ঢাকা: দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও প্লেন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজ করছে সরকার। কিন্তু কাজ চলমান অস্থায় ব্যয় বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।
বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশে সামরিক প্রয়োজনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কক্সবাজার বিমানবন্দর নির্মিত হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এটি বেসামরিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে কার্গো ও যাত্রী পরিবহনের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর।
এসব গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে অক্টোবর, ২০০৯ থেকে জুন, ২০১২ মেয়াদে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এই মেয়াদে প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩০২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। কিন্তু এখন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৫৫০ কোটিতে।
একই সঙ্গে সময় বাড়ছে ডিসেম্বর ২০১৮ সাল পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষে (বেবিচক)।
প্রকল্পের পরিচালক আমিনুল হাসিব বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের আওতায় কিছু সেতু ও আবাসন কাজ করা হবে। এছাড়া বিমানবন্দরের আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যে কারণে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫০ কোটিতে। একই সঙ্গে সময় বাড়ছে ডিসেম্বর ২০১৮ সাল পর্যন্ত। সরকার এ বিষয়ে আমাদের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, আশা করা হচ্ছে বাড়তি সময়ের মধ্যেই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের করবো। সেই মোতাবেক আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বেবিচক সূত্র জানায়, ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ও ব্যয় বাড়ার কারণে প্রকল্পের ব্যয়ও বাড়ছে। ১১শ মিটার দীর্ঘ ভায়াডাকসহ ব্রিজ ও ৩ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার স্লোপ প্রোটেকশনসহ এমব্যাংকমেন্ট নির্মাণের জন্য দু’টি অঙ্গ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করায় সময় ও ব্যয় বাড়ছে প্রকল্পের।
প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়ার যুক্তি তুলে ধরে বেবিচকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড ট্রিটমেন্ট-রক্ষণাবেক্ষণ, বিল্ডিং ওয়ার্ক, স্থানীয় ও বৈদেশিক পরামর্শকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। যে কারণে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বেড়েছে। কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রকল্প এলাকায় বসবাস করা ৪ হাজার ৪০৯টি ভূমিহীন পরিবারকে খুরুস্কুল মৌজায় পুনর্বাসন করা হবে।
সেই লক্ষ্যে ২১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় কাজ করবে। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজের জন্য একটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের মূল্য ৫১৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত ৪ হাজার ৪০৯টি ভূমিহীন পরিবারকে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় পুনর্বাসন করা হবে। এ লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলায় বাঁকখালী নদী ও মহেশপুরের খুরুস্কুল মৌজায় ২৪৩ দশমিক ২৫ একর জমি পাওয়া গেছে। এই স্থানে ২৪৫টি চারতলা ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৫
এমআইএস/এএ