ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পর্দা নামলো তিন মেলার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
পর্দা নামলো তিন মেলার ছবি: জি এম মুজিবুর / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: পর্দা নামলো প্রক্রিয়াজাত ‍খাদ্যপণ্য, কৃষি প্রযুক্তি ও চাল জাতীয় পণ্যে উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের যন্ত্রাংশের প্রদর্শনী নিয়ে তিন মেলার।
 
বুধবার (১৪ অক্টেবার) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) প্রক্রিয়াজাত ‍খাদ্যপণ্য ‍নিয়ে ‘ফুড প্রো’, কৃষি প্রযুক্তি ও যন্ত্রের প্রদর্শনী নিয়ে ‘এগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো’ এবং চাল উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজতকরণের মেশিনারিজের প্রদর্শনী নিয়ে ‘রাইস অ্যান্ড গ্রেইনটেক এক্সপো’ মেলার পর্দা উঠে।


 
শনিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় এই তিন মেলার পর্দা নামে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনীর পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহ ও পণ্য কেনার সুযোগ পেয়েছেন দর্শনার্থী-ক্রেতারা। মেলা তিনটি সবার জন্যই উন্মুক্ত ছিল।
 
বৃহৎ পরিসরে এই তিন মেলায় আয়োজনে দর্শনার্থী ও অংশগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
 
‘ফুড প্রো ২০১৫’: তৃতীয় বারের মতো রাজধানীতে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য নিয়ে এ মেলা অনুষ্ঠিত হলো। বিআইসিসি’র মূল দরজা পার হয়ে ডান দিকে ছিলো এ মেলার স্টলগুলো। দেশ বিদেশের বড় বড় খাদ্য প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি স্টলে পণ্য কেনার পাশাপাশি দেখা ও জানার সুযোগ পেয়েছেন দর্শনার্থীরা।
 
পরিবারের সদস্যদের নিয়েও এ মেলায় ভিড় জমাতে দেখা গেছে। মুখরোচক খাবারের দিকেই আগ্রহ বেশি ছিল। নতুন নতুন পণ্যের সঙ্গেও পরিচিত হতে পেরেছেন মেলায় আগতরা। তবে মূল্যে ছাড়ে পছন্দের খাদ্যপণ্যে কিনতে পেরে অনেকেই খুশি মনে বাড়ি ফিরেছেন।
 
মহাখালী থেকে আসা রিজিয়া সুলতানা জানান, দোকানে যে দামে পণ্য কিনতে হতো তার চেয়ে অনেক কম দামে পণ্য কেনার সুযোগ পাওয়ায় মেলায় আসাটা সার্থক হয়েছে। এছাড়া অনেক পণ্য সম্পর্কে ধারণাও পাওয়া গেলো। এ ধরনের আয়োজনকে সাধুবাদও জানালেন এই দর্শনার্থী।

এদিকে মেলায় অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন স্টলের পক্ষ থেকেও সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন স্টলের কর্মীরা। এতে দেশি স্টলের প্রাধান্য দেখা গেছে।
 
‘এগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো ২০১৫’: প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে কৃষি উপকরণের চিত্র। তার প্রমাণ মিললো এই মেলায়। ধান, গম মাড়াইয়ের যন্ত্র, ফসল চাষে উন্নত প্রযুক্তির ট্রাক্টর, পাওয়া টিলারের প্রদর্শনী ছিল চোখে পরার মতো। সার ও বীজের বিভিন্ন তথ্য, ব্যাংকিং সেবার কার্যক্রম, মাটির গুণাগুণ রক্ষায় তথ্যসহ নানা আয়োজন ছিল এ মেলায়।
 
এতে সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ ছিল। তবে সবচেয়ে আর্কষণীয় ছিল পণ্য কিনলে বিভিন্ন উপহার ও ছাড়ের অফারগুলো। নগদ ৫০ হাজার টাকা ছাড়, টেলিভিশন উপহার, কক্সবাজার ভ্রমণের অফার অনেকেই গ্রহণ করেছেন।
 
এ মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দর্শনার্থী ও স্টলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেলো সন্তুষ্টির চিত্র। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এ মেলায় দর্শনার্থীরা এসেছিলেন। স্টলের কর্মীদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য পাওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন বগুড়া থেকে আসা দর্শনার্থী আবুল হোসেন। তিনি জানান, অনেক কিছু জানা গেলো মেলার মাধ্যমে।

