ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বছরে ৫শ’ কোটি টাকা পাওনা থেকে বঞ্চিত ব্যাংক কর্মীরা

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৫
বছরে ৫শ’ কোটি টাকা পাওনা থেকে বঞ্চিত ব্যাংক কর্মীরা

ঢাকা: শ্রম আইন ও ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী বছর শেষে নিট লাভের ৫ শতাংশ কর্মীদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা অনুসরণ করছে না দেশের কোনো ব্যাংকই।

এর ফলে বছরে ৫৬টি ব্যাংকের কাছ থেকে ন্যায্য পাওনা প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বঞ্চিত হচ্ছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।



বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

অবশ্য দেশের ব্যাংকগুলো তাদের পরিচালনা মুনাফা গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে নারাজ। শেয়ার বাজার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে  ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালনা মুনাফা ছিলো ৬৮০ কোটি টাকা। কর বাদ দিয়ে যার নিট লাভ দাঁড়ায় ২৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ১৯ কোটি টাকা লভ্যাংশ কর্মীদের দেওয়ার কথা থাকলেও আইন অনুযায়ী ব্র্যাক ব্যাংক সে মুনাফা বণ্টন করেনি।

অপর একটি ব্যাংকের ২০১৪ সালের নিট মুনাফা ছিলো ৪০৯ কোটি টাকা। এ মুনাফার ৫ শতাংশ কর্মীদের প্রাপ্য ধরলে ব্যাংক থেকে তাদের পাওনা দাঁড়ায় ২০ কোটি টাকা। কিন্ত এ অর্থ বণ্টন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্মীদের মাঝে বণ্টন করেনি বলেই জানিয়েছে সূত্র।

একই চিত্র বাংলাদেশের বাকি ৫৪টি ব্যাংকের প্রায় সবগুলোর।

শ্রম আইন অনুযায়ী, বছর শেষে নিট লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ কর্মীদের মাঝে তিন ধাপে বিতরণ করতে হবে। ৫ শতাংশ মুনাফার ৮০ শতাংশ দিতে হবে ব্যাংক কর্মীদের অংশগ্রহণ তহবিলে, ১০ শতাংশ দিতে হবে কল্যাণ তহবিলে ও ১০ শতাংশ দিতে হবে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, ব্যাংকের মালিক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছাড়া সব কর্মকর্তা এ লভ্যাংশের অংশ প্রাপ্য হবেন।

কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাংকই সরকারের বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে লভ্যাংশের অর্থ জমা দেয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক মালিক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা যেহেতু ব্যাংকের লভ্যাংশের অর্থ পাবেন না তাই তারা লভ্যাংশের ৫ শতাংশ কর্মীদের মাঝে বণ্টনে অনাগ্রহ প্রকাশ করছেন। শুধু তাই নয়, লভ্যাংশের ভাগ যেন কর্মীদের পরিশোধ করতে না হয় সেজন্য ব্যাংক মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্সের (এবিবি) নেতারা শ্রম মন্ত্রণালয়ে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছেন। এরই মধ্যে শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছে সংগঠনটির নেতারা।

তবে এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ এবিবি’র সদস্যরা। এবিবি’র চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমি খুব ব্যস্ত। এ বিষয়ে কথা বলতে পারছি না।

এসব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যদি আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর এ লভ্যাংশ দেওয়ার কথা থাকে তাহলে অবশ্যই তাদের তা দেওয়া উচিত। আর যদি তারা না দিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তা অন্যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক এ ধরনের কোনো অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৫
ইউএম/আরআই/জেডএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।