ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চারুলতা রেস্তোরাঁ

মূসক ২ লাখ টাকা, দেয় সাড়ে ৪ হাজার টাকা

রহমত উল্যাহ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
মূসক ২ লাখ টাকা, দেয় সাড়ে ৪ হাজার টাকা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: প্রতি মাসে মোট বিক্রির ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) প্রযোজ্য প্রায় দুই লাখ টাকা। কিন্তু  মাত্র ৪ হাজার ৮০০ টাকা ‘ফিক্সড ভ্যাট’ দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে রাজধানীর  কারওয়ান বাজারের অভিজাত চারুলতা রেস্তোরা।



এমনকি মূসক চালানের বদলে নিজস্ব চালান ফরম ব্যবহার করে রেস্তোরাঁটি।
 
সম্প্রতি মূসক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের অভিযানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। মূসক গোয়েন্দার নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ভোক্তারা। একই সঙ্গে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় খাবারে বেশি দাম, মূসক আদায় হলেও চালান না দেওয়াসহ চারুলতা রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়।
 
অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি ভোক্তা সেজে একটি গোয়েন্দা দল কারওয়ান বাজারে রেস্তোরাঁ পর্যবেক্ষণ করেন গোয়েন্দারা।

পরে অভিযান চালানো হয়। তবে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে সরিয়ে ফেলা হয় রেস্তোরাঁর সব রেকর্ড। কিছু কাঁচা রশিদ (নিজস্ব) ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি।
 
পরে রেকর্ডপত্রের খোঁজে তল্লাশি চালায় গোয়েন্দারা। পেয়েও যান ফাইলপত্র।
 
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, পরে তালা ভেঙে রেকর্ড ফাইল ও বাণিজ্যিক দলিল জব্দ করা ওই রেস্তোরাঁর। রেকর্ডপত্র যাচাই করে দেখা যায় মূসক আইনের সব নিয়মই ভঙ্গ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
 
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটি মূসক ফাঁকি দিতে ইসিআর ব্যবহার করে না। ভোক্তাকে মূসক চালানও (মূসক ১১ক) দেয় না।

নিজস্ব চালান ব্যবহার করলেও তাতে মূসক নম্বর নেই। মোট বিক্রয় রেকর্ড করে না। মূসক ফাঁকি দিতে প্রতিদিনের রেকর্ড লুকিয়ে রাখা হয়।
                                                
‘অভিযানে পাওয়া রেকর্ড অনুযায়ী বিক্রির ওপর প্রতিমাসে প্রায় দুই লাখ টাকা ভ্যাট প্রযোজ্য হয়। কিন্তু মাত্র ৪ হাজার ৮০০ টাকা ফিক্সড ভ্যাট দেয়,’ বলেন ওই কর্মকর্তা।
 
তিনি জানান, মূসক আইনে ফিক্সড ভ্যাট বলতে কোনো ভ্যাট নেই। প্রতিষ্ঠানটি নিজ থেকে নয়, ভোক্তা থেকে মূসক আদায় করে দিচ্ছে। তাহলে ফাঁকি দেবে কেন? 
 
‍নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটি ৪ হাজার ৮০০ টাকা ভ্যাট দেয়। অথচ তাদের মাসিক ভাড়ার (৭০ হাজার টাকা) ওপর ৯ শতাংশ হারে প্রতি মাসে ৬ হাজার ৩০০ টাকা ভ্যাট প্রযোজ্য।

বিদ্যুৎ, গ্যাস বিল, ২৫ জন কর্মচারীর বেতন, লাভ সব বাদ দিলেও বিক্রির ওপর ন্যূনতম দুই লাখ টাকা মূসক প্রযোজ্য।
 
শুল্ক গোয়েন্দার অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, বিভিন্ন রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে। তাদের কাছে জবাব চাওয়া হবে।

ফাঁকি দেওয়া ভ্যাট আদায়ে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
আরইউ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।