ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিশ্ববাজারে চাপে আছে বাংলাদেশি পোশাক শিল্প

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
বিশ্ববাজারে চাপে আছে বাংলাদেশি পোশাক শিল্প সিদ্দিকুর রহমান

ঢাকা: বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প চাপে আছে বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। একইসঙ্গে সম্প্রতি একটি চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর এ চাপ আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তিনি।



শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে বিজিএমইএ’র উদ্যোগে সংগঠনটির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিদ্দিকুর রহমান এ শঙ্কা প্রকাশ করেন। পোশাক ও শিল্পখাতে সার্বিক পরিস্থিতি ও করণীয় নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, গত এক বছরে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর মুদ্রা ইউরোর মান ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে গেছে। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কারণ, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে আমাদের সামগ্রিক রফতানি প্রায় ৬০ শতাংশ।

এক প্রশ্নের জবাবে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২টি দেশের মধ্যে ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রফতানিতে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে বাংলাদেশ। কারণ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম বিনাশুল্কে সেখানে পোশাক রফতানি করতে পারবে, জিএসপি স্থগিত থাকার কারণে যেটা বাংলাদেশ পারছে না।

সম্প্রতি দুইজন বিদেশি হত্যার জেরে বাংলাদেশের পোশাক খাতে কোনো প্রভাব পড়তে পারে কিনা এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশেও ঘটে। এটা পোশাক খাতে প্রভাব ফেলার কোনো কারণ নেই। বর্তমানে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো আছে। সরকার সার্বিক নিরাপত্তায় বিশেষ নজর দিচ্ছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বিশ্ববাজারে টিকে থাকার জন্য আমরা বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে আসছি। ক্রেতারা পোশাকের মূল্য না বাড়ালেও তাদের জোট ‘অ্যাকর্ড’ ও ‘অ্যালায়েন্স’ এবং আমাদের ‘ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান’র সুপারিশ অনুযায়ী কারখানার সংস্কার করছি। দুর্বল অবকাঠামো, গ্যাস-বিদ্যুৎ ও দক্ষ শ্রমিক সংকটের মোকাবেলা করে রফতানি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
 
পোশাক শিল্পখাতের  সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমানোর দাবি জানিয়ে  সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোকে ১০ বছর মেয়াদে পুনঃতফসিলিকরণের সুযোগ দিতে হবে।
 
পোশাক শিল্পে গ্যাস সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মোট গ্যাস সরবরাহের মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ ব্যবহার করে থাকে পোশাক খাত। অথচ এমন পোশাক কারখানা আছে, যেগুলো গ্যাসের অভাবে চালু করা  যাচ্ছে না। সরকারের কাছে অনুরোধ করবো, ক্যাপটিভ পাওয়ার জেনারেশনে ব্যবহৃত গ্যাসের ট্যারিফ একেবারে ১০০ শতাংশ না বাড়িয়ে ধাপে ধাপে বাড়ানো হোক। বন্ধ কারখানায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হোক।
 
বাংলাদেশেও পোশাক শিল্পের জন্য সরকারের তরফ থেকে একটি পৃথক সচিবালয় গঠনের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত  ছিলেন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ ও আবদুস সালাম মুর্শেদী, বর্তমান সহ-সভাপতি মইনুদ্দিন আহমেদ, ফারুক হাসান, এসএম মান্নান, মাহমুদ হাসান খান, মোহাম্মদ নাসির, বোর্ড পরিচালক শাহিদুল হক মুকুল, ইনামুল হক খান, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, কামাল উদ্দিন, এমএ রহিম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫/আপডেট ১৭০০ ঘণ্টা
এমআইএস/জেডএফ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।