভিজ্ঞতাকে বাংলাদেশে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম সম্প্রসারণে কাজে লাগাতে পারবে। বাংলাদেশে একটি উন্নত ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আমরা বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ শুরু করার জন্য অপেক্ষা করছি।
‘বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স’ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: www.betterthancash.org,
@BetterThan_Cash, subscribe for news and এছাড়াও ভিজিট করতে পারেন www.a2i.pmo.gov.bd এবং follow @a2i_bd.
বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সেবা গ্রহণের ফি ইলেক্ট্রনিক উপায়ে প্রদান করা সম্ভব হলে তা আর্থিক সেবাভুক্তির কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও ইলেক্ট্রনিক পেমেন্ট ব্যবস্থা সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দক্ষ ও স্বচ্ছ করে তুলবে।
‘বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্সে’র সঙ্গে পার্টানারশিপে বাংলাদেশের জনগণের আর্থিক সেবার অভিগোম্যতা বৃদ্ধি পাবে যা, বাংলাদেশের আর্থিক সেবাভুক্তির কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং অগ্রসরমান আর্থিক সেবাকে সাশ্রয়ী এবং স্বচ্ছ করে তুলতে ইলেক্ট্রনিক পেমেন্ট ব্যবস্থাকে একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
এটুআই সূত্র জানিয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সব ধরনের ভাতা এবং বিভিন্ন ফি প্রদান ব্যবস্থা ডিজিটাল করার জন্য বাংলাদেশ সরকার পরিকল্পনা করছে। এছাড়া এ কার্যক্রমের আওতায় সব ধরনের আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রেমিট্যান্স এবং ই-কমার্সের জন্য সব ধরনের পেমেন্ট ব্যবস্থা ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় সরকারি-বেসরকারি অংশদারীত্বের মাধ্যমে দেশের অধিক সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সেবার আওতায় নিয়ে আসার প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরির জন্য কাজ করছে সরকার।
জাতিসংঘে অবস্থিত ‘বেটার দ্যান ক্যাশ অ্যালায়েন্স’ বিভিন্ন সরকার, কোম্পানি এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের একটি পার্টনারশিপ সংস্থা। যা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য পেমেন্ট ব্যবস্থা ইলেক্ট্রনিক করা এবং জনগণকে দারিদ্র্যতা থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৯ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৫
এমএইচপি/জেডএস