ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি ব্যবসায়ীদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫
বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি ব্যবসায়ীদের ছবি: কাশেম হারুণ/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: দেশের স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য বাধাগ্রস্থ হচ্ছে জানিয়ে বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন, অটোমেশন, আধুনিক ওয়্যারহাউজ, টেস্টিং ফ্যাসিলিটিজ উন্নয়নসহ বন্দরের সঙ্গে অন্যান্য স্থানের সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
 
রোববার (০৬ সেপ্টেম্বর) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত সেমিনারে এ দাবি জানান তারা।


 
‘ডেভেলপমেন্ট অব ল্যান্ড পোর্টস অ্যান্ড ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনস ফর ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন’ শীর্ষ সেমিনারটির আয়োজন করে এফবিসিসিআই’র নন-ট্যারিফ মেজার্স (এনটিএম) ডেক্স।
 
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
 
বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক নীতি) মো. ফরিদ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তী। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অডিট) মো. আবুল কালাম।
 
ব্যবসায়ীরা বলেন, স্থলবন্দর সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খোলা থাকার কথা। কিন্তু বন্দর খোলা হয় সকাল দশটায় এবং বিকাল চারটায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে ব্যবসায়ীদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
 
এমনও বন্দর আছে যেখানে ব্যাংকের কোনো শাখা নেই (সিলেটের তামাবিল)। ফলে ব্যবসায়ীদের অন্যস্থানের ব্যাংকে যেতে হয়। এতে এলসি খোলার সময়ই ব্যবসায়ীদের শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু কোনো কারণে এলসি বাতিল হলে পণ্যের শুল্ক হিসেবে পরিশোধ করা অর্থ আর ফেরত পাওয়া যায় না।
 
তারা বলেন, কিছু বন্দরে রয়েছে সার্ভারের সমস্য। এতে পণ্য খালাসে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। ক্ষেত্রে বিশেষে দেখা গেছে বন্দরে সকাল দশটায় পণ্যে এসেছে, আর সে পণ্য খালাসের অনুমতি পাওয়া গেছে রাত ১২টায়। সার্ভারের সমস্যার কারণে ইনপুট দিতে না পারায় ব্যবসায়ীদের এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে বলেও দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
 
ব্যবসায়ীদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী বলেন, আমি কথা দিচ্ছি আপনারা (ব্যবসায়ীরা) যে সুপারিশগুলো দেবেন তা আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক করে আমরা বাস্তবায়ন করবো।
 
মন্ত্রী বলেন, আমি আখাউড়া বন্দরে গিয়েছি। সেখানে ব্যাংকের কোনো শাখা নেই। আর এনবিআর’র যে অফিসটি আছে সেটি খুবই জরাজীর্ণ। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। এ বিষয়ে আমি এনবিআরকে চিঠি লিখেছি। কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি।
 
শাজাহান খান বলেন, বেনাপোল বন্দরে বাইপাস সড়ক তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। বাইপাস সড়কটি অনেক সমস্যার সমাধান করবে। আর শিগগির সিলেটের শেওলাকে বন্দর ঘোষণা করা হবে এবং ২০২৩ সালের মধ্যে পায়রা বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রুপান্তরিত করা হবে।
 
পঙ্কজ শরণ বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে স্থলবন্দরের সফলতা প্রয়োজন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশ-ভারত বন্দরগুলোতে যে সমস্যা রয়েছে তা অভ্যন্তরীণভাবে সমাধান করতে হবে।
 
বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরকে এশিয়ার সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি শুধু বাংলাদেশ অথবা ভারতে বৃহৎ স্থলবন্দর না। এশিয়ার সবচেয়ে বড় বন্দর। বন্দরটি দিয়ে গত বছর ১.২ মিলিয়ন মানুষ যাতায়াত করেছে। এ  বন্দরের বাইপাস সড়ক চালু হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজ হবে।
 
সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমদ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার প্রায় ৮০ শতাংশ বাণিজ্য হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। এ বন্দরে অত্যাধিক চাপ থাকায় আমদানি-রফতানিকারকরা অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক সেবা পান না এবং হয়রানির শিকার হন। অথচ বুড়িমারী, ভোমরা, সোনা মসজিদসহ অন্যান্য স্থলবন্দর সঠিকভাবে ব্যবহার করলে বেনাপোলের ওপর চাপ কমবে এবং সুষ্ঠু সেবা পাওয়া যাবে।
 
তিনি বলেন, বেনাপোল, সোনা মসজিদ, বুড়িমারী, তামাবিল, শেওলাসহ বিভিন্ন বন্দরের স্থানীয় আমদানি-রফতানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট, শুল্ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতাই বেশি পাওয়া গেছে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৫
এএসএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।