ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঈদে দাম বাড়েনি পাইকারি কাপড়ের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৫
ঈদে দাম বাড়েনি পাইকারি কাপড়ের ছবি : সোহাগ/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দাম বাড়েনি কাপড়ের পাইকারি বাজারে। আসন্ন ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে দেশের বৃহৎ কাপড়ের পাইকারি বাজার ইসলামপুর ও সদরঘাট এলাকায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা গত বছরের দামেই কাপড় কিনতে পারছেন।


 
শুক্রবার (২৬ জুন) রাজধানীর এই দুই এলাকার একাধিক পাইকারি কাপড় বিক্রেতা ও ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। বিক্রেতাদের দাবি, সুতার দাম কম থাকায় এবার কাপড়ের দাম বাড়ছে না।

ইসলামপুর এলাকায় বাংলানিউজের কথা হয় পাইকারি বিক্রেতা ‘হোম স্টাইল এক্সক্লুসিভ’র স্বত্ত্বাধিকারী জাবেদ আহম্মেদের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, গত বছরের চেয়ে কোনো কাপড়ের দাম বাড়েনি, বরং দু’একটি কাপড়ের দাম কমেছে। যেমন গত বছর লুঙ্গির সর্বনিম্ন দাম ছিল ১৬০ টাকা। এ বছরে লুঙ্গির সর্বনিম্ন দাম দেড়শ’ টাকা।
 
সদরঘাট এলাকায় ইস্ট বেঙ্গল ভবনের সুলতানা নিউ মার্কেটের লাকী গার্মেন্টস’র স্বত্ত্বাধিকারী মো. এনামুল মিয়া বলেন, গতবারের মতোই শার্ট, প্যান্টের দাম আছে। তবে একেবারে নতুন মডেলের কিছু পোশাকের দাম ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
 
হক মার্কেটে মার্কেন্টাইল ক্লথের বিক্রেতা কাল্লু মিয়া জানান, একটু সতর্ক হয়ে ক্রেতারা পোশাক কিনলে আগের দামেই কিনতে পারবেন। অনেকেই (পাইকারি বিক্রেতা) একটু বেশি দাম চাইবেন, কিন্তু ক্রেতারা যাচাই-বাছাই করে কিনলে গত বছরের দামেই পোশাক কিনতে পারবেন। কারণ, কাপড়ের মূল উপকরণ সুতার দাম এবারে বাড়েনি।
 
বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পাইকারি ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেও একই তথ্য পাওয়া গেলো। ইসলামপুর বাজার থেকে পাইকারি দরে বেডশিট, পর্দাসহ একাধিক কাপড় কিনে বাড়ি ফিরছিলেন কুষ্টিয়ার এনএস রোড এলাকার ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম।
 
তিনি বাংলানিউজকে জানান, গত বছর ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে যে দামে কাপড় কিনেছিলেন, এ বছরেও একই দামে কিনেছেন। সাধারণত দেখা যায় ঈদ উপলক্ষে হঠাৎ করে কাপড়ের দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এ বছরে এখন পর্যন্ত এরকম সমস্যায় পড়তে হয়নি।
 
চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজার থেকে পাইকারি দরে কাপড় কিনতে এসেছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী ওমর ফারুক। তিনি শিশুসহ সব বয়সী মানুষের পোশাক কিনে চট্টগ্রামে পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিক্রি করেন।
 
ওমর ফারুক বলেন, পাইকারি বাজারে দাম না বাড়ার কারণে খুচরা বাজারের ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে পোশাক কিনতে পারছেন। তবে এক্ষেত্রে খুচরা ব্যবসায়ীদের সৎ থাকতে হবে। খুচরা ব্যবসায়ীরা সবসময় বিগত বছরের চেয়ে বর্তমানে বেশি দাম রাখার চেষ্টা করেন।
 
এদিকে খুচরা ক্রেতারাও জানালেন এখন পর্যন্ত কাপড়ের দাম বাড়েনি। মায়াকাটারা গার্মেন্টস এক্সসোরিজ মার্কেটে থ্রি পিস ও শাড়ি কিনছিলেন ওসমান গণি ও তার স্ত্রী।

ওসমান গণি জানান, ভেবেছিলেন এবার একটু দাম বেশি হবে। কিন্তু বেশ কম দামেই দুটি থ্রি পিস ও তিনটি শাড়ি কিনতে পেরেছেন। রমজানজুড়েই যেন এরকম দাম থাকে- দাবি জানালেন এ ক্রেতা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইসলামপুর ও সদরঘাট এলাকায় কাপড়ের পাইকারি বাজারগুলো এখনো ক্রেতাদের সমাগমে জমে ওঠেনি। ক্রেতাদের অপেক্ষায় বিক্রেতারা বিভিন্ন কাপড় সাজিয়ে বসে আছেন।
 
বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানভেদে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকায় লুঙ্গি, সুতি শাড়ি ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা, জর্জেটের শাড়ি ৭০০ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা, নেট শাড়ি এক হাজার ২০০ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা, সিল্কের শাড়ি ৫০০ থেকে দেড় হাজার টাকা, টাঙ্গাইলের শাড়ি ৩০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
 
১০০ থেকে আড়াই’শ টাকায় বেডশিট (গজ), ৪৩০ থেকে দেড় হাজার টাকায় থ্রি পিস, জিন্স প্যান্ট ১৮০ থেকে সাড়ে পাঁচশ টাকা (ছোট), সাড়ে তিনশ থেকে ৮৫০ (বড়) টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঞ্জাবি ২৫০ থেকে এক হাজার, টি-শার্ট ২৫০ থেকে ৮০০ টাকা, শার্ট ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় কিনতে পারছেন খুচরা ক্রেতারা।
 
সব বয়সীদের কাপড় পাইকারি দরে কেনা যায় এই দুই এলাকা থেকে। তবে, এসব দাম ছাড়া আরও বিভিন্ন দামের কাপড় রয়েছে এখানে। মূলত মান ও ডিজাইন ভেদে কাপড়ের দাম নির্ধারণ করা হয়।
 
কাপড় ব্যবসায়ীরা জানান, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া, রংপুর, খুলনা, নাটোরসহ দেশের প্রায় সব অঞ্চল থেকেই ক্রেতারা এখানে পাইকারি দরে কাপড় কিনতে আসেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৫
একে/এইচএ

** ভিড় বাড়ছে না রাজধানীর পাইকারি কাপড় বাজারে
** ‘কারচুপি’র পাঞ্জাবিতে আগ্রহী তরুণরা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Veet