ঢাকা: কয়েক মাস ধরে কমতে থাকা চিনির দাম এবার বাড়তে চলেছে। আমদানি করা পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনিতে শুল্ক বাড়ানোর কারণে ক্রেতাদের বাড়তি দামে কিনতে হবে চিনি।
বুধবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব (শুল্ক) মোহাম্মদ রইচ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, মেট্রিক টনের ওপর ভিত্তি করে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। তবে এ হিসাবে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনির ওপর কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ছয় টাকা বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, আগে শুধু কাস্টম ডিউটি ছিল প্রতি মেট্রিক টনে দুই হাজার টাকা। এবার এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রেগুলেটরি ডিউটি পাঁচ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য করপোরেশন (বিএসএফসি) চেয়ারম্যান এ কে এম দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম কমতে থাকায় বাংলাদেশেও আমদানি করা চিনির দাম কমে গেছে। এতে দেশি চিনি বিক্রি কমে যাচ্ছে। কিন্তু উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কম দামে দেশের চিনি বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশের চিনি শিল্প ও আখ চাষিদের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, বিএসএফসি’র উদ্যোগে শিল্প মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে এ বিষয়টি অবহিত করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৬ আগস্ট) এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে বাজারে কোনো চিনি নিয়ে অস্থিতিশীলতা হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, এক লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন দেশি চিনি রয়েছে। ফলে ঘাটতি হওয়ার বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কোনো সুযোগ নিতে পারবে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আর প্রায় এক মাস পর আখ মাড়াই ও লাগানোর কার্যক্রম শুরু হবে। এসময়ে যদি চাষিরা চিনির দাম না পান তাহলে আখ চাষে আগ্রহও হারিয়ে ফেলতে পারেন। এছাড়া শুল্ক বাড়ার ফলে সরকারের রাজস্বও বাড়বে। আর দেশে উৎপাদিত চিনি গুণগত ও মানসম্মত, তাই এর বাজার গতিশীল রাখাটা উচিত।
এদিকে রাজধানীর বাজারগুলোতে ৩৬ থেকে ৪০ টাকা দরে খুচরা চিনি বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি গত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি বছরে এতো কম দামে ক্রেতারা চিনি কিনতে পারছেন।
বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আনোয়ার হাবিব বাংলানিউজকে জানান, পূর্বে অপরিশোধিত চিনি আমদানি করতে শুল্ক দিতে হয়েছে কেজিপ্রতি দুই টাকা। আজ থেকে সাত টাকা করে দিতে হবে।
তবে চিনির দাম বৃদ্ধির খবরে মোটেও খুশি নন ক্রেতারা। চিনি ক্রেতা রাহিতুল ইসলাম বলেন, দেশের চিনি বিক্রির জন্য দাম বাড়াতে হবে এটা যৌক্তিক। যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমছে, সেখানে আমাদের বেশি দামে কিনতে হবে। বিকল্প চিন্তা করা উচিত সরকারের।
পেঁয়াজ, রসুন, আদা প্রভৃতির পর চিনির দাম বৃদ্ধি ক্রেতাদের জন্য হবে বাড়তি চাপ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫/আপডেট: ২২০৮ ঘণ্টা
একে/এএ