ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

শখের জোড়া ষাঁড় ১২ লাখ!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
শখের জোড়া ষাঁড় ১২ লাখ! বগুড়া শহরের বনানী এলাকায় অবস্থিত সুলতানগঞ্জ পশুর হাট- ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: ষাঁড়টির পুরো শরীর ধবধবে সাদা, শিং দু’টি কেবল কালো। সাদা-লাল-হলুদ রঙের কাপড়ের ফুলে মোড়ানো ছোট শিংগুলো। দড়িতে বাঁধা ঝুনঝুনি গলায় লাগানো, মাথা একটু নড়াচড়া করলেই বেজে উঠছে।

পাশেই আরেকটি ষাঁড়ও সাদা রঙের, তবে চোখ থেকে ঘাড় হয়ে গজের ওপরের অংশ পর্যন্ত হালকা কালোর আবরণ। গলা ও শিংয়ে রঙিন কাপড়ের ফুল মোড়ানো।

বড় আমগাছের সঙ্গে পাশাপাশি বেঁধে রাখা হয়েছে ষাঁড় দু’টি।

বগুড়া শহরের বনানী এলাকার সুলতানগঞ্জ পশুর হাটের সেরা বিবেচিত হওয়ায় সবার প্রধান আকর্ষণ ছিলো ষাঁড় দু’টির দিকেই। কেনা হোক না হোক, একনজর দেখতে ভিড় করছিলেন হাটে উপস্থিত লোকজন।  

জোড়া ষাঁড়ের দামও হাঁকা হয়েছে ১২ লাখ টাকা! দুই লাখ টাকা থেকে শুরু করেন ক্রেতারা। শেষ পর্যন্ত একজন ক্রেতা একটি ষাঁড়ের দাম বলেন তিন লাখ টাকা। কিন্তু মালিক আনোয়ারুল হক ষাঁড় ছাড়তে নারাজ। তার দাবি, এ দামে বিক্রি করলে লাভ তো দূরের কথা, মূল চালান থেকেও লোকসান গুণতে হবে। কোরবানির ঈদ আসতে এখনো চারদিন বাকি। ষাঁড় দু’টিকে দেখে-শুনে বিক্রি করতে চান তিনি।

বগুড়া শহরের বনানী এলাকায় অবস্থিত সুলতানগঞ্জ পশুর হাট- ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া শহরের নিশিন্দারা কারবালা এলাকার আনোয়ারুল হক অবশ্য মৎস্যচাষি। তিনি জানান, নয় মাস আগে শখের বশে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা করে একেকটি ষাঁড় কিনে লালন-পালন শুরু করেন তিনি। গরু দু’টির পেছনে তার এ পর্যন্ত আরও ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। সবমিলে একেকটি ষাঁড়ের পেছনে ব্যয় হয়েছে ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। তাই ষাঁড়প্রতি দাম হাঁকা হয়েছে ৬ লাখ টাকা করে। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম করেছেন।

শেষ পর্যন্ত বাজারদর অনুসারেই বিক্রি করতে হবে। তবে বাজার যাচাই করেই বিক্রি করবেন তিনি। এতে লাভ-লোকসান যাই হোক না কেন, মেনে নেবেন। কারণ ষাঁড় দু’টি শখের বশে পাললেও তিনি একজন ব্যবসায়ী- দাবি আনোয়ারুল হকের।
 
সোমবার (২৮ আগস্ট) সরেজমিনে সুলতানগঞ্জ পশুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, বেলা ১২টার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির পশু আসতে থাকে। দুপুর ৩টার মধ্যে হাটের সিংহভাগ স্থান গরু দিয়ে ভরে যায়। জোহরের নামাজের পর থেকে হাটে আসতে শুরু করেন ক্রেতারা । ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদভারে গমগম করতে থাকে বিশাল হাটটি। বগুড়া শহরের বনানী এলাকায় অবস্থিত সুলতানগঞ্জ পশুর হাট- ছবি: আরিফ জাহানএ হাটে মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি।  বেশিরভাগ ক্রেতার লক্ষ্য ৪০ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে পছন্দের গরু কেনা। তবে অনেকের বাজেট ৮০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত।  

গাবতলী উপজেলার আব্দুস সালাম হাটে বিক্রি করতে এনেছেন একটি ষাঁড় গরু। এটির দাম হাঁকা হয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম করেছেন।

সুখানপুকুর এলাকার খামারি আব্দুল লতিফও একটি ষাঁড় গরু বিক্রি করতে এসেছেন। সেটির দাম তিনি চান এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। সর্বোচ্চ এক লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন একজন ক্রেতা।
 
তোফাজ্জল হোসেন, আব্দুস সাত্তারসহ কয়েকজন ক্রেতা বাংলানিউজকে জানান, মাঝারি আকারের গরুগুলো এই হাট কাঁপাচ্ছে। এসব গরুর দিকেই আকর্ষণ বেশি। এ সুযোগে ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারাও। ফলে অনেক দাম-দর করেও সাধ্যের মধ্যে পছন্দের গরু কিনতে বেগ পেতে হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৭
এমবিএইচ/জিপি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।