ঢাকা: বিশ্বব্যাংকসহ বিদেশি দাতা সংস্থাগুলো যে টাকা দেয় তা সহায়তা নয়, সুদযুক্ত ঋণ বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, আমরা অতীতে যে ঋণ নিয়েছি তা পাই পাই করে শোধ করছি।
রোববার (১৪ জুন) দুপুরে জাতীয় সংসদের মন্ত্রী হোস্টেলের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাজেট পরবর্তী পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) আয়োজিত এ বাজেট পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুপ্র চেয়ারপার্সন আহমেদ স্বপন মাহমুদ। বক্তব্য রাখেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মীর শওকত আলী বাদশা, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজী, সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান প্রমুখ।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মানুষের একটা ধারণা আছে, বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি, জাইকাসহ যারা ঋণ দেয় তা খয়রাতি। কিন্তু মনে রাখা দরকার, এসব ঋণ মোটেও খয়রাতি নয়। তারা ঋণ দিয়ে সুদ নেয়। আমাদের সুদের টাকা পাই পাই করে শোধ করতে হয়।
তিনি বলেন, বাজেট নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু আমাদের হাত-পা বাধা। এই সমাজে অনেকেই আছেন ‘গাড়িতে ফ্লাগ উড়িয়ে টাকা পাচার করে, টিভি দখল করে বসে আছেন’। তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলেই সমস্যা হয়। তাই সরকারকে ধনী, দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি সব শ্রেণীর সঙ্গে আপোস করতে হয়।
‘বাজেট একটি আপোষের দলিল’ বলেও মন্তব্য করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী।
এম এ মান্নান বলেন, চুরি করার আমাদের ঐতিহ্যগত অভ্যাস হয়ে গেছে। আগেও ছিলো, থাকবে। কিন্তু আমাদের চুরি করার শাস্তি দিতে হবে। শাস্তি হয় না বলেই কমে না। তিনি বলেন, দুর্নীতি ও চুরি ঠেকাতে পারলে বাজেটের ‘খোলনলচে’ পাল্টে দেওয়া যায়।
বাজেট আমলারা কেন দেন- বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা যারা সংসদে আছি, তাদের কাজ ফাইলপত্র দেখাশোনা করা না। ফাইলপত্র নাড়াচাড়া করার জন্য জনগণ ভোট দিয়ে আমাদের সংসদে পাঠায়নি। আমরা সংসদে দেখবো, জনগণের জন্য কি করা যায়।
তাদের স্বার্থে বরাদ্দ হলো কি-না। বাজেট আমলারাই করবেন। আমরা দেখবো কোন ক্ষেত্রে কি বরাদ্দ আছে। আইনও আমলারাই করবেন। আমরা যারা সংসদ সদস্য আমাদের কাজ আইন বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া। তবে আমলাদের আইনি বাধা না থাকলে তারাও ভালো কাজ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, সমাজিক স্থিতিশীলতা না থাকলে কোনো বাজেটই বাস্তবায়ন করা যায় না। আমাদের সভ্যতা, ভব্যতা, ভদ্রতা যদি না থাকে তাহলে কখনোই বাজেট বাস্তবায়ন হবে না। একসঙ্গে যদি দেশের ৫০০ জায়গায় বোমা মারা হয়, তাহলে সেই দেশে কোনোদিনই বাজেট বাস্তবায়ন করা যায় না।
সুপ্র’র পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয় বলে জানানো হয়। এছাড়া মোবাইল ব্যবহারের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ কর বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বিস্মিত সুপ্র।
শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে দক্ষ জনশক্তি গড়তে স্বাস্থ্য খাতেও বরাদ্দ পুনরায় বিবেচনার দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৫
এসএম/এসইউ/এএসআর