ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

তৃষ্ণার্তের কাছেই এলো নদী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৫
তৃষ্ণার্তের কাছেই এলো নদী ছবি: রাজীব- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: পুরান ঢাকার ইফতারির স্বাদ অনেকেই ভুলতে পারেন না। বাহারি সব পদের কথা মনে এলেই জিভে জল এসে যায়।

কিন্তু ভয়াবহ যানজট, সাধ আর সাধ্যের মধ্যে হিমালয় পর্বতের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাদের জন্য পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সব ইফতারি এখন পাওয়া যাচ্ছে রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে।
 
ব্যাপারটি যেন তৃষ্ণার্তের কাছে নদীর এগিয়ে যাওয়ার মতো। নেই কোনো যানজট। তিনশো ফুট রাস্তা সংলগ্ন মনোরম পরিবেশে অবস্থিত বসুন্ধরা কনভেনশন সিটি। রয়েছে দুই হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা। বাসায় নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি একসঙ্গে ৩শ’ জন বসে খাওয়ার সুবিধাও রয়েছে। রয়েছে দেড়শোজনের একসঙ্গে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা। কেনাকাটা থেকে বসে খাওয়া, মসজিদ সবই কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ভিতর।

নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আলাদা করে বলার মতো। সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরায় মনিটরিংয়ের পাশাপাশি রয়েছে দু’টি গেটওয়ে। যেখানে রয়েছে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরা।
 
কথা ছিলো, পাঁচ রমজান থেকে বসবে এ আয়োজন। কিন্তু খাদ্যপ্রেমীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রথম রোজা থেকেই শুরু হয়েছে এ আয়োজন। প্রথম দিনেই পসরা সাজিয়ে বসেছে পুরান ঢাকার বিখ্যাত নান্না বিরিয়ানি।  

‘নান্না’র স্বত্ত্বাধিকারী সাইফু্ল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, প্রথম দিনের বেচাকেনায় তারা সন্তুষ্ট।

দরদামের বিষয়ে বলেন, পুরান ঢাকায় যে দামে বিক্রি করা হয়, একই দামে পাওয়া যাবে এখানেও। প্রথম দিনে পাওয়া যাচ্ছে মোরগ পোলাও ১৬০ টাকা (হাফ প্লেট ১৩০ টাকা), কাচ্চি বিরিয়ানি ২০০ টাকা (হাফ ১০০ টাকা) তেহারি ২০০ টাকা (হাফ ১৫০ টাকা) ফিরনি ৪০০ টাকা, বোরহানি ১০০ টাকা।
 
প্রথম দিনই জমে উঠেছে ‘পুরান ঢাকার ইফতার বাজার’ নামে এ ব্যতিক্রমী আয়োজন। স্বচ্ছন্দে ইফতারি নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাসায়। অনেকটা বিনোদনের মতো।
 
ক্রেতারাও সন্তুষ্ট চমৎকার পরিবেশে কেনাকাটা করতে পেরে। সুমন মেহেদী নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বললেন, ছোটছেলেকে সঙ্গে করে এসেছি। অন্য বাজার হলে তাকে সঙ্গে নেওয়ার কথা ভাবতেই পারতাম না। এখানে একসঙ্গে ইফতার কেনা ও ছেলেকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, দু’টোই সেরে নিলাম।

আর পুরান ঢাকায় ইফতার কিনতে যাওয়ার কথাতো কল্পনাও করতে পারি না। পুরান ঢাকায় মামার বাসা রয়েছে, যানজটের কারণে সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠে না বলেও জানালেন সুমন মেহেদী।
 
পুরান ঢাকাকে কাছে আনার এ প্রয়াসে যুক্ত হয়েছে অনেক নামি-দামি ব্র্যান্ডও। ৪৮ আইটেমের পসরা সাজিয়েছে রঙধনু রসুই। রয়েছে নানুস ফুড ফ্যাক্টরি, মাস্টারশেফ সুবরাত আলী, ইব্রাহিম ক্যাটারিং সার্ভিস। আরও থাকছে ইন্ডিয়ান কিচেন, মুনসুন ক্যাটারিং সার্ভিসসহ বেশকয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

অনলাইনভিত্তিক খাবার সরবরাহকারী নানুস ফুড ফ্যাক্টরি মজাদার সব খাবার আইটেম নিয়ে হাজির হয়েছে বসুন্ধরার এ আয়োজনে। পাওয়া যাচ্ছে সুজির হালুয়া, পাটিসাপটা, কাঠি কাবাব, চিকেন শাসলিক, সবজি রোল, আলু চপ, বেগুনি, পেয়াজু, ছোলা, বিফ ভুনা, ভুনা খিচুড়ি।  
 
রঙধনু রসুইয়ের স্টলে পাওয়া যাচ্ছে ৪৮ আইটেমের ইফতারি। ইফতারের জন্য রয়েছে দু’টি বিশেষ প্যাকেজ। ১১ আইটেমের প্রথম প্যাকেজের দাম রাখা হচ্ছে ২২২ টাকা। আর ১৩ আইটেমের দ্বিতীয় প্যাকেজের দাম রাখা হয়েছে ৪৪৪ টাকা। এছাড়াও রয়েছে গরম গরম সব মজাদার খাবার।

রঙধনু বসুইয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক বলেন, আমাদের নিয়মিত যে দাম রয়েছে, এখানেও একই দামে পাওয়া যাবে সবকিছু। প্রথম দিন ক্রেতা সমাগমে আমরা সন্তুষ্ট।
 
প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ আয়োজন থাকছে পুরো রমজান জুড়ে। এখানে পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে আসা বাবুর্চিদের দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি ইফতার পাওয়া যাবে। রয়েছে পার্সেলের সু-ব্যবস্থাও।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৫/আপডেট: ১৮৩২ ঘণ্টা
এসআই/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।