ঢাকা: মানি লন্ডারিংয়ে সহায়তার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) সুইস শাখাকে ২ কোটি ৭৮ লাখ পাউন্ড স্টার্লিং বা ৩৩২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ অর্থ জরিমানা করেছে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা নগর কর্তৃপক্ষ।
এই প্রথম কোনো প্রতিষ্ঠানকে এত বেশি পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হলো সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়।
জরিমানা ঘোষণার সময় নিজের দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনা আইনকে আক্রমণ করেন জেনেভা নগরীর প্রধান প্রসিকিউটর অলিভিয়ার জর্নেট বলেন, আর্থিক ব্যবস্থায় অপরাধীদের অর্থের অনুপ্রবেশ সুইজারল্যান্ডের আইনের ত্রুটিকেই প্রকাশ করে।
অবশ্য জরিমানা করা হলেও, লেনদেনের বিষয়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের শর্তে এইচএসবিসির বিরুদ্ধে এ বিষয়ে চালানো তদন্ত স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে জেনেভা কর্তৃপক্ষ।
তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনায় এইচএসবিসিকে আর ছাড় না দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রসিকিউটর জর্নেট বলেন, এই ক্ষমা শুধু একবারের জন্যই প্রযোজ্য।
এইচএসবিসির সুইস শাখায় মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের চালানো তদন্ত প্রকাশ করে গার্ডিয়ান, বিবিসি সহ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। এর পড়েই টনক নড়ে দেশটির কর্তৃপক্ষের।
ওই প্রতিবেদনেই ফাঁস হয়, অস্ত্র ব্যবসা থেকে শুরু করে দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত বিভিন্ন দেশের কালো টাকা লেনদেনের বিষয়ে চোখ বুঁজে ছিলো এইচএসবিসির সুইস শাখা। পাশাপাশি ধনীদের কর ফাঁকি দেয়ার ব্যাপারেও সহযোগিতা করেছে ব্যাংকটি।
এর প্রেক্ষিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এইচএসবিসির জেনেভা কার্যালয়ে তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেন নগরীর প্রধান প্রসিকিউটর অলিভিয়ার জর্নেট।
তবে এইচবিসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর ব্যাপারে অনাগ্রহ প্রদর্শন করে সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল প্রসিকিউটর অফিস। জর্নেটের ওয়ারেন্ট জারির মাত্র একদিন আগে সুইজারল্যান্ডের ফেডারেল প্রসিকিউটর মাইকেল লোবার জানিয়েছিলেন, ব্যাংকটির অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়ে তদন্তের বাধ্যবাধকতা নেই তাদের। চুরি যাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এইচএসবিসির বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো উচিৎ নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে জরিমানার পর এক বিবৃতিতে এইচএসবিসি জানায়, তাদের বিরুদ্ধে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা ক্যান্টনের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের পরিচালিত তদন্ত আজ (বৃহস্পতিবার) আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
ব্যাংক বা এর কর্মকর্তাদের কেউ বর্তমানে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়, তদন্তে এ বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে বলেও এ সময় দাবি করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৫
আরআই/