ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রতিশ্রুতি দিয়েও চালের দাম কমাচ্ছেন না মিল মালিকরা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
প্রতিশ্রুতি দিয়েও চালের দাম কমাচ্ছেন না মিল মালিকরা! মিল মালিকরা না কমানোয় পাইকারি-খুচরা বাজারে কমছে না চালের দাম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সরকারকে পাইকারি বাজারে চালের দাম কমানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন মিল মালিক ব্যবসায়ীরা। গত মঙ্গলবারের (১৯ সেপ্টেম্বর) ওই বৈঠকের প্রেক্ষিতে কেজিপ্রতি দেশি চালে ২ থেকে ৩ টাকা ও ভারতীয় চালে ৫ টাকা করে দাম কমানোর কথা থাকলেও প্রতিশ্রুতি অনুসারে কমেনি।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পুরান ঢাকার বাবুবাজার পাইকারি চালের আড়তে গিয়ে জানা গেছে, দেশি চালে ১ টাকা ও ভারতীয় চালে ২ টাকা করে কমেছে। মিল মালিকরা না কমানোয় বাড়তি দাম নামছে না বলে অভিযোগ পাইকারি ব্যবসায়ীদের।

তাদের মতে, সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও জবাবদিহিতা ও মনিটরিংয়ের অভাবে ইচ্ছামতো চাল বাজারে ছাড়ছেন মিল মালিকরা।

বাবুবাজারের আলেক চান রাইস এজেন্সির মো. শাহীনের অভিযোগ, ‘আগে ব্যবসায়ীরা শুধু ব্যবসা করতেন। কিন্তু এখন ক্ষমতার লোভে রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে সিন্ডিকেট গড়ছেন তারা। সরকারের কাছে দাম কমানোর আশ্বাস দিয়েও কমাচ্ছেন না। ফলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে বাজারে। কিন্তু সরকারের সঠিক মনিটরিং ও জবাবদিহিতার ব্যবস্থা থাকলে এর সমাধান হতো’।

তিনি আরও বলেন, ‘নওগাঁর রাইস মিল থেকে বাবুবাজারে চাল পৌঁছে দিয়ে যাবে এবং বস্তাপ্রতি দাম দিতে হবে ৩ হাজার টাকা। কেজিপ্রতি দাম আসে ৬০ টাকা। খুচরা বাজারে যেতে যেতে ওই চালের দাম হবে কেজিপ্রতি ৬৬ থেকে ৬৮ টাকা। বাজারে এখন এ দামেই চাল বিক্রি হচ্ছে’।

‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, পরবর্তী মৌসুমের আগ পর্যন্ত এ দাম কমানো আর সম্ভব না’।

তার অভিযোগ, সরকার জানে, কে কিভাবে মজুদ করছেন। সে অনুসারে আরও জোরালো পদক্ষেপ নিলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

দাম কমানো সম্ভব না বলেই মিল মালিকরা দাম কমাতে পারছেন না। তাই পাইকারি ব্যবসায়ীদেরও কিছু করার নেই বলে দাবি করেন রাজিব এন্টারপ্রাইজের মাসুদ।

তিনি বলেন, এ বছর ধানের দাম মণপ্রতি ৯০০ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার। যা অন্যান্য বছর থাকে ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। এখন আবার মিল মালিকরা ধান কিনছেন ১ হাজার ৪০০ টাকা প্রতি মণ হিসেবে। তাই দাম কমানো একেবারেই সম্ভব নয়। কারণ, ক্ষতিতে কেউ অবশ্যই ব্যবসা করবেন না।

তবে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে দাম আরও বেড়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
     
আগামী অগ্রহায়ণ মাসে নতুন ধান আসার পর দামের কিছুটা শিথিলতা আসতে পারে বলে মনে করেন বসুন্ধরা রাইস এজেন্সির বাহার।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকার দাম কমানোর পদক্ষেপ নিয়ে এখন আর কোনো লাভ হবে না। কোরবানির ঈদের আগে দাম কম ছিল। কিন্তু ঈদ শেষ হতে না হতেই এভাবে দাম বাড়ার কারণ সিন্ডিকেট ছাড়া আর কি হতে পারে?’

‘এসিআই, প্রাণ, তীরসহ অন্য বড় বড় কোম্পানিগুলো দুই থেকে তিনমাসের চাল একসঙ্গে মজুদ করে রাখে সবসময়। তারা চাইলে দাম কমার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। কেননা, তারা বর্তমান বাজারদর থেকে কম দামে চাল কিনেছিল’।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
এমএএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।