ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

২০৪০ সালে ধনী হবে বাংলাদেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
২০৪০ সালে ধনী হবে বাংলাদেশ পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল

ঢাকা: পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ ২০৪০ সালে ধনী দেশের তালিকায় যাবে। তখন আমরা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রোলিয়ার মতো উন্নত দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে যাবো।


 
‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি): বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রতিবেদন-২০১৫’ প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
 
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ উপলক্ষে রাজধানীর হোটেল প্যানপ্যাসেফিক সোনারগাঁওতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন।
 
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ২০২৮ সালের মধ্যে দেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে। শতভাগ মানুষ শিক্ষিত এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকবে, আমরা এ স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি।
 
তিনি বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে প্রতিবছর দারিদ্র্য কমছে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ হারে। ২০১৫ সালে মাথাগুনতি দারিদ্র্যের হার হয়েছে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এটি ৮ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে নেমে এসেছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে দেশের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হবে। এমডিজির যে লক্ষ্যগুলোতে আমরা পিছিয়ে আছি, সেগুলোর প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে।
 
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এমডিজি’র এ অর্জনের জন্য আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। আর এসব কিছু অর্জনের জন্য গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাট উন্নয়ন ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, গ্রামের মানুষ নিরাপদ পানি ও ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমান বলেন, স্বদেশি প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিদেশি প্রক্রিয়া যুক্ত করে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছি। সরকারের উন্নয়ন কৌশল ও নাগরিকদের অংশগ্রহণে এমডিজির লক্ষ্য অর্জনে সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের সঙ্গে বেড়েছে মানুষের গড় আয়ুও।

অনুষ্ঠানে ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন: বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রতিবেদন- ২০১৫ সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন জেনারেল ইকোনমিক ডিভিশনের সিনিয়র সচিব শামসুল আলম।
 
সারসংক্ষেপে বিষয়ভিত্তিক অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরা হয়-

এক- বাংলাদেশ চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূলকরণ
বিগত কয়েক বছর ধরে প্রবৃদ্ধি নিয়মিত ৬ শতাংশের ওপরে রয়েছে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দারিদ্র্য কমানোর লক্ষ্যমাত্রা ১ দশমিক ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও অর্জন হয়েছে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
 
দুই- সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ। বালকদের ক্ষেত্রে ৯৬ দশমিক ৬ ও বালিকাদের ক্ষেত্রে ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার হার ৮১ শতাংশ, প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতার হার (পুরুষ ৭৪ শতাংশ) ও নারী ৭৭ শতাংশ।
 
তিন- জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন
২০১৪ সালে ছেলে ও মেয়ের অনুপাত ১ দশমিক ০৩ শতাংশ, যা ১৯৯০ সালে ছিল ০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে এ হার ০ দশমিক ৩৭ থেকে ০ দশমিক ৬৭ হয়েছে। অর্থাৎ ১০০ জন ছাত্রের বিপরীতে ৬৭ জন ছাত্রী।
 
চার- শিশু মৃত্যুহার
১৯৯০ সালে ১ হাজার জন শিশু জীবিত জন্মের পর মারা যেতো ১৪৬ জন। ২০১৩ সালে তা নেমে এসেছে শুধু ৪৬ জনে। ২০১৫ সালে এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ জন। ২ বছর আগেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জন হয়েছে বাংলাদেশে।
 
পাঁচ- মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন
১৯৯০ সালে বছরে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৫৭৪ জন। ২০১৩ সালে এসেছে ১৭০ জনে। ১৯৯১ সালে ৫ শতাংশ নারী স্বাস্থ্যকর্মীর কাছ থেকে সেবা নিলেও ২০১৪ সালে নেয় ৪২ শতাংশ। প্রসবপরবর্তী সেবা বেড়েছে ৫১ শতাংশ।
 
ছয়- এইচআইভি/এইডস-ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ
দেশে এইআইভির প্রাদুর্ভাব এখন ০ দশমিক ১ শতাংশের কম। ১৯৯০ সালে কনডম ব্যবহারের সংখ্যা ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হলেও ২০১৩ সালে বেড়ে হয়েছে ৪৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। একই সময়ে এইডস সর্ম্পকে ধারণাপ্রাপ্ত মানুষের সংখ্যা ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০০৫ সালে প্রতি এক লাখ মানুষে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হতেন ৪৪১ জন। ২০১৪ সালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩৪ জনে।
 
এছাড়াও ১৩টি উচ্চ ম্যালেরিয়া ঝুঁকিসম্পন্ন জেলায় পতঙ্গনাশক রাসায়নিকযুক্ত মশারি ব্যবহার করে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ২০০৮ সালে ৮১ শতাংশ হলেও ২০১৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৯২ দশমিক ২ শতাংশে।
 
সাত- পরিবেশগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ
১৯৯০ সালে দেশের বনাচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ ৯ দশমিক ০ শতাংশ ছিল। ২০১৪ সালে হয়েছে ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। একই সময়ে ওজোন স্তর ক্ষয়কারী পদার্থের পরিমাণ ২০২ টন থেকে কমে ৬৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ হয়েছে। সংরক্ষিত ভূমি ও জলাশয়ের পরিমাণ ০ দশমিক ৯১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ হয়েছে। বস্তিতে বসবাসকারীর সংখ্যা ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ থেকে কমে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এসই/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।