ঢাকা: দেশে বৈধ কোটিপতির চেয়ে কোটি টাকা ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ছয় হাজারেরও বেশি। আর বৈধ কোটিপতিদের মোট আমানতের চেয়ে কোটি টাকার উপরে ঋণ গ্রহীতার মোট ঋণের পরিমাণ ৪৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
এছাড়া, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণ প্রবাহের ৬০ শতাংশেরও বেশি ঋণ কোটিপতিদের দখলে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী কোটি টাকা ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৫৮ জন। পক্ষান্তরে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকা আমানতকারীর সংখ্যা ২৩ হাজার ১৩০ জন।
ঋণ গ্রহীতাদের নেওয়া মোট ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৫৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ব্যাংকগুলোতে আমানত করা অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৫৪৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে আমানত করা অর্থের চেয়ে ব্যাংকগুলো থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ৪৪ হাজার ৩১১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
হিসাবে দেখা গেছে, ২০০৯ সালের পঞ্জিকা বছরে ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৩৩ হাজার ৪৭৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর মোট ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ছিল ৮৭ লাখ ৮৩ হাজার ৫২৩ জন। এর মধ্যে কোটি টাকা ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা হচ্ছে ২৯ হাজার ৪৫৮ জন এবং তাদের মোট গৃহীত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৫৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণ প্রবাহের ৬২ শতাংশের বেশি ঋণ নিয়ন্ত্রণ করছেন মাত্র দশমিক ৩৪ শতাংশ আমানতকারী।
এর আগের বছর (২০০৮) কোটি টাকা ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ২০৬ জন এবং তাদের গৃহীত ঋণের পরিমাণ ছিল মোট ঋণ প্রবাহের সাড়ে ৬২ শতাংশ। সে হিসাবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে কোটি টাকার ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে ৪ হাজার ২৫২ জন।
ব্যাংকিং খাতসংশ্লিষ্টদের মতে, সাধারণ আমানতকারীদের অধিকাংশই ব্যাংকে টাকা রাখেন সঞ্চয়ের জন্য। অন্যদিকে, কোটিপতি গ্রাহকদের ক্ষেত্রে সঞ্চয়ের চেয়ে ঋণ গ্রহণের প্রবণতাই বেশি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে দেশে ১ কোটি টাকার বেশি ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ছিল মাত্র ২১২ জন। ১৯৯০ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ১২৫ জনে এবং গৃহীত ঋণের পরিমাণ ছিল মোট ঋণ প্রবাহের ৩৮ শতাংশ। জুন ’৯৬ ও ২০০১ সালের শেষে কোটি টাকা ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪ হাজার ৫২৬ জন এবং ৮ হাজার ৮৪৪ জনে। আর ওই দুই বছরে গৃহীত ঋণের পরিমাণ ছিল মোট ঋণ প্রবাহের যথাক্রমে ৪৪ শতাংশ এবং প্রায় ৫২ শতাংশ। ২০০৭ সালে কোটি টাকা ঋণ গ্রহীতার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২১ হাজার ২১৫ জন এবং গৃহীত ঋণের পরিমাণ ছিল মোট ঋণ প্রবাহের সাড়ে ৬০ শতাংশ।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় : ১০৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১০