ঢাকা: খেলাপি ঋণের ভারে জর্জরিত রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে বাজেটে। কিন্তু খেলাপি ঋণ কমানোর বড় কোনো উদ্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে দেখা যাচ্ছে না।
শনিবার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ানবাজারে টিসিবি অডিটোরিয়ামে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের ১২১তম এ পর্বে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি, বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেনস লিডারশিপের নির্বাহী পরিচালক নাসিম ফিরদৌস এবং ব্যাংকার জিয়াউল হাসান।
সংলাপে বক্তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরে প্রাপ্তি, বাজেটে খেলাপি ঋণে জর্জরিত ব্যাংকগুলোকে তহবিল দেওয়া ও কৃষকের চালের উপযুক্ত দাম না পাওয়ার বিষয়ে কথা বলেন।
ব্যাংকগুলোকে পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল দেওয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এ সহায়তার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া উচিত। তবে সরকারি ব্যাংকগুলো যেভাবে বিভিন্ন ভাতাসহ সুযোগ-সুবিধা দেয়, এমনটা প্রাইভেট ব্যাংকগুলো কখনই করে না বা করবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মতো গরিব দেশে ৫ হাজার কোটি টাকা অনেক বড় ব্যাপার। ব্যাংকগুলোকে নতুন করে পুঁজি দিয়ে একে টিকিয়ে রেখে সুযোগ দিচ্ছি। এটা তাদের টাকাতেই হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি কোনো ভাঙা কলসি নয়। আমাদের অর্থনীতি এখন অনেক প্রবৃদ্ধির পথে হাঁটছে।
ব্যাংকার জিয়াউল হাসান বলেন, এ সুযোগ দেওয়ার একটি ডেড লাইন দেওয়া দরকার। যার পরে আর সুযোগ দেওয়া হবে না।
সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফিরদৌস বলেন, এ সুযোগের একটা ডেড লাইন তো লাগবেই সঙ্গে খেলাপি ঋণ কমানোর জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে তাগাদা দিতে হবে। একই সঙ্গে ঋণখেলাপিদের বিচারও নিশ্চিত করতে হবে।
বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সরকার লুটে সাহায্য করছে। পাশাপাশি নিজ দলের লোকদের আরও সুবিধা দেওয়ার জন্য সরকার এ সহায়তার প্রস্তাব করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের যে সব চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, সেগুলোর ফলে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ কতটুকু লাভবান হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা আসলেই উপকৃত হয়েছি। কারণ এখন থেকে খোলা মনে আমরা কথা বলতে পারবো। প্রত্যেকটি চুক্তি খুবই পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎসহ অন্য সবখাতে সুবিধা পাবো।
এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক না জানানোর কারণে আমরা প্রতিক্রিয়া জানাতে পারিনি। আর সরকার কিছু পরিষ্কার করে না জানানোর কারণে বলা যাচ্ছে না বাংলাদেশ লাভবান হলো কি না।
তিনি আরও বলেন, তবে তিস্তার পানি চুক্তি হবে এটা আমাদের আশা ছিল। তিস্তা ছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা সংক্রান্ত যে চুক্তিগুলো হয়েছে তাতে ভারতই লাভবান হবে।
সরকার দেশের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে তা ভারতের পক্ষে চলে গিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রিপন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৫
এসইউজে/আইএ