ঢাকা: গ্রামীণফোন চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ১৬ লাখ নতুন গ্রাহক সংগ্রহ করেছে। এর ফলে মোট গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি ৩১ লাখ।
এছাড়া ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা হয়েছে এক কোটি ৩৪ লাখ ও সেইসঙ্গে এর ব্যবহারের পরিমাণও উৎসাহব্যঞ্জকভাবে বেড়েছে।
গ্রামীণফোনের ২০১৫ সালের প্রথম ছয় মাসের প্রতিবেদন প্রকাশ করে মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গ্রামীণফোন ছয় ছয় মাসে রাজস্ব আয় করেছে পাঁচ হাজার ১শ ৫০ কোটি টাকা, যা ২০১৪ সালের একই সময়ের তুলনায় শতকরা শূন্য দশমিক সাত ভাগ বেশি।
গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রদত্ত সেবা থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব বেড়েছে শূন্য দশমিক দুই ভাগ ও ডিভাইস খাতে রাজস্ব হ্রাস দুই দশমিক নয় শতাংশ ও অন্যান্য খাত (প্রধানত অবকাঠামো শেয়ারিং ও মোবাইল আর্থিক সেবা) থেকে আয় বেড়েছে ১৩ দশমিক আট ভাগ।
প্রধানত ডাটা ও মূল্য সংযোজিত সেবার আয় বাড়ার কারণে সেবা থেকে অর্জিত রাজস্বের প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
গ্রামীণফোনের সিইও রাজীব শেঠি বলেন, তীব্র প্রতিযোগিতা ও ২০১৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আমরা গত বছরের তুলনায় সামান্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। তবে আমরা প্রথম প্রান্তিকের শেষদিক থেকেই ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি দেখছি, যা সম্ভব হয়েছে নেটওয়ার্কের শ্রেষ্ঠত্ব ও পণ্যের ব্যবহার্যতার বিষয়ে আমাদের সরলীকরণ উদ্যোগের কারণে।
তিনি আরও বলেন, আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, গ্রামীণফোনের বোর্ড অব ডিরেক্টরস পরিশোধিত মূলধনের ৮০ শতাংশ অন্তবর্তী লভ্যাংশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এটি শেয়ারহোল্ডারদের প্রতি গ্রামীণফোনের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ।
আয়কর দেওয়ার পর ২০১৪ সালের প্রথমার্ধের শতকরা ২০ দশমিক চার ভাগ মার্জিনসহ এক হাজার ৬০ কোটি টাকা মুনাফার তুলনায় ২০১৫ সালের একই সময়ে নিট মুনাফা হয়েছে শতকরা ২০ দধমিক চার ভাগ মার্জিনসহ এক হাজার ৫০ কোটি টাকা।
নিয়ন্ত্রিত পরিচলন ব্যয়ের ফলে ইবিআইটিডিএ প্রবৃদ্ধি হয়েছে এক দশমিক এক শতাংশ, অথচ রাজস্বের প্রবৃদ্ধি বেশি হয়েছে শূন্য দশমিক সাত শতাংশ। ইবিআইটিডিএ মার্জিন শূন্য দশমিক দুই শতাংশ বেড়ে ৫৪ শতাংশ হয়েছে। উচ্চতর অবচয় ও অ্যামরটাইজেশনের কারণে গত বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক নয় শতাংশ হ্রাস পেয়ে শেয়ার প্রতি আয় দাঁড়িয়েছে সাত দশমিক ৭৬ টাকা। তবে নিম্ন অর্থায়ন ব্যয়ের কারণে তা আর কমেনি।
গ্রামীণফোনের সিএফও দিলীপ পাল বলেন, বছরের প্রথমার্ধে আমরা দুর্বল ফলাফলের মধ্যেও লাভজনক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি তা আগামী দিনগুলোতে ব্যবসায় আরও প্রবৃদ্ধি এনে দেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ বছরের প্রথমার্ধে থ্রি-জি বিস্তার, টু-জি বিস্তার ও ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে গ্রামীণফোন এক হাজার ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
এদিকে, দেশের বৃহত্তম করদাতা গ্রামীণফোন একই সময়ে কর, ভ্যাট, শুল্ক ও লাইসেন্স ফি আকারে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দুই হাজার ৫শ’ কোটি টাকা জমা দিয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের মোট রাজস্ব আয়ের ৪৮ দশমিক ছয় শতাংশ।
গ্রামীণফোনের বোর্ড অব ডিরেক্টরস ২০১৫ সালের ৩০ জুন অর্ধবছরের অন্তবর্তী নিট মুনাফা ও ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত সংরক্ষিত আয়ের উপর ভিত্তি করে পরিশোধিত মূলধনের শতকরা ৮০ ভাগ (প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যের শেয়ার এর বিপরীতে আট টাকা) অন্তবর্তী নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
এ লভ্যাংশ ২০১৫ সালের ৩০ জুন এ সমাপ্ত অর্ধবছরের কর পরবর্তী নিট মুনাফার শতকরা ১০৩ ভাগ। লভ্যাংশ রেকর্ড ডেট ২৯ জুলাই ২০১৫-এ যারা শেয়ারহোল্ডার থাকবেন তাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া সময়ানুযায়ী বিতরণ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৫
এমআইএইচ/এসএস