ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

অনিয়মে সাজা হতে পারে সানফ্লাওয়ার লাইফের

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৯ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৬
অনিয়মে সাজা হতে পারে সানফ্লাওয়ার লাইফের

ঢাকা: এজেন্ট কমিশন ও ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে অনিয়মের পাশাপাশি বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) অনুমোদন ছাড়াই শাখা অফিস খোলা, কোম্পানির এক বিভাগের হিসাবের সঙ্গে আরেক বিভাগের হিসাবে গরমিল, গাড়ি ব্যবহারে লগ বই না থাকাসহ নানা অনিয়ম করেছে সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

 

আইডিআরএ’র নিয়োগ করা বিশেষ নিরীক্ষক মেসার্স এম জে, আবেদীন অ্যান্ড কোম্পানি, চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টসের প্রতিবেদনে এসব অনিয়ম ধরা পড়েছে।

এসব অনিয়মের বিচার করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মধ্যে কোম্পানিকে তার কারণ দর্শানের নোটিশ দিয়েছে। আগামী ০৫ জুন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে জবাব দেবে কোম্পানি। এরপরই বিমা আইন ২০১০ এর ১০, ৫০, ৯৫ এবং ১৩৪ ধারার বিধান অনুসারে ব্যবস্থা নেবে আইডিআরএ।

বিমা আইনে বিভিন্ন মেয়াদে জরিমানাসহ কোম্পানিটির ব্যবসার লাইসেন্স স্থগিত এমনকি বাতিল করার এখতিয়ার রয়েছে কর্তৃপক্ষের। এর আগে অনিয়মের কারণে স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করেছে। এ ধরনের কঠোর ব্যবস্থায় বিমা খাতের উন্নতি হবে বলে আশাবাদ আইডিআরএ’র।

আইডিআরএ’র মুখপাত্র ও সদস্য জুবের আহমেদ খান বাংলানিউজকে জানান, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ব্যয়সহ নানা বিষয়ে বিমা আইনের অনিয়ম খুঁজে পাওয়া গেছে। এরই আলোকে প্রতিষ্ঠানের কাছে অনিয়মের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সঠিক জবাব না দিতে পারলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. সামসুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত তিন বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে ভুল-ত্রুটির জন্য যেসব কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে, সেগুলোর জবাব আগামী ০৬ জুনের মধ্যে দিয়ে দেবো’।

অনুমোদন ছাড়াই শাখা অফিস
প্রবিধান মালা, ২০১২ বিধান অনুযায়ী কোনো বিমা কোম্পানিকে নতুন কোনো শাখা অফিস ও কার্যালয় স্থাপন করতে হলে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছ অনুমোদন (লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন) নিতে হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো লাইসেন্স গ্রহণ করেনি সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

হিসাবের তথ্যে গরমিল
বিমা গ্রাহকদের পলিসি অনুযায়ী হিসাব সংরক্ষণের ক্ষেত্রে হিসাব বিভাগ, এমআইএস বিভাগ এবং আইটি বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে হিসাবের গরমিল দেখা গেছে। ফলে বিমা গ্রাহকদের স্বার্থ সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়নি।

এক্ষেত্রে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যবসা সমাপন করার পর বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে কোম্পানির দাখিল করা ব্যবসা সমাপনী রিটার্নের সঙ্গে সিলেকট্রেড ফাইন্যান্সিয়াল ইন্ডিকেটরে প্রদত্ত তথ্যের অসামঞ্জস্য দেখা গেছে, যা বিমা আইনের ৪৯ ধারার পরিপন্থী। এবং কোম্পানির ২০১৪ সালের একচ্যুয়ারিয়াল মূল্যায়ন করা হয়নি, যা বিমা আইনের ধারা ৩০(১) এর লঙ্ঘন।

গাড়ি ব্যবহারের তথ্য নেই
কোম্পানির গাড়ি ব্যবহারে কোনো লগ বই ব্যবহার করা হয়নি। এ কারণে গাড়ি ব্যবহারের সঠিক তথ্য সংরক্ষিত নেই। যার ফলে গাড়ির অপব্যহার হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

এমডি’র অনিয়ম
২০১৪ সালের ৩০ অক্টোবর কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে বেতনের বিপরীতে ১৬ লাখ টাকা ব্যক্তিগত ঋণ দেওয়া হয়েছে, যা বিমা আইনের ধারা ৪৪ (২ ও ৯ ডি) লঙ্ঘন এবং কর্তৃপক্ষের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ অনুমোদনের শর্তের পরিপন্থী।

** আত্মীয়-স্বজন মিলেমিশে লুটপাট সানফ্লাওয়ার লাইফে!
** গ্রাহকের টাকা লুটে খাচ্ছে সানফ্লাওয়ার লাইফ

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৮ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৬
এমএফআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।