ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সপ্তাহের চিত্র

অস্থিতিশীল কাঁচাবাজার, তদারকি চায় ক্রেতারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০১৫
অস্থিতিশীল কাঁচাবাজার, তদারকি চায় ক্রেতারা ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম/ফাইল ফটো

ঢাকা: খুচরা বাজারে কেজিতে ৫০ টাকার নিচে তেমন কোনো কাঁচাপণ্যই মিলছে না। অথচ গত বৃহস্পতিবারও ৪০ টাকা কেজি দরে একাধিক সবজি কেনা গেছে।

অস্বাভাবিক হারে সবজিপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে রয়েছেন ক্রেতারা।

গত দুইদিন ধরে খুচরা পর্যায়ে এক কেজি কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কেনা সম্ভব হচ্ছে। যা কয়েকদিন আগে আরও বেশী দিয়ে কিনতে হয় ক্রেতাদের। বিক্রেতারা তখন দেশজুড়ে বৃষ্টি হওয়াকে দায়ী করছিলেন।

সবমিলিয়ে কোনোভাবেই যেনো স্থিতিশীল হচ্ছে না কাঁচা বাজার। একেক দিনে একেক পণ্যের দাম বেড়েই যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে নিজেদের ইচ্ছে মতোই দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা।
 
শুক্রবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মহাখালী কাঁচা বাজারের মীর ফয়েজসহ একাধিক কাঁচাপণ্য বিক্রেতা ও ক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, কচুমুখি আর আলু ছাড়া কোনো সবজিই কেজিতে ৫০ টাকার নিচে কেনা যাচ্ছে না।   প্রায় সব পণ্যের দামই কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
 
অভিযোগ করে ক্রেতারা বাংলানিউজকে জানান, বিক্রেতারা অনেক সময়ে নিজেদের ইচ্ছে মতো পণ্যের দাম রাখেন। এক দোকানের সঙ্গে অন্য দোকানের দামের গড়মিলও রয়েছে। বাজার ভেদেও পণ্যের দামের পার্থক্য রয়েছে। এসব রোধে দরকার সঠিক বাজার তদারকি।
 
বেসরকারি চাকরিজীবী রাশেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সব দোকানী ও বাজারে যদি এক দামে প্রতিটি পণ্য কেনা যেতো তাহলে কিন্তু ক্রেতারা বাজার কর্তৃক নির্ধারিত দামেই পণ্য কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন।
 
একাধিক ক্রেতার দাবি, সঠিক ব্যবস্থাপনায় যদি তদারকি করা যায় তাহলে বাজার স্থিতিশীল হবে।
 
আর বিক্রেতার দাবি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সবজি ক্ষেতের বেশ ক্ষতি হয়েছে এবং সরবরাহও কমে গেছে, তাই একটু বেশি দাম।
 
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মমতাজ উদ্দিন জানান, ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে। ‍একটু যাচাই করে কিনলে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কম দামে কাঁচাপণ্যে কেনা সম্ভব।

বাজার নিয়মিত তদারকি করা হয় বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

বাজার ভেদে রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারের বাজার দর তুলে ধরা হলো।

সবজির বাজার:  আলু (সাদা) ২২ থেকে ২৪ টাকা, বেগুন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শসা ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা, ঝিংগা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, কাঁচা পেপে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, কচুমুখি ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, চিচিংগা ৫২ থেকে ৫৮ টাকা, ঢেড়স ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, করল্লা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ও প্রতিটি লাউ ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ছোটো-খাটো বাজারে ক্রেতাকে আরও বেশী দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
 
মশলার বাজার: প্রতিকেজি পেঁয়াজ (দেশি) ৫২ থেকে ৫৮ টাকা, আমদানিকৃত ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, রসুন (দেশি) ৬০ থেকে ৭০ টাকা, আমদানিকৃত ৯০ থেকে ১০৫ টাকা, শুকনামরিচ (দেশি) ১৩০ থেকে ১৫৫ টাকা, আমদানিকৃত (ভারত) ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, আদা (চায়না)১১০ থেকে ১২৫ টাকা, বার্মা ও ইন্দোনেশিয়া ৯০ থেকে ৯৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

চালের বাজার: গত প্রায় তিন ধরে চালের বাজারে স্বস্তি রয়েছে। বলা যেতে পারে দাম বাড়েওনি, কমেও নি।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি সরু চাল (নাজিরশাইল)  ৪৫ থেকে ৫২ টাকা, মিনিকেট ৪০ থেকে ৪৬ টাকা, মাঝারি (পারিজা, হাসকি, বি আর ২৮) ৩৪ থেকে ৩৮ টাকা, মোটা (গুটি, স্বর্ণা) ৩০ থেকে ৩২ টাকা, সুগন্ধি(কালিজিরা, চিনিগুড়া) ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
 
খোলা আটা কেজিপ্রতি ২৬ থেকে ৩০ টাকা, ময়দা ৩২ থেকে ৩৪ টাকা, আটা (পলিপ্যাক) ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা, ময়দা (পলিপ্যাক) ৪০ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
 
ডালের বাজার: কেজিপ্রতি মশুরের ডাল (দেশি) ১২৬ থেকে ১৩০ টাকা, বিদেশি ১০২ থেকে ১১০ টাকা, মুগ (সুরু) ১১৪ থেকে ১১৮ টাকা, মোটা ৮০ থেকে ৯৫ টাকা, ছোলা বিদেশি (আস্ত) ৭৮ থেকে ৮০ টাকা, খেসারি ৪৬ থেকে ৫৪ টাকা, মাস কলাই ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
 
তেলের বাজার: প্রতিলিটার সয়াবিন (খোলা) ৭৫ থেকে ৭৭ টাকা, পাম সাধারণ ও সুপার (খোলা) ৬৭ থেকে ৬৯ টাকা, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতি ৫ লিটার ৪৫০ থেকে ৪৭০ টাকা আর এক লিটারের ৯৪ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
 
মাছের বাজার: গত এক সপ্তাহ জুড়েই মাছের বাজার বেশ গরম আছে। শুক্রবারেও তা টের পাওয়া গেলো। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দাবি কেজিপ্রতি মাছের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত।
 
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি রুই ও কাতল (এক থেকে দুই কেজি) ১৯০ থেকে ২৯০ টাকা, আমদানিকৃত রুই ও কাতল (দেড় থেকে তিন কেজি) ১৮০ থেকে ২৭৫ টাকা, পাংগাস (চাষকৃত) এক থেকে দুই কেজি ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা, সিলভার কার্প (এক থেকে তিন কেজি) ১৪০ থেকে ২১০ টাকা, কৈ (চাষ) ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
 
মাংস ও ডিমের বাজার: মাংসের বাজারে তেমন কেনো পরিবর্তন দেখা যায় নি। তবে সপ্তাহ জুড়েই ডিমের দাম বাড়তি রয়েছে।
 
কেজিপ্রতি গরুর মাংস ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা, খাসি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, মুরগি (দেশি) ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা, সোনালী ২৩০ থেকে ২৫৫ টাকা, ব্রয়লার ১৪৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
 
আর দেশি ‍মুরগির ডিম (চারটি করে) ৪২ থেকে ৪৫ টাকা, ফার্ম (লাল) ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, হাঁস (দেশি) ৩৮ থেকে ৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০১৫
একে/এনএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।