ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিশ্ব ব্যাংকের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
বিশ্ব ব্যাংকের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ

ঢাকা: বিশ্বব্যাংকের কাজে নিয়োজিত ১৬টি গাড়ি ও পাসবুক তলব করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এছাড়া এ ব্যাপারে জানতে বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্বব্যাংককে একটি নোটিশ পাঠিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

 

শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের নোটিশে বলা হয়, বিশ্বব্যাংক নিজেদের প্রয়োজনে ১৬টি গাড়ি বাংলাদেশে আনলে ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা শেষে তা শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে জমা দেয়া হয়নি। এছাড়া এই গাড়িগুলো বিশ্বব্যাংকের ১৬জন কর্মকর্তা ব্যবহার করতেন।

তারা এখন বাংলাদেশে আছে কি না তারও কোনো তথ্য শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে জমা দেয়নি বিশ্ব ব্যাংক। তবে নিয়ম ছিলো কাজের মেয়াদ শেষ হলে গাড়িগুলো শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে জমা দেয়া হবে অথবা নিলামে তুলে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হবে। কিন্তু তার কিছুই করা হয়নি।
 
নোটিশের জবাব দিতে ৭ দিনের সময় দেয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়কে। তারপর গাড়িগুলো উদ্ধারে অভিযান চালাবে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। গাড়িগুলো যদি না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে শুল্ক আইন ১৯৬৯ ও মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্বব্যাংকের কাজে নিয়োজিত ১৬টি গাড়ি ও পাসবুক (ব্যক্তি) তলব করা হয়েছে। কেন না তারা শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে দেশে গাড়িগুলো এনেছিলেন। এছাড়া আইন রয়েছে বাংলাদেশে কাজে আসা বিদেশি সংস্থার কর্মীরা শুল্ক মুক্ত সুবিধা নিয়ে গাড়ি আনতে পারবেন। তবে কাজের মেয়াদ শেষ হলে তা বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ দেশের কোষাগারে জমা দিতে হবে। কিন্তু, তারা এসেছেন কবে, কিংবা তারা কবে চলে গেছেন সেটার কোনো তথ্য দেয়নি বিশ্বব্যাংক।    
 
তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র বিশ্ব ব্যাংক নয় বিভিন্ন দাতা সংস্থাগুলোর অনেকেই এমন অপরাধে জড়িত। শুধু তাই নয়, শুল্ক গোয়েন্দাদের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে স্থানীয় বাজারে গাড়িগুলো বিক্রি করে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের ওই ১৬ জন কর্মকর্তা। যদি তাই হয়, তাহলে তারা শুধু শুল্ক ফাঁকিই নয়, মানি লন্ডারিং আইনেও অপরাধী হবেন। আর তাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে গাড়িগুলো রাষ্ট্রের অনূকুলে বাজেয়াপ্ত করা হবে। এবং তাদের সাতবছর অবধি জেল বা জরিমানা হতে পারে। মানি লন্ডারিং প্রমাণিত হলেও জেল বা জরিমানার শাস্তি থাকবে।
 
যারা অপরাধে জড়িত তারা দেশ ত্যাগ করলে তাদের শাস্তি কিভাবে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মঈনুল জানান, এর দায়ভার নিতে হবে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরকে। এমনকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ কার্যালয়কে এই ফাঁকি দেওয়া শুল্কের টাকা পরিশোধ করতে হবে।
 
এছাড়া গাড়ির ক্ষেত্রে সরকারি নিয়মে ৮৪০ শতাংশ পর্যন্ত কর দিতে হয়। সেক্ষেত্রে দামি গাড়ি হওয়ায় তারা বড়ো অংকের টাকা ফাঁকি দিয়েছে বলেও শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর ধারণা করছে।

শুধু মাত্র বিশ্বব্যাংকের এই ১৬ জন কর্মকর্তাই নয় অন্যান্য আরও সংস্থার এ রকম অনিয়মের ব্যাপারেও শুল্ক গোয়েন্দাদের কাছে বড়ো একটা তালিকা রয়েছে বলেও জানানো হয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের নোটিশে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫,২০১৭
এসজে/এসআরএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।