ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঈদের কেনাকাটায় বিকাশের ব্যবহার বাড়ছে

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৩ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫
ঈদের কেনাকাটায় বিকাশের ব্যবহার বাড়ছে সংগৃহীত

ঢাকা: বাপ্পী-মেহজাবিন দম্পতি দু’জনই চাকরিজীবী। রোজার শুরু থেকেই অফিস থেকে ফেরার পথে ঢাকার বিভিন্ন মার্কেট-শোরুম-আউটলেটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

পছন্দ হলে এটা-সেটা নিচ্ছেন, নয়তো তালিকা করছেন ঈদের সার্বিক কেনাকাটায় কী কী আসতে পারে। হুট করে বেরিয়ে যাচ্ছেন দুই-একদিন পরপর।

এই তো গত রোববার (২৮ জুন) রাজধানীর লালমাটিয়া আড়ংয়ে গিয়েছিলেন। বাচ্চাদের জন্য কিছু কেনাকাটা করলেন। তবে নগদ অর্থে নয়, ‘বিকাশ’ দিয়ে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বাংলানিউজকে বলেন, হুট করে কিনতে এলাম। কোনো কিছু পছন্দ হলে তো আর থেমে থাকতে পারি না। সুযোগ যেহেতু তৈরি হয়েছে বিকাশ দিয়ে পণ্য কেনার, আর বিকাশ অ্যাকাউন্ট যেহেতু আমাদের রয়েছে তাই কিনে ফেললাম আর কি।

সামনে ঈদ। তাই মার্কেট-শোরুমগুলোতে কেনাকাটায় ব্যস্ততাও এসেছে ইতোমধ্যে। ঈদে কেনাকাটার বিশাল এ কর্মযজ্ঞ এখন হতে পারে মোবাইল ব্যাংকিংয়েই। নগদ অর্থ অথবা ডেবিট-ক্রেডিট ছাড়াও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে বিভিন্ন পণ্য-দ্রব্য কেনা এখন অধিকতর সহজ-সাবলিল হিসেবেই দেখছেন ক্রেতারা।

এমনই এক ক্রেতা শফিকুর রহমান ফারাবি ও তার বন্ধু সজিবুর। রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ মার্কেট বসুন্ধরা সিটির ‘রঙ’ থেকে ফারাবি কিনলেন একটি টি-শার্ট। দাম সাড়ে ১২শ’। টি-শার্ট হাতে পেতে তার পকেটে থাকা সাড়ে ৭শ’র সঙ্গে যুক্ত করতে হয় আরও ৫শ’ টাকা।

এই ৫শ’ টাকা নিজের বিকাশের মাধ্যমে দিয়ে দেন তার বন্ধু সজিবুর। সজিবুর বলেন, রোজা ও ঈদকে কেন্দ্র করে বিকাশ দিয়েছে ক্যাশ ব্যাক অফার। এর মাধ্যমে আমি যে কোনো পণ্য কম দামে কিনছি, অর্থাৎ মূল্য আমি সঠিকটাই দিচ্ছি তবে পেমেন্টের পর আমার অ্যাকাউন্টে বার্তি টাকা এসে জমা হচ্ছে (ক্যাশ ব্যাক অফারে)।

‘এমন একটা অফারে বিকাশ অ্যাকাউন্টে স্বভাবতই আগের চেয়ে বেশি টাকা রাখছি। সঙ্গে যে কোনো প্রয়োজনে কোনো কিছু কিনে ফেলতেও পারছি। পাশাপাশি লাভও হচ্ছে ক্যাশ ব্যাকে’- বলেন তিনি।

বিকাশ ব্যবহারে পণ্যের ক্রেতা বাপ্পী বলেন, অনেক দিন ধরেই আমার একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এটি সেই ২০১১ থেকে আস্থা অর্জন করেছে। দেশের সবচেয়ে বেশি ব্যবহূত মোবাইল ব্যাংকিং সেবার নামও যে বিকাশ। প্রতিবারের মতো তারা এবারও ঈদে দেশজুড়ে ৩৮১টি আউটলেটে কেনাকাটার মূল্য পরিশোধের সুযোগ রেখেছে। অবশ্য এবারই এটি সর্বোচ্চ সংখ্যক। সেই সঙ্গে পাচ্ছি সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশ ব্যাক।
 
তিনি জানান, আগে থেকেই তিনি মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ দিয়ে পণ্য-দ্রব্য কেনাকাটায় অভ্যস্ত। এটি খুব সহজ ও সুবিধাজনক পদ্ধতি। বিকাশ দিয়ে আমার উপকার শুধু কেনাকাটায়ই নয়, মোবাইলের ব্যালেন্স রিচার্জেও (বাই এয়ারটাইম) হচ্ছে। এছাড়া এবারও গ্রামের বাড়িতে টাকা পাঠাবো বিকাশ দিয়ে।
 
তার স্ত্রী মেহজাবিন বলেন, আমরা দু’জনই চাকরিজীবী। এবার মোটামোটি বলতে পারেন বিকাশ অ্যাকাউন্টেই ঈদ বাজার সারবো বলে ঠিক করেছি। এতে ব্যাগে টাকা থাকলো কি থাকলো না, তা নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। সঙ্গে আমি নিরাপদও বোধ করি।
 
