ঢাকা: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে নতুন রেলওয়ে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে রাজধানী থেকে পদ্মা বহুমুখী সেতু হয়ে যশোর পযর্ন্ত নতুন ব্রড
গেজ রেলওয়ে ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে ১৬৯ কিলোমিটার। লুপ সাইডিংস এবং ডাবল লাইনসহ মোট ট্র্যাক হবে ২১৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার।
পদ্মাসেতুর রেল সংযোগ নির্মাণের জন্য মোট দৈর্ঘ্যকে চারটি সেকশনে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম সেকশন ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া, দ্বিতীয় সেকশন গেন্ডারিয়া
থেকে মাওয়া, তৃতীয় সেকশন মাওয়া-ভাঙ্গা এবং চতুর্থ সেকশন ভাঙ্গা জংশন থেকে যশোর পযর্ন্ত।
সেই লক্ষ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগে মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৯ হাজার ৯৫৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। চীন সরকার জি-টু-জি পদ্ধতিতে অবশিষ্ট অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে।
মঙ্গলবার ( ৩ মে ) শেরেবাংলা নগর এনইইসি সম্মেলন কক্ষে বিশাল ব্যয়ের প্রকল্পটি একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সভায় অংশ নেয়া একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সভায় সভাপতিত্ব করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, পদ্মা নদীর উপর পদ্মা বহুমুখী নির্মাণ করা হচ্ছে। যা আগামী ২০১৮ সাল নাগাদ সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের প্রধান উদ্দেশ্য দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করা। ডাবল ডেক বিশিষ্ট এই সেতুর উপরের ডেকে চারলেন সড়ক পথ এবং নিচের ডেকে ব্রডগেজ সিঙ্গেল রেলওয়ে ট্রাক নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে যশোর, খুলনা, বেনাপোল ও মংলা পযর্ন্ত সরাসরি রেলওয়ে সংযোগ স্থাপন হবে।
বিদ্যমান ঢাকা-যশোর রুটের দৈর্ঘ্য কমানোর মাধ্যমে যাত্রা সময় কমিয়ে পদ্মাসেতু হয়ে ভাঙ্গা থেকে যশোর পযর্ন্ত নতুন রেলওয়ে করিডোর নির্মাণ করা হবে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, নতুন রেলপথটি মতিঝিল, সবুজবাগ, সূত্রাপুর, ডেমরা, কেরানীগঞ্জ, ফতুল্লা, সিরাজদীখান, শ্রীনগর লৌহজং, জাজিরায় মিলবে।
এর পর শিবচর, ফরিদপুরের ভাঙ্গা, নগরকান্দা, সালথা, গোপালগঞ্জের মোকসুদপুর ও কাশিয়ানিতে একটি নতুন রুট নির্মাণ হবে। নড়াইল সদর, লোহাগড়া হয়ে সর্বশেষ যশোর সদর ও বাগপাড়ায় রেলপথটি সমাপ্তি টানবে।
২০১৭ থেকে ২০২২ সাল মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ১৬৯ কিলোমিটার মেইন লাইন,৪৩ দশমিক ২২ কিলোমিটার লুপ ও সাইড, ৩ কিলোমিটার ডাকল ট্র্যাকসহ মোট ২১৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার ব্রডগেজ ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। ২৪ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, দুই কিলোমিটার র্যানম্পস, ৬৬টি ছোট ছোট সেতু, ২৪৪টি কালভার্ট,একটি হাইওয়ে ওভারপাস, ২৯টি লেভেল ক্রসিং ও ৪০টি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে।
১৪টি নতুন ও ৬টি বিদ্যমান সেকশনের উন্নয়ন করাসহ ১ হাজার ৬৬৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী বগি কেনা হবে। ২০টি স্টেশনে
টেলিযোগাযোগসহ সিগন্যালিং ব্যবস্থা স্থাপন এবং সুপারভিশনে কনসাল্টেন্সি সার্ভিসে হবে আধুনিকায়ন।
এ রুটে কন্টেইনার চলাচলের ক্ষেত্রে জাতীয়, আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ফ্রেইট,ব্রডগেজ কন্টেইনার টেনসমূহ প্রয়োজনীয় স্পিড ও লোড ক্যাপাসিটি চালু করা
হবে। যাতে করে বাংলাদেশ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আরেকটি উপ-রুট নির্মিত হয়। ভবিষ্যতে এই রুটে দ্বিতীয় লাইন নির্মাণ এবং বরিশাল ও পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরকে এই রুটে সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সহসাই ঢাকা থেকে রেলে যাতায়াত করতে পারবেন বরিশালবাসীরাও।
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৬
এমআইএস/আরআই