ঢাকা: ঢালাওভাবে শর্ত সাপেক্ষে ঋণ হিসাব পুনঃতফসিল না করতে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ব্যাংকার্স সভার স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে’- এ ধরনের শর্ত সাপেক্ষে ঋণ পুনঃতফসিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালার আলোকে খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিল করতে হবে।
গর্ভনর বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে এখন অর্থনীতি সচল রয়েছে। তাই বিশেষ বিবেচনায় ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ বন্ধ করার উপযুক্ত সময় এখনই। যদিও বিগত সময়ে বিশেষ বিবেচনায় ৬-৭শ’ প্রতিষ্ঠানের ঋণ পুনঃতফসিলে অনাপত্তি প্রদান করেছি।
এছাড়া, নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে গ্রাহকের ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদন বিবেচনা করতে সভায় উপস্থিত ব্যাংকারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ড. আতিউর রহমান।
ঝুঁকিমুক্ত আয়-মুনাফা বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়ে গর্ভনর আরও বলেন, আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যথাযথ ঋণ নিয়মাচার মেনে গুণমানের ঋণ প্রদানে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক ও মনোযোগী হতে হবে।
এছাড়া, গ্রাম-গঞ্জের স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের বাইসাইকেল কেনার জন্য কনজ্যুমার ফাইন্যান্সিং এবং অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের সরকার প্রদত্ত সম্মানী ভাতার বিপরীতে বাড়ি তৈরির জন্য হাউজ ফাইন্যান্স’র আওতায় স্বল্প সুদে সহজ শর্তে ঋণ প্রোডাক্ট চালু করার আহ্বান জানান গর্ভনর।
ড. আতিউর রহমান বলেন, এ ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে আপনাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ-মার্জিন অনুপাত শিথিল করার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
গর্ভনর নতুন ঋণ প্রস্তাব মূল্যায়ন, ঋণ মঞ্জুরি, ঋণ বর্ধিতকরণসহ নবায়ন ও ঋণ হিসাব ব্যবস্থাপনায় অনুসরণীয় নিয়মাচার পালনে সতর্ক নজরদারির নির্দেশ দেন। মঞ্জুরিকৃত ঋণ একবারে বা এক চেকেই বিতরণ না করে পার্ট-বাই-পার্ট বিতরণের ব্যবস্থা করার কথাও বলেন।
তিনি বলেন, বিতরণকৃত ঋণের সদ্বব্যহার যাচাই করে ঋণের পরবর্তী কিস্তি বিতরণ করবেন। যেকোনো শাখার গুরুতর অনিয়মের জন্য প্রথমে আপনাকেই জবাবদিহি করতে হবে। লোকসানী শাখাগুলোকে লাভজনক শাখায় পরিণত করতে না পারলে ব্যর্থতা আপনাদের উপরই বর্তাবে।
ড. আতিউর রহমান বলেন, শক্তিশালী ও টেকসই ব্যাংকিং খাত গড়ে তুলতে সুনির্দিষ্ট দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে আপনারা সক্রিয় ও সচেষ্ট থাকবেন। এক্ষেত্রে নিজেদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও দূরদর্শিতা প্রয়োগ করবেন।
গর্ভনর বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিএসআর’র টাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের মতো একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, উন্নত মানসম্পন্ন ও অত্যাধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করা প্রয়োজন; যেখানে আর্থিক খাতের কর্মী এবং তাদের পৌষ্যরা অপেক্ষাকৃত কম বা ন্যূনতম খরচে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনর ও সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৫
এসই/এইচএ