ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঝালকাঠির ৩ নদীতে ভরা মৌসুমেও মিলছে না ইলিশ

রহিম রেজা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৫
ঝালকাঠির ৩ নদীতে ভরা মৌসুমেও মিলছে না ইলিশ ছবি: ফাইল ফটো

ঝালকাঠি: ঝালকাঠি জেলার তিন নদীতে ভরা মৌসুমেও ইলিশের দেখা নেই। জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।



মাছ বাজারগুলোতে ইলিশের আমদানি না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন মহাজন ও আড়তদাররাও।

জানা গেছে, এই জেলার অধিকাংশ জেলেরাই সুগন্ধা, বিষখালী ও হালতা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময় শেষে জেলেরা দলে দলে নদীতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জাল ফেলেও ইলিশের দেখা পাচ্ছে না।

বাবুল, বাদশা, জমিরসহ একাধিক জেলে জানান, নদীতে ইলিশ মাছ ধরা না পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। দিন-রাত নদীতে জাল ফেলে যে ক’টি মাছ পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকার তেলের খরচও উঠছে না।

অন্যদিকে, জেলেদের দাদন দিয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। মাছ ধরা না পড়ায় জেলেরা মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। জেলেরা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও  থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল কিনে নদীতে নেমেছেন। কিন্তু সারাদিন জাল ফেলেও মাছ না পাওয়ায় তারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। হতাশায় এখন অনেক জেলেই নদীতে যাচ্ছেন না, নদীর তীরে নৌকায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন।

অন্য কোনো আয়ের উৎস না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন উপজেলার জেলেরা। বেশিরভাগ জেলে আবার ব্যাংক ও এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন না। বর্তমানে জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এদিকে নদীতে যে যৎ সামান্য ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে তার দাম সাধারণ ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুগন্ধা, বিষখালি ও হালতা নদীর গভীরতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়ায় ইলিশের প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নদীতে ভরা মৌসুমেও ইলিশ মাছের আকাল দেখা দিয়েছে।

নদীর যে সব অংশে জাটকা ইলিশ বড় হয় সে রকম ৮/১০টি স্পট দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ইলিশ না পেয়ে নদী থেকে প্রতিদিনই জেলেদের প্রায় শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে। ইলিশের আকালে উপকূলীয় এলাকার শতাধিক জেলে পল্লীতে চরম দুর্দিন নেমে এসেছে।

ইলিশ আহরণের মৌসুমে ইলিশ না পাওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটছে জেলে, আড়তদার, দাদন ব্যবসায়ী ও মৎ্স্যজীবী শ্রমিকদের। দাদন নেওয়া জেলেরা দাদন শোধ ও জীবন ধারণের চিন্তায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা যায়,  মৌসুমের দু’মাস অতিবাহিত হলেও নদীতে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলেসহ সবার মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুক্তা রাণী সরকার জানান, এ উপজেলায় ১ হাজার ৫৪ জন নিবন্ধিত ইলিশ জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে ২১৮ জন ভাতা পাচ্ছেন। তিনি জানান, নদীর গভীরতা কমে যাওয়া এবং প্রজনন শেষে ইলিশ ও জাটকা সাগরে চলে যাওয়ায় ইলিশ কম ধরা পড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৫
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।