ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রফতানি বন্ধের ভুয়া চিঠিতেই বেড়েছে চালের দাম!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
রফতানি বন্ধের ভুয়া চিঠিতেই বেড়েছে চালের দাম! ভারত থেকে চাল আমদানি চলছে। ছবি: বাংলানিউজ

বেনাপোল (যশোর): ভুয়া চিঠির ভিত্তিতে ভারত থেকে চাল রফতানি বন্ধের খবর প্রচারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে  প্রতি কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।

দেশের আমদানিকারকরা বলছেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেই এলসি’র মূল্য বাড়াচ্ছেন ভারতীয় রফতানিকারকরা। এতে এক শ্রেণির  ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধিতে খেসারত দিতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।

এ মিথ্যা খবর প্রচারে অভিযুক্তদের দুষেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টোম্বর) বিকেল ৫টায় বেনাপোল বন্দরে গিয়ে দেখা গেছে, ভারত থেকে চাল আমদানি চলছে। বন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় এ চাল খালাস করছেন। প্রতি মেট্রিকটন ৫৩৫ ডলার মূল্যে গত এক সপ্তাহে চাল আমদানি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার মেট্রিকটন।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে চাল রফতানি বন্ধের স্বাক্ষরবিহীন চিঠিটি বেনাপোলসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে ছড়িয়ে দেন ভারতীয় রফতানিকারকরা। চিঠিতে দাবি করা হয়, ‘আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ভারত থেকে চাল রফতানি বন্ধ থাকবে’। আর অতি উৎসাহী কিছু মানুষ সঠিকভাবে তথ্য যাচাই না করেই  সে খবর প্রচার করেন। অনেক পত্রিকায় এ চিঠির খবরটি শিরোনামও হয়।

এদিকে এ খবর প্রকাশের পর পরই প্রতি মেট্রিকটনে চালের আমদানিমূল্য বেড়ে যায় ৫৫ ডলার। এতে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে মূল্য দাড়ায় ৫০ টাকায়।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহ সভাপতি আমিনুল হক বলেন, ‘এ ধরনের ভুয়া চিঠির খবর প্রচার করে যারা চালের মূল্যবৃদ্ধিতে সহযোগিতা করেছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন’।

এ চক্রান্তের সঙ্গে ভারতীয় আমদানিকারকরাও সরসরি জড়িত বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানিকারক কে বি এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী কামরুজ্জামান বাবলু বাংলানিউজকে  জানান, চাল রফতানি বন্ধের মিথ্যা খবর প্রচারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মেট্রিকটন চালের মূল্য দুই দফায় লাফিয়ে লাফিয়ে ৫৫ ডলার বেড়েছে।   চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকেও  প্রতি মেট্রিকটন ৪৮০ ডলার মূল্যে আমদানি হয়েছিল। আর এখন মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতি কেজি ভারতীয় স্বর্ণা চালের আমদানি খরচ পড়ছে ৪৮ টাকা। আর এ চাল আমদানিকারকরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন ৪৯ টাকা থেকে ৫০ টাকা দরে।

বেনাপোলে কর্মরত বাংলাদেশ স্থলবন্দর অ্যামপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন মজুমদার বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে  বলেন,  এখন পর্যন্ত চাল আমদানি চলমান রয়েছে। সঠিকভাবে তথ্য না নিয়ে স্বাক্ষরবিহীন চিঠির ওপর ভিত্তি করে চাল রফতানি বন্ধের খবর প্রচার সঠিক হয়নি’।

এর ফলেই দেশে চালের বাজার রাতারাতি লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

বেনাপোল কাস্টমস্ কমিশনার শওকাত হোসেন ভুয়া চিঠি প্রচারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, এ পর্যন্ত তাদের কাছে ভারত থেকে চাল রফতানি বন্ধের কোনো চিঠি আসেনি।

এ খবরটি সম্পূর্ণ গুজব বলে অভিযোগ তোলেন তিনিও।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৭
এজেডএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।