রাইস অ্যান্ড গ্রেইনটেক এক্সপো: এ মেলায় প্রবেশ করলে চোখে পড়েছে বিশাল আকৃতির চালের শাটার, মেশিনসহ নানা যন্ত্রাংশের। মেলাজুড়ে ছিল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নতুন উদ্যেক্তা ও ব্যবসায়ীদের ভিড়। তবে অধিকাংশই ছিল বিদেশী প্রতিষ্ঠান।
 
চাল, ডাল, আটা উৎপাদনে এসব মেশিনারিজ মিল কারখানায় একেবারে সেট করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় এসব স্টলের পক্ষ থেকে। সিরাজগঞ্জ থেকে আসা নতুন রাকিবুল ইসলাম জানান, তিনি একটি চাল উৎপাদনের মেশিনের খোঁজ নিতে এসেছেন। অনেকগুলো মেশিন দেখার পাশাপাশি তথ্য পেয়েছেন। এতে তিনি অনেক খুশি।
 
চাল, ডাল, আটা উৎপাদনে যন্ত্রাংশের যে কী পরিমাণ পরিবর্তন হয়েছে তার চিত্র এ মেলায় না এলে বোঝার উপায় নেই। মেলা ঘুরে দেখা গেলো, খুব মনোযোগ সহকারে দর্শনার্থীরা এসব মেশিন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছেন। এছাড়া নতুন ভাবে এ সংশ্লিষ্ট ব্যবসা শুরু করার জন্য অনেক কিছুর সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছেন দর্শনার্থীরা।
 
এ মেলাতেও নতুন নতুন প্রযুক্তির বিভিন্ন যন্ত্রাংশের প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া ক্রেতাদের জন্য মূল্যছাড় ও উপহারও ছিল। তবে অনেকেই দাবি করেন, বিদেশী আরও বড় বড় প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ থাকলে ভালো হতো। ভারত ও চীনের প্রতিষ্ঠান বেশি দেখা গেছে।
 
এই তিন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা জানান, একই ছাদের নীচে অনেক কিছুর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি তথ্য পাওয়া যায় মেলার মাধ্যমে। তাই এ ধরনের মেলা বেশি বেশি হওয়া দরকার। স্টলের কর্মীদের ও আয়োজকদের ধন্যবাদও জানান তারা।
 
বিদেশিদের উপস্থিতি: শেষ হয়ে যাওয়া এই তিন মেলার অন্যতম আর্কষণ ছিল বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিদেশি ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীদের সমাগম। আয়োজকরা জানান, ভারত, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, চীন, সিঙ্গাপুর, জাপান, হল্যান্ড, তুরস্ক, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ নেয়।
 
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, স্টলে উপস্থিত থাকা বিদেশিরা বাংলাদেশি বিভিন্ন দর্শনার্থীদের পণ্য সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরছেন। কেউ কেউ মনিটরের মাধ্যমে আবার কেউ খাতা কলমে পণ্য সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরছেন। তবে রাইস অ্যান্ড গ্রেইনটেক এক্সপো মেলাতেই বিদেশিদের সংখ্যা বেশি ছিল।

বুধবার (১৪ অক্টোবর) সাড়ে ৪টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলা উদ্বোধন করেন শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
 
আয়োজকেরা জানায়, ২৩০টি স্টলে ১০৫টি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করেছে। কয়েক হাজার দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে।
 
যৌথভাবে এ তিন মেলার আয়োজনে ছিল বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা), ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ ইন্সপায়ারড প্রকল্প এবং এক্সট্রিম এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট সল্যুশন (ইথ্রি সল্যুশন)।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
একে/এসএইচ

** দুর্ঘটনা রোধে নিটল-নিলয়ের উন্নত প্রযুক্তির ট্রাক্টর
** মূল্য ছাড়, উপহারে জমে ওঠেছে তিন মেলার শেষ দিন
** বম্বে সুইটসের গিফট প্যাকেজ
** স্কয়ারের খাদ্যপণ্যের প্যাকেজে বিশেষ ছাড়
** ব্যবসায়ী-দর্শনার্থীর সমাগমে প্রাণবন্ত তিন মেলা
**  আখের বিকল্প সুগারবিটে চিনি উৎপাদন
** নজর কেড়েছে স্বাদে মানে অনন্য ‘ডেন কেক’
** কৃষি ও খাদ্যপণ্য নিয়ে তিন মেলা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।