ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভাড়াতেই শেষ ঈদ বোনাস

ঊর্মি মাহবুব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৫
ভাড়াতেই শেষ ঈদ বোনাস (ফাইল ফটো)

ঢাকা: প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরেন যারা তাদের মধ্যে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের সংখ্যা প্রচুর। কিন্তু ঈদে গাড়ি ভাড়াসহ সবকিছুর দাম যে হারে বেড়ে যায় তাতে স্বল্প বোনাসে তাদের ঈদানন্দ মলিন হয়ে যায়।



একেতো ঈদের মাত্র দু’দিন আগে বোনাস পান, তার ওপর যে বোনাস দেওয়া হয় তা গ্রামের বাড়ি যাওয়া-আসার ভাড়াতেই শেষ হয়ে যায় বলে জানান শ্রমিকরা।

রাজধানীর আর এম ফ্যাশনের সুইন অপারেটর রুনা। বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায়। তিনি জানালেন, মাত্র ২ হাজার ১০০ টাকা বোনাস পাবেন। ঈদের আগ মুহূর্তে ময়মনসিংহের গাড়ি ভাড়া ৫০০ টাকা, ময়মনসিংহ শহর থেকে ফুলপুর যেতে খরচ ১০০ টাকা। সেখান থেকে গ্রামের বাড়ি যেতে ভাড়া ৩০০ টাকা। ভাড়াতেই শেষ ৯০০ টাকা। বেতনের তিন ভাগের এক ভাগও বোনাস পান না তিনি।

রুনা আরও বলেন, আপা বোনাস দিয়া কী হয়? ২৫ রোজায় বোনাস দেয়। একটা সেলোয়াড় কামিজ কিনে বানাতে তো দিতে হয়। কিন্তু ২৫ রোজায় বোনাস পেয়ে কিনবো কখন। আর কিনেওতো তা আর বানানো যায় না। কারণ ২৫ রোজায় তো দর্জিরা অর্ডার নেয় না। যাতায়াত খরচেই চইলা যায় বেশির ভাগ টাকা। কোনো রকম ধারদেনা কইরা মায়েরে নিয়া ঈদ করি।

অন্যদিকে যারা টার্গেটভিত্তিক কাজ করছেন তাদের অবস্থা আরও করুণ। কারণ টার্গেটভিত্তিক কাজ করা শ্রমিকদের কোনো বোনাসই দেওয়া হয় না। এমনটাই জানালেন আশুলিয়ার নরসিংহপুরের নিট এশিয়া গার্মেন্টের শ্রমিক আশিক।

দিনাজপুরের ছেলে আশিক। মা আর ছোট বোন থাকেন গ্রামের বাড়িতে। ঈদের পোশাকের জন্য বড় ভাইয়ের পথ চেয়ে আছে ছোট বোন। কিন্তু বোন জানেও না তার ভাই কোনো ঈদ বোনাস পাননি। সারা বছর ধরে জমিয়ে রাখা টাকা দিয়ে ঈদে বোন আর মায়ের জন্য কিছু কিনবেন তিনি।

আশিক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যারা টার্গেটভিত্তিক কাজ করি, তাদের কোনো বোনাস নাই। এই মানুষগুলা কিভাবে কাজ করে, তা নিয়া কেউ ভাবে না।

গার্মেন্ট শ্রমিকদের কী হারে বোনাস দিতে হবে তার কোনো নীতিমালা না থাকায় মালিকরা তাদের ইচ্ছা মতো বোনাস দেন বলে জানিয়েছেন টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, শ্রমিকদের বেতনের কোন হারে বোনাস দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। গার্মেন্ট মালিকরা নিজ নিজ নিয়মে বোনাস দেন। কেউ মূল বেতনের তিন ভাগের এক ভাগ, কেউবা আবার অর্ধেক হারে বোনাস দেন। খুব অল্প সংখ্যক কারখানাই মূল বেতনের সমান হারে বোনাস দেয় শ্রমিকদের। আর বেশিরভাগ কারখানাই ২৫-২৬ রোজায় বোনাস দেয়। এই সময়ে তারা কখন কেনাকাটা করবেন আর কখনই বা বাড়ি যাবেন। তাই যে বোনাস দেওয়া হয় তার খুব একটা কাজে আসে না তাদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৫
ইউএম/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।