ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আজিয়াটা গ্রুপের ব্যবসায়িক সাফল্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৫
আজিয়াটা গ্রুপের ব্যবসায়িক সাফল্য

ঢাকা: এশিয়ার মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি আজিয়াটা গ্রুপ বারহাদ (আজিয়াটা) চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত ব্যবসায়িক ফলাফল প্রকাশ করেছে।

তীব্র প্রতিযোগিতা এবং সম্প্রসারিত বাজার ব্যবস্থার মধ্যেও কোম্পানির ব্যবসায়িক সাফল্য অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।



এ বছরের প্রথম ছয় মাসে গ্রুপের রাজস্ব ২ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, যা গত বছর একই সময় ছিল ৯ দশমিক ২ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত।

এছাড়া গ্রুপের ইবিআইটিডিএ পূর্ব আয় দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, যা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এক বছর আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে।

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে গ্রুপের কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) ২ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ১ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত।

ডায়লগ, স্মার্ট এবং আইডিয়া সেবার শক্তিশালী অবদানের কারণে এক বছরে পিএটিএএমআই ৩৪ দশমিক ২ শতাংশ বা ৬১১ মিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বছরের প্রথম ছয় মাসে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির ফলে তা ১ দশমিক ২ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডাটা প্রবৃদ্ধি আগের মতোই শক্তিশালী রয়েছে এবং গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত সকল কোম্পানির সেবা রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। স্মার্টফোনের দ্রুত বিস্তার এবং ক্রমবর্ধমান মোবাইল ডাটা ব্যবহারের কারণে গ্রুপের চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ডাটা রাজস্ব ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে পরিষেবা রাজস্বে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ অবদান রাখছে।

আজিয়াটার কর্মদক্ষতার ফলে এর বোর্ড অব ডিরেক্টরস চলতি আর্থিক বছরের শেষে (৩১ ডিসেম্বর ২০১৫) প্রতি শেয়ারে ৮ সেন করে অর্ন্তবর্তীকালীন লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

প্রায় সব অপারেটিং কোম্পানি; এক্সএল এবং সেলকম’র ব্যবসায়িক সাফল্য প্রবৃদ্ধির অগ্রিম বার্তা প্রকাশ করছে।

বাংলাদেশে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রবির রাজস্ব ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে বাংলাদেশি টাকায় দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ১ বিলিয়নে। এটি প্রধানত ডাটা রাজস্ব এবং ডিভাইস বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে এখানে বছরের প্রথম ছয় মাসে ইবিআইটিডিএ এবং পিএটি কমেছে যথাক্রমে ২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ।   

মালয়েশিয়ায় মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ডাটা রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮ শতাংশ। তবে ভয়েস কল এবং এসএমএস রাজস্ব কমে যাওয়া এবং ১ এপ্রিল থেকে পণ্য ও সেবা কর (জিএসটি) আরোপের ফলে পরিষেবা রাজস্বে কিছুটা নি¤œমুখী প্রভাব দেখা যায়।

ইন্দোনেশিয়াতে এক্সএল গত প্রান্তিকের তুলনায় এ প্রান্তিকে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে। কোম্পানিটি এ প্রান্তিকে ২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিষেবা রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং ইবিআইটিডিএ বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এক্সএল’র স্মার্টফোন ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৬ শতাংশ। অন্যদিকে বছরের প্রথম ছয় মাসে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে গ্রাহক সংখ্যা হয়েছে ১৬ দশমিক ৩ মিলিয়ন।

শ্রীলঙ্কায় ডায়লগ আরেকটি চমৎকার প্রান্তিক পার করেছে, যদিও ৭ আগস্ট থেকে মোবাইল প্রি-পেইড কলের উপর ২৫ শতাংশ বোনাস দেওয়ার কারণে কোম্পানি প্রভাবিত হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ডায়লগের বার্ষিক রাজস্ব, ইবিআইটিডিএ এবং পিএটি প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ।

সেই সাথে ইবিআইটিডিএ ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ডায়লগের মোবাইল গ্রাহক ১০ মিলিয়নের মাইলফলক অতিক্রম করেছে এবং এর টেলিভিশন ব্যবসার ক্ষেত্রে দর্শক এক বছরে ৩৭ শতাংশ বেড়ে ৫ লাখ ৩৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বাজারেও কম্বোডিয়ায় বছরের প্রথম ছয় মাসে র্স্মাট’র রাজস্ব প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩৯ দশমিক ১ শতাংশে। ভয়েস রাজস্ব বেড়েছে ১৫ শতাংশ, যেখানে ডাটা রাজস্ব বেড়েছে ১১৫ শতাংশ। এখন পর্যন্ত স্মার্ট’র ২ দশমিক ৩ মিলিয়ন ইন্টারনেট গ্রাহক রয়েছে, যা দেশের মোট গ্রাহকের ৩২ শতাংশ।

আজিয়াটা গ্রুপের বোর্ড অব চেয়ারম্যান তান শ্রি দাতো হাজী আজমান মোখতার বলেন, আজিয়াটার জন্য এটা ছিল একটি উন্নয়নের বছর, যা থেকে একটি বৈচিত্র্যময় ব্যবসায়িক গ্রুপের স্থিতিস্থাপকতা পরিলক্ষিত হয়। এক্সএল এবং সেলকম’র ট্রান্সফরমেশন প্রচেষ্টা থেকে লোকসান পুষিয়ে ওঠার আগাম লক্ষণ দেখে আনন্দ প্রকাশ করেন তিনি।

আজিয়াটার প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার দাতো শ্রি জামালুদ্দিন ইব্রাহিম বলেন, বাজার এবং ইন্ডাস্ট্রি চ্যালেঞ্জের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও সেলকম এবং এক্সএল’র উন্নতির সম্ভাবনা সত্যিই উৎসাহব্যঞ্জক।

ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে জামালুদ্দিন বলেন, পুরো এশিয়ায় মুদ্রার মানের ভারসাম্যহীনতা; শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও আইনি উদ্বেগের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। অপারেটিং কোম্পানি এবং অংশীদারদের সাথে দীর্ঘ মেয়াদী সেবা সরবরাহ, টেকসই এবং লাভজনক প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমাদের সুনির্দিষ্ট এবং স্থিতিশীল ব্যবসায়িক কৌশল রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৫
এমআইএইচ/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।