ঢাকা: আমানতকারীর অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণীত হওয়ায় দি হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি ব্যাংক) তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) বিকেলে কমিশন এ মামলার চার্জশিটের অনুমোদন দেয়।
দুদকের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছে।
অর্থ আত্মসাতের এ অভিযোগটি তদন্ত করেছেন দুদকের উপ পরিচালক রেভা হালদার। তার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকটি থেকে জহির উদ্দিন নামে এক আমানতকারীর ৪ কোটি ৩১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। যা ব্যাংকটির তিন কর্মকর্তা যোগসাজশে হাতিয়ে নিয়েছেন।
যাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- এইচএসবিসি ব্যাংক কলাবাগান শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, সেলস অ্যাসোসিয়েট মোজাম্মেল হোসেন এবং মারুফ হোসেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকটির নিজস্ব তদন্তেও এদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণীত হওয়ায় বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, শিগগিরই দুদকের সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিটটি পেশ করবেন।
দুদক সূত্র জানায়, আমানতকারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি এইচএসবিসি ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। এতে আসামি করা হয় ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, গ্রাহক রমনা ইস্কাটন গার্ডেনের মেহেরুন্নেসা শম্পা এবং নিউ এলিফেন্ট রোডের শফিউল্লাহকে।
দুদকের তদন্তে ঘটনার সঙ্গে গ্রাহকের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাসের সুপারিশ করা হয়। নতুন আসামি হিসেবে ব্যাংকটির দুই কর্মকর্তা মোজাম্মেল ও মারুফের নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে কমিশন ব্যাংকটির তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই আদালতে চার্জশিটের অনুমোদন দেয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচএসবিসি ব্যাংকের আমানতকারী জহির উদ্দিন ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী তিনটি ব্যক্তিগত হিসাব খোলেন। পরে তার নামে আরও তিনটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। প্রত্যেকটি ব্যাংক হিসাব খোলার সময় তার বর্তমান ঠিকানা বড় মগবাজার ও স্থায়ী ঠিকানা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উল্লেখ করা হয়। জহির উদ্দিন হিসাব খোলার পর বড় অংকের ওয়েজ আর্নার বন্ড কেনেন। পরে তিনি বিদেশ চলে যান। এরই মধ্যে জহির উদ্দিনের অ্যাকাউন্ট ফরম, সিগনেচার কার্ড এবং চেক ইস্যু রেজিস্ট্রারসহ সব ধরনের রেকর্ডপত্র ব্যাংক থেকে গায়েব হয়ে যায়। এ সুযোগে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা পারস্পরিক যোগসাজশে বন্ড ভাঙিয়ে তার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেন। পরে আমানতকারী বন্ড ভাঙানোর আবেদন করলে জানতে পারেন, তার বন্ড আগেই ভাঙানো হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩১ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১২
এডিএ/এসএইচ