ঢাকা: মুদ্রাপাচার ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধে বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপের সত্যতা যাচাইয়ে আগামী ১১ অক্টোবর ঢাকায় আসছে আন্তর্জাতিক অর্থপাচার (মানি লন্ডারিং) রোধ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দল। প্রায় দুই সপ্তাহ এ বিষয়ে তদন্ত করবে তারা।
ওই সফরে বিশেষজ্ঞ দলটি অর্থ, পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করবে।
সোমবার (৩ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে।
বিশেষজ্ঞ দলটির সফরকে কেন্দ্র করে কর্ম পরিকল্পনা নির্ধারণে মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিশেষ বৈঠকও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠকটিতে দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ মনে করে, তথ্যে গরমিল ধরা পড়লে বাংলাদেশের রেটিং খারাপ হবে। আর তা হলে আন্তর্জাতিক লেনদেন বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের ভাবমূর্তি। তাই রেটিং যেন ভাল হয় সেজন্য কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে কাল অর্থমন্ত্রণালয়ে বৈঠক করবেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তারা।
২০০৮ সালের আগে পর্যন্ত মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়নের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় নাম ছিল বাংলাদেশের। তবে বিশ্বের মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নির্ধারণকারী সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স বা এফএটিএফ’র সদস্য হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর সংস্থাটির নজরদারির মধ্যে পড়ে বাংলাদেশ।
সংস্থাটি সদস্য দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে ৪০টি শর্ত মেনে চলার পরামর্শ দেয়। একইসঙ্গে শর্ত ঠিক মত বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তারও মূল্যায়ন করে সংস্থাটি। তারই ধারাবাহিকতায় সরকার নানা পদক্ষেপ নেয় এবং তার তথ্য ওই সংস্থাটিকে সরবরাহ করে। ফলে বাংলাদেশ মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়নে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা থেকে ২০১৪ সালে বের হয়ে আসে।
তবে সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ যথাযথ ছিল কিনা, নাকি মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছিল তা সরেজমিন খতিয়ে দেখতে ঢাকায় আসছেন মানি লন্ডারিং রোধ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা।
এ সফরকে কেন্দ্র করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞ দলটির মূল্যায়ন নেতিবাচক হলে বাংলাদেশের রেটিং খারাপ হবে এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক লেনদেন বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি বাণিজ্য ব্যয়বহুল হবে এবং দেশের ভাবমূর্তি সংকটে পড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৫
এডিএ/এইচএ/