ঢাকা: বাংলাদেশে শরিয়াভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম ইসলামী কার্ড (লা রিবা মাস্টারকার্ড) চালু করলো আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।
মাস্টারকার্ডের মধ্যে রয়েছে- ইসলামী ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ড।
সোমবার সকালে (১৫ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে এ কার্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রকৌশলী প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ফাস্ট ক্যাশ ডেবিট কার্ড, প্লাটিনাম, গোল্ড, ক্লাসিক ক্রেডিট কার্ড ও লা-রিবা হজ প্রি-পেইড- এ পাঁচ ধরনের মাস্টারকার্ডের উদ্বোধন করা হয়।
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে এই প্রথম শরিয়াভিত্তিক মাস্টারকার্ড চালু করলো এ ব্যাংক। রমজান সামনে রেখে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড প্রথম ইসলামী ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রি-পেইড মাস্টারকার্ড চালু করতে পেরে আনন্দিত।
তিনি বলেন, এ কার্ডে থাকবে ন্যূনতম মাসিক ফি। তবে প্রথম ৫০ দিন ফ্রি ও ছয় শতাধিক আউটলেটে বিশেষ ছাড়। বার্ষিক চার্জ অন্য ব্যাংকের চেয়ে অনেক কম। এ কার্ড দিয়ে ৪৮টি ব্যাংক থেকে কম খরচে টাকা তোলা যাবে। এছাড়া এ কার্ডে ই-অ্যালার্ট, এসএমএস, ফ্রি সাপ্লিমেন্টারি সুবিধা দেওয়া হবে। ইন্ট্রোডাক্টরি অফার হিসেবে এ ব্যাংকের গ্রাহকরা পাবেন ঢাকা ও চট্টগ্রামের সেরা রেস্টুরেন্টে ইফতারসহ ডিনারে একটির সঙ্গে একটি ফ্রি অফার।
এছাড়া রমজান মাসজুড়ে দেশের ৪০টি রেস্টুরেন্টে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত এবং শতাধিক লাইফস্টাইল শপে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান বদিউর রহমান বলেন, ‘লা রিবা লি রাব্বি অর্থাৎ, আল্লাহ পাকের নির্দেশনা অনুযায়ী সুদমুক্ত’ এ বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করাই এসব কার্ডের মূল উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাত্র ৫ শতাংশ লেনদেন মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে হয়। আমাদের চালু করা কার্ড সম্পূর্ণ সুদমুক্ত বলে খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পাবে।
চেয়ারম্যান বলেন, এ কার্ডের মাধ্যমে মাত্র ৫ মিনিটে প্লেনের টিকিট কেনা যাবে। পণ্য কেনা যাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১০টি দেশে ঝামেলা ও সুদমুক্ত সুবিধায়।
ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম শামীম বলেন, মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে লেনদেন ২০১০ সালে আরম্ভ হলেও সুদমুক্ত ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক এটিই প্রথম। আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে হাটি হাটি পা পা করে বর্তমানে সম্পূর্ণ সুদমুক্ত ব্যাংক হিসেবে গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশে ১২১টি ব্রাঞ্চের মাধ্যমে এ ব্যাংক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছে। দেশ-বিদেশে ই-কর্মাসের লেনদেনের ক্ষেত্রেও এ কার্ড ভূমিকা রাখবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রকৌশলী প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ধীরগতিতে হলেও বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। এর প্রমাণ এ ব্যাংকের মাস্টারকার্ড সেবা। অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সম্পূর্ণ শরিয়াভিত্তিক এসব কার্ড ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, দেশে লেনদের মাত্র ৫ শতাংশ অনলাইনভিত্তিক। যদিও দ্রুততার সঙ্গে তা বাড়বে। বিশেষ করে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উদ্যোগের ফলে এ অগ্রগতি।
অনুষ্ঠানে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান গীতাঙ্ক ডি দত্ত, ব্যাংকের পরিচালক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাস্টারকার্ড বৈশ্বিক পেমেন্ট সেবাদানকারী একটি প্রযুক্তি কোম্পানি। বর্তমানে ২০৬টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে এর কর্মকাণ্ড বিস্তৃত।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৫
আরইউ/এএ