রাজধানীর লালমাটিয়ার আড়ংয়ের সেলস অ্যাসোসিয়েট মো. নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, তারা তৃতীয় তলায় বিকাশ পেমেন্ট বক্স খুলেছেন। যে কোনো তলা থেকে পণ্য কিনে তৃতীয় তলায় এসে পেমেন্ট করলেই হবে। সঙ্গে আড়ংয়ে কিনলে ১০ শতাংশ ক্যাশ ব্যাকও পাচ্ছেন গ্রাহকরা।

সাড়া কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাড়া অত্যন্ত ভালো। মানুষের আগ্রহ রয়েছে। দিন দিন যেমন তাদের গ্রাহক বাড়ছে সেই সঙ্গে বাড়ছে বিকাশের অন্যান্য ব্যবহারও।

আড়ংয়ের বিক্রয়কর্মী অমিত জানান, প্রতিদিন নগদ অর্থে বা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডে তাদের বিক্রি যেমন হচ্ছে, তেমনিভাবে পাল্লা দিয়ে বিকাশেও কেনাকাটার পরিমাণ কম নয়।

রাজধানীর সাইন্সল্যাব ইয়েলোর স্যালসম্যান মো. অর্ণব বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে অনেক ক্রেতাই বিকাশ দিয়ে তাদের পেমেন্ট করছেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের জন্য আরও সুবিধারও বটে। সময় বেশি লাগছে না এবং অনেক ইজি হচ্ছে বিষয়গুলো।

অনলাইনে বাসের টিকেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি আবির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ কিংবা ঈদের আগের টিকেট- গ্রাহক যাই নিতে চান না কেন তা সম্ভব। অনলাইনে কেনাকাটায় বিকাশ দিয়েই কেনা অনেক সহজ ও সুবিধার বলে জানান তিনি।

বিকাশ ব্যবহার করে বর্তমানে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেটের ৩৮১টি দোকানে কেনাকাটা করা যাচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক সুবিধাও। তবে এ জন্য গ্রাহককে অতিরিক্ত কোনো চার্জ গুনতে হবে না।

এ প্রসঙ্গে বিকাশ’র হেড অব মার্কেটিং আসিফ আহমেদ বলেন, বিকাশ একটি পূর্ণাঙ্গ মোবাইল অর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান। টাকা আদান-প্রদান ছাড়াও বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিকাশ আস্থা ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এর মধ্যে কেনাকাটা অন্যতম। বর্তমানে বিকাশ দিয়ে ৫ হাজারেরও বেশি আউটলেটে কেনাকাটা করা যাচ্ছে। আমাদের সেবাগুলোকে আরও গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা নানামাত্রিক সুবিধা দিয়ে থাকি।

হাসপাতালের চিকিৎসা বিল, প্লেনের টিকেট কেনাসহ বিকাশ দিয়ে এখন মোবাইল ফোনের ব্যালেন্স রিচার্জ, জমানো টাকার ওপর ইনটারেস্ট পাওয়া, কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। একজন মানুষের দৈনন্দিন অর্থনৈতিক ইকো-সিস্টেমে বিকাশ রয়েছে প্রয়োজনে পাশে।

কেনাকাটায় ফ্যাশন হাউসের মধ্যে আড়ং, নগরদোলা, ইয়েলো, ক্যাটস আই, অ্যাড্রয়েট ইন্টারন্যাশনাল, কে ক্র্যাফট, আম্বার লাইফস্টাইল, ঐতিহ্য, ইস্টওয়ে, মনসুন রেইন, জেনিস, কেজেড ইন্টারন্যাশনাল, রঙ, গ্যাজেট গ্যাং সেভেন, সেলিব্রেশনস, রিলিউস, জেমস গ্যালারি0, মায়াসির, ঊষা সিল্ক, ঝুমা ফ্যাশন হাউজ, লোটো, এবং ওটু’তে বিকাশ ব্যবহার হচ্ছে।

এছাড়া রেস্টুরেন্টের মধ্যে রয়েছে দি মুঘল কিচেন, আলাউদ্দীন সুইট মিট, কুক ক্যাফে অ্যান্ড জুস বার, সাওয়াদি, ফুড প্যালেস, ফখরুদ্দীন রেস্টুরেন্ট, মামা হালিম, হান্ডি রেস্টুরেন্ট, বার্বিকিউ ফ্লেমস, দাওয়াত, দি ধান সিঁড়ি রেস্তোরাঁ, অলিম্পিয়া প্যালেস, কান্ট্রি লাউঞ্জ, কাশুন্দি, বাইতি গ্রিল রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে ইতালিয়ানো, দি কারী হাউজ লিমিটেড, হোটেল রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল, দারুল কাবাব।

অনলাইন শপের মধ্যে আগোরা, এখানেই.কম, ইফিরি.কম, আমার দেশ শপ.কম, প্রিয় শপ.কম, সহজ.কম, রঙবিডি.কম, বাসবিডি.কম, বিপণী.কম অন্যতম।

বিস্তারিত জানতে ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/bkashlimited?fref=ts

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৬ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫
আইএ/